ষাঁড় গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা

আপনি নতুন খামার করা কথা ভাবছেন? ষাঁড় গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানেন না? গরুর ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স দাম কত? এসকল বিষয়ে না জানলে এই আর্টিকেল মুলত আপনার জন্য। গরু মোটাতাজাকরনে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য জানতে এই পোষ্টটি সম্পর্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ষাঁড় গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা
উপরোক্ত বিষয় ছাড়া আরো যে বিষয় জানতে পারবেন তা হলো কোন জাতের গরু বেশি দুধ দেয়, কি ধরনের খাবার খাওয়ালে গরুর স্বাস্থের উন্নতি ঘটে, কিভাবে কম খরচে গরু মোটাতাজাকরনের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হলো।

ভুমিকা

বর্তমান গবাদিপশু পালন একটি লাভজনক পেশা হয়ে দাড়িয়েছে। গবাদিপশু পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গবাশি পশু সম্পর্কে বিশেষ করে গরুর দানাদার খাদ্য তালিকা সম্পর্কে, কোন জাতের গরু বেশি দুধ ও মাংস উৎপাদন করতে সক্ষম, খুব কম খরচে অল্প সময়ে কিভাবে গরু মোটাতাজাকরন করা সম্ভব ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

ষাঁড় গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা

গরু মোটাতাজাকরনে দানাদার খাদ্য তলিকার নির্নয় করা খুবই গরুত্বপূর্ন। নিন্মে গরুর খাদ্য তালিকা ছকের মাধ্যমে উল্লেখ করা হল:

দানাদার খাদ্য তালিকা-০১

ক্রমিক নং

উপদানের নাম

উপাদানের পরিনাম

০১

গমির ভূষি

৫৩৫ গ্রাম

০২

খেসারি ডাল

২০০ গ্রাম

০৩

তিলের ভুষি/খৈল

১৫০ গ্রাম

০৪

লবন

১০ গ্রাম

০৫

ঝিনুককের গুড়া

২০ গ্রাম

০৬

শুষ্ক খাবার

৮৫০ গ্রাম

০৭

মেটাবলিক শক্তি

১১ গ্রাম

০৮

আমিষ

২০০ গ্রাম

দানাদার খাদ্য তালিকা-০২

ক্রমিক নং

উপদানের নাম

উপাদানের পরিনাম

০১

গমের ভূষি

৩৫০ গ্রাম

০২

ভাঙা চাল

২০০ গ্রাম

০৩

ধানের ভুষি

২৫০ গ্রাম

০৪

লবন

১০ গ্রাম

০৫

ঝিনুককের গুড়া

২০ গ্রাম

০৬

শুষ্ক খাবার

৮৫০ গ্রাম

০৭

মেটাবলিক শক্তি

১১ গ্রাম

০৮

আমিষ

২০০ গ্রাম

০৯

সরিষার খৈল

২০০ গ্রাম

১০

মাছের ভুষি

৫০ গ্রাম

দানাদার খাদ্য তালিকা-০৩

ক্রমিক নং

উপদানের নাম

উপাদানের পরিনাম

০১

গমের ভূষি

৩৫০ গ্রাম

০২

ভাঙা চাল

২০০ গ্রাম

০৩

ধানের ভুষি

২৫০ গ্রাম

০৪

লবন

১০ গ্রাম

০৫

ঝিনুককের গুড়া

২০ গ্রাম

০৬

শুষ্ক খাবার

৮৫০ গ্রাম

০৭

মেটাবলিক শক্তি

১১ গ্রাম

০৮

আমিষ

২০০ গ্রাম

০৯

সরিষার খৈল

২০০ গ্রাম

১০

মাছের ভুষি

৫০ গ্রাম

১১

ভাঙা গম

১৫০ গ্রাম


গরুর দানাদার খাদ্য তালিকা

ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স দাম কত

গরুকে মিনারেল প্রিমিক্স এবং বিভিন্ন ভিটামিন খাদ্যের সহিত মিশিয়ে খাওয়ালে যে সকল উপকার হয় তা হল:
  • ভিটামিন ও মিনারেল প্রেমেক্স খাদ্যের সহিত মিশিয়ে গরুকে খাওয়ানো হলে গরুর শরীরে ভিটামিনের অভাব এবং মিনারেলের অভাব দূর হয়।
  • এটি খাওয়ানোর ফলে গাভীর দুধ বেশি হয়।
  • গরুর বংশবৃদ্ধি অর্থাৎ বাচ্চা দেওয়ার ক্ষমতা বেড়ে যায়।
  • যে সকল গরু খাবারের অভাবে বা কোন কিছু না খাওয়ার হওয়ার ফলে দুর্বল হয় সে সকল গরু কে এই উপাদানটি খাওয়ালে গরুর খাদ্যের চাহিদা আরো বৃদ্ধি পায়।
  • ভিটামিন ও মিনারেল প্রিমেক্স খাওয়ানোর ফলে গরুর পেটের হজম শক্তি অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
  • এই উপাদানটি খাওয়ানোর ফলে গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বৃদ্ধি পায়।
  • গরুর স্বাস্থ্যের উন্নতি করে মাংস বৃদ্ধি করে।
  • বিভিন্ন রোগের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।
  • এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ইত্যাদি এ ধরনের ভিটামিন কিনে খাওয়ালে গরুর স্বাস্থ্যের বেশ উন্নতি ঘটে। সকল ভিটামিন ও মিনারেল প্রমিক্স খাওয়ানোর ফলে গরুর পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং গরুর মাংস দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করে খামারিদের সহজেই অধিক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।
    ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স

কম খরচে গরু মোটাতাজাকরনের উপায়

গরু মোটাতাজাকরণ করতে হলে প্রথমে আপনাকে গরুর খাদ্য এবং কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে। বর্তমান আমাদের দেশে গরু মোটাতাজাকরণ একটি অত্যন্ত লাভজনক পেশা। গরু মোটাতাজাকরণ করে অনেকেই অনেক লাভবান হচ্ছে। আবার অনেকে এই পদ্ধতি সম্পর্কে না জানার কারণে ক্ষতিরও সম্মুখীন হচ্ছে। যেহেতু গরু মোটাতাজাকরণ অত্যন্ত লাভজনক পেশা।
তাই গরু মোটাতাজাকরণ করতে হলে পদ্ধতি সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। আসুন জেনে নেওয়া  যাক কম খরচে গরু মোটাতাজাকরণের উপায় সম্পর্কে:
  • গরুর কৃমির এবং খাদ্যের সুবিধার জন্য গরু মোটাতাজাকরণের শুরুতেই গরুর ওজন নির্ধারণ করতে হবে।
  • গরুর রোগ প্রতিরোধক টিকা যেমন ঘোড়া রোগের টিকা, তরকা রোগের টিকা, বাদলা রোগের টিকা ইত্যাদি রোগে প্রতিশোধের টিকা সময়মত প্রদান করতে হবে।
  • সাধারণত গরু মোটাতাজাকরণের জন্য ১০০ কেজির জন্য দেড় কেজি দানাদার খাদ্য প্রদান করতে হবে।  আস্তে আস্তে পরিমাণ কমিয়ে এক কেজি করে খাওয়াতে হবে দানাদার খাদ্য।
  • গরুর পেটে যাতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা না হয় সেজন্য ভাতে অথবা খুদে ঝাউ কম খাওয়াতে হবে।
  • নিয়ম মেনে গরুকে গোসল করাতে হবে।
  • গরুকে ইউ এম এস খাওয়াতে হবে কেননা এই এটি খাওয়ানোর ফলে দিনে অন্তত আড়াইশো গ্রাম মাংস বাড়তে পারে।

মোটাতাজাকরণ গরু কেনার আগে যেসব দিক লক্ষ রেখে গরু ক্রয় করতে হবে

  • যে গরুটি ক্রয় করবেন সে গরুর বয়স ১০ মাসের উর্ধ্বে এবং ১৫ মাসের মধ্যে হওয়ায় ভালো।
  • খাদ্যের অভাবে যে গরু দেখতে রুগ্ন, শুকনো, গায়ের চামড়া ঢিল, পাছার হার চ্যাপ্টা, এ সকল গরু কিনতে হবে।
  • যে সকল গাভীকে ইউরিয়া মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো হয় সেই গরু না কেনাই ভালো। কেননা ইউরিয়া মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো গরু কম  ‍দুধ দেয় এবং শরীরে কম মাংশ বাড়ে।
  • গরুর শরীরে কোথাও কোন ক্ষত জনিত কারণে ঘা হলে তা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে প্রয়োজনে ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানো এবং মলম ব্যবহার করতে হবে তাছাড়াও আপনি ব্যান্ডেজ করতে পারেন যাতে মশা মাছি ক্ষতস্থানে পড়তে না পারে।
  • ক্ষতস্থান যদি খুব বেশি হয় তাহলে ক্ষতটা না শুকানোর পর্যন্ত মাঝে মধ্যেই ক্ষত পরিষ্কার করে মলম লাগাতে হবে।
  • গরুর গায়ে যেসব পরজীবী প্রাণী যেমন উকুন, সিদুর পোকা, আঠালি এই পোকা দূর করার জন্য ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

মোটাতাজাকরণের জন্য যে সকল খাবার খাওয়াবেন

  • গরু মোটাতাজাকরণের জন্য সবথেকে ভালো খাবার হচ্ছে কাঁচা ঘাস। প্রয়োজনে  আপনি কাঁচা ঘাস চাষ করে প্রতিদিন কেটে নিয়ে এসে খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। এতে প্রাকৃতিক উপায়ে খুব তাড়াতাড়ি গরু স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে।
  • নিয়ম মেনে ইউরিয়া মিশ্রিত খাবার খাওয়ালে খুব তাড়াতাড়ি গরুর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
  • বিভিন্ন রকমের দানাদার খাদ্য পরিমাণ অনুযায়ী খাওয়াতে পারেন।
  • দানাদার খাদ্যের সাথে ইউরিয়া লবণ চিনিগুড় ইত্যাদি উপাদান মিশিয়ে দিনে অন্তত দুইবার খেতে দিতে হবে।
  • গরু মোটাতাজাকরণের জন্য আয়রন যুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়াতে হবে। যেমন কাঁচা ঘাস এবং মিশ্রিত দানাদার খাবার।

তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ

গরু মোটাতাজাকরন খুবই লাভজনক পেশা। তাই আপনি যদি সঠিক ফর্মুলা অনুযায়ী গরু লালন পালন করতে পারেন তাহলে খুব অল্প সময়ে মধ্যে গরু মোটাতাজা করতে সক্ষম হবেন এবং অত্যন্ত লাভবান হতে পারবেন। মাত্র তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:

গরু নির্বাচন: সাধারণত বয়সের উপর নির্ভর করে গরুকে সঠিক পরিমাণে খাওয়ালে তিন মাসের মধ্যে গরু মোটাতাজাকরণ সম্ভব। উন্নত জাতের গরু অর্থাৎ উন্নত দেশের উন্নত গরু পালন করতে পারলে খুব সহজেই গরুর মোটাতাজা করা সম্ভব হয় আবার বকনা গরুর থেকে এড়ে বাছুর খুব সহজেই বেড়ে ওঠে। কেনা বেচার উপযোগী হয়ে ওঠে।
স্থান নির্বাচন: যে স্থানে গরু রাখবেন সেটি অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত স্থান হতে হবে। সাধারণত একটু উঁচু এবং শুকনো জায়গায় গরু রাখার জায়গা করতে হবে। সাধারণত গরু মোটাতাজাকরণ চার পাঁচ মাস লেগে যায় এক্ষেত্রে একটু খোলামেলা এবং আলো বাতাস ঢুকতো জায়গায় রেখে সঠিক পরিমাণে কাঁচামাল সরবারাহ এবং খাওয়ানোর ফলে মাত্র তিন মাসে গরু স্বাস্থ্য বেশ উন্নতি ঘটে।

মনে রাখতে হবে গরুর মূত্র আবর্জনা যেন সঠিক সময় সঠিকভাবে পরিষ্কার করে গরুর বাসস্থান পরিষ্কার থাকে।

খাদ্য: গরু মোটাতাজাকরণের জন্য বেশিরভাগ ব্যয় খাদ্যে হয়ে থাকে। তবে স্থানীয়ভাবে কিছু কিছু খাদ্য খাওয়াতে পারলে খরচ অনেকটাই কম হয় এবং এই খাবারগুলো সুষম খাদ্যের মধ্যে অন্যতম। এগুলো খাদ্য হলো শুকনো খড় যা গ্রামাঞ্চলে অনেক বেশি পরিমাণে হয়ে, কাঁচা ঘাস বর্ষাকালে এবং গ্রাম অঞ্চলের ক্ষেতের আশপাশে অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়।

তাই মোট গরু মোটাতাজাকরণের জন্য কাঁচা ঘাসের কোন বিকল্প নেই। যেসব খাবার বাজার থেকে অনেক বেশি টাকা দিয়ে কিনার মাধ্যমে খাওয়ালে খরচ অনেকটাই বেড়ে যায় এর বিকল্প হিসেবে আপনি প্রচুর পরিমাণ কাছা ঘাস  খাওয়াতে পারেন।

দানাদার খাদ্য: প্রতিদিন অন্তত এক থেকে দুই কেজি দানাদার খাবার খাওয়াতে হবে।

চিকিৎসা করা: গরুর কোন কৃমি আছে কিনা বা অন্যান্য পরজীবী আক্রমণ করছে কিনা বা আরো অন্য কোন অসুখ-বিসুখ হচ্ছে কিনা সেগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং প্রয়োজন অনুসারে চিকিৎসা করতে হবে।

গরু মোটাতাজাকরণ লাভ কেমন

খামারি ব্যবসা করার আগে তার বিনিয়োগ এবং লাভ সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী বিশেষ করে গরু মোটাতাজাকরণ করার জন্য যে সকল পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় এবং এ পেশায় কেমন লাভ হয় সে সম্পর্কে ধারণা নেয়ার পর খামারি ব্যবসা শুরু করা উচিত। এর জন্য আপনাকে সুষ্ঠ অর্থনৈতিক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক ধারণা নিতে হবে। 

অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সঠিক করার মাধ্যমে একটি সঠিক বাজেট প্ল্যান করার মাধ্যমে এবং খাদ্যের বন্টন এ সকল বিষয়ের উপর লক্ষ করেই খামেরের লাভ সম্পর্কে ধারণা লাভ পাওয়া যায়। ধরা যাক পাঁচটি গরু নিয়ে একটি খামার গঠন করা হলো:

স্থায়ী বিনিয়োগ: স্থায়ী বিনিয়োগ বলতে একটি খামারের জায়গা নির্বাচন করে একটি খামার তৈরি করার জন্য কি পরিমান অর্থের প্রয়োজন সেটিকে স্থায়ী বিনিয়োগ বলা হয়। ধরা যাক একটি স্থায়ী বিনিয়োগে জমির উন্নয়ন করার জন্য ২৫ হাজার টাকা, অন্যান্য যন্ত্রপাতি যেমন ইট টিন বা অন্যান্য যন্ত্রপাতি বাবদ ৫০০০ টাকা, জমিন মূল্যবোধ ৪০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য খরচ৫০০০ টাকা। মোট খরচ ৭৫ হাজার টাকা।

উৎপাদন খরচ: পাঁচটি গরুর মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, খাবার খরচ ৩০ হাজার টাকা তিন মাসে, চিকিৎসা বাবদ খরচ পাঁচ হাজার টাকা, অন্যান্য খরচ ৫০০০ টাকা। মোট খরচ ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

সম্ভাব্য আয়: পাঁচটি গরু তিন মাস পরে মূল্য ৪ লক্ষ টাকা, গোবরের বাবদ পাঁচ হাজার টাকা। মোট ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা।

লাভের পরিমান: মোট ব্যয় ৩৬৫০০০ টাকা মোট আয় ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা। তাহলে লাভ দাঁড়ায় তিরিশ হাজার টাকা। আর আপনার স্থায়ী বিনোয়োগ।

কোন জাতের গরু মোটাতাজাকরণ বেশি লাভজনক

ফার্ম ব্যবসা করার আগে কোন জাতের ফার্ম গরু বেশি লাভজনক সে জাতীয় গরু সম্পর্কে জানতে হবে। ব্যবসায় উন্নতি করতে গেলে এবং অল্প সময়ে বেশি লাভবান হওয়ার জন্য তবে বিদেশি গরুই যে বেশি লাভজনক হয় তেমনটা নয় আবহাওয়া এবং জলবায়ুর উপর নির্ভর করে গরু বেড়ে ওঠা এবং সুস্থ থাকা অনেকটা নির্ভর করে। বাংলাদেশের আবহাওয়া এবং জলবায়ুতে কোন জাতের গরু এই আবহাওয়ার সাথে বেশি উপযোগী সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
  • বাংলাদেশের আবহাওয়ার সাথে যে দেশের আবহাওয়া অনেকটাই মিল পাওয়া যায় সে দেশগুলো হচ্ছে  ভারত, পাকিস্তান এবং নেপাল। তাই আবহাওয়া এবং জলবায়ুর সাথে এই দুই দেশের গরু অনেকটাই মানানসই।
  • বিদেশি গরু যেমন শাহীওয়াল, হিন্দী অস্টিন, ফিজিয়াম এবং বিভিন্ন সংকর জাতের গরু বাংলাদেশের খামারে অনেকটাই জায়গা করে নিয়েছে। অনেক বেশি দুধ উৎপাদন এবং লালন পালনের সুবিধার্থে এই গরু চাহিদা অত্যন্ত বেশি।
  • বাংলাদেশের শাহাদাতপুর, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, চট্টগ্রাম, পাবনা প্রভৃতি এলাকায় অনেক বেশি উন্নত মানের শংকর জাতের গবাদি পশু আছে যা অত্যন্ত বেশি পরিমাণে দুধ উৎপাদন করতে পারে। এজন্য এ সমস্ত এলাকায় বেশি পরিমাণে দুধ পাওয়া যায়।
  • শংকর জাতের গরু বর্তমান খামারিদের খুব পছন্দ।  এ জাতের গরুর সাথে আমাদের দেশের আবহাওয়া খুব সহজেই মানানসই এবং বেশি উৎপাদন ক্ষমতার জন্য খুব তাড়াতাড়ি সংকর জাতের গরুর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। দেশী গাভী এবং বিদেশী উন্নত জাতের ষাড় গরু যা ওজনের জন্য সংকর জাতের গরু খুবই ভালো।
  • উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে শাহীওয়াল বকনা উৎপাদন করতে এই সংকর জাতের  গরু বেশ  কার্যকর অথাৎ শংকর জাতের গরুর থেকেই শাহীওয়াল বকনা বাছুরের জাত বৃদ্ধি পায়।

কোন জাতের গাভী সবচেয়ে বেশি দুধ দেয়

দুগ্ধ খামারিদের জন্য জেনে রাখতে হবে কোন জাতের গাভী সবচেয়ে বেশি দুধ দেয়। শাহীওয়াল এবং ফিজিয়ান এই দুই জাতের গাভী বাংলাদেশে অধিক পরিমাণে বিস্তার লাভ করেছে। কারণ এর কৃত্রিম প্রজনন ক্ষমতা সম্প্রসারণ এবং স্থানান্তর প্রযুক্তি বাস্তবায়ন প্রকল্প সরকার হাতে নিয়েছে এতে ব্যয় হয়েছে ১৮২ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা।

শাহিওয়াল জাতের গরু মধ্যে রয়েছে যেগুলো জাতের গরু এই গরু সাধারণত দুধ উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়ে থাকে। শাহীওয়াল গরু পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের থেকে উৎপাদিত হয়ে বর্তমান বাংলাদেশে লালন পালন শুরু হয়েছেব এই শাহিওয়াল জাতের গরু  প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লিটার দুধ দেয়।

বিশ্বের যে গাভীগুলো খুব বেশি পরিমাণে দুধ দেয় তার ৫০% ফ্রিজিয়ান থেকে উৎপন্ন হয়। এই গরু দুধ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হলেও এ জাতের গরু অত্যন্ত বৃহৎ আকৃতি হয়। এই গরু প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ লিটার দুধ দিয়ে থাকে।

শেষ কথা

আপনি যদি গবাদিপশুর খামার অথবা গরুর পালনে আগ্রহী হোন তাহলে অবশ্যই গবাদি পশুর সম্পর্কে
ভালভাবে জানার পর শুরু করবেন। প্রয়োজনে আপনার এলাকার সফল খামারীর কাছ থেকে পরামর্শ
নিতে পারেন। আর গবাদি পশুর চিকিৎসা করানোর জন্য অবশ্যই পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাবেন। এক্ষেত্রে আপনার স্থানীয় পশু চিকিৎসালয়ের পরামর্শ নিতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url