২য় বিশ্বযুদ্ধ কোন দেশের অধীনে ছিল

আপনাদের অনেকের মনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। ২য় বিশ্বযুদ্ধ কোন দেশের অধীনে ছিল এবংদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল। কেনই বা এই রক্তক্ষয়ী মহাযুদ্ধ সংঘটিত হয় এসব বিষয় নিয়ে আপনাদের মনে অনেক সংশয় দুর করার জন্য এ সকল বিষয়ের খুটিনাটি সহ বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ পড়ুন।
২য় বিশ্বযুদ্ধ কোন দেশের অধীনে ছিল
এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আরো যে বিষয় জানতে পারবেন তা হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কেন হয়েছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কত মানুষ মারা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ফলাফল ইত্যাদি বিষয়।

ভূমিকা

বিশ্বে যেগুলো মহামারীর যুদ্ধ হয়েছে তার মধ্যে একটি হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অত্যন্ত রক্তক্ষ হয়ে একটি যুদ্ধ। এ যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ববাসী অনেক প্রাণ হারিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হওয়ার কারণ কি ছিল। এই যুদ্ধে কোন কোন দেশ অংশগ্রহণ কে করেছিল। কোন দেশ কার হয়ে যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেছিল এসব বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে আজকের এই পোস্টটিতে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল

বিশ্ব ইতিহাসে সবচেয়ে একটি ভয়াবহ যুদ্ধের নাম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ । এই যুদ্ধে অক্ষশক্তি এবং মিত্রশক্তি নামে দুটি দলের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। অক্ষশক্তির মধ্যে যে দেশগুলো ছিল তারা হল জাপান, জার্মানি, এবং ইটালি সহ অনেক রাষ্ট্র। অন্যদিকে মৃত্যুর শক্তির পক্ষে যে দেশগুলো ছিল সেগুলো হলো আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, সহ আরো অনেক দেশ। 


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৩০ টির ও বেশি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল। ৩০ টি দেশের সেনাবাহিনীর সংখ্যা ছিল ১০কোটিরও বেশি। প্রতিটি দেশের সেনাবাহিনী তাদের সর্বোচ্চ সামরিক শক্তি দিয়ে লড়াই করেছিল এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রযুক্তিগত ক্ষমতা প্রয়োগ ও বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কেন হয়েছিল

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অনেকগুলো কারণ ছিল । এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে যেটি ধারণা করা হয় সেটি হলো ১৯৩৩ সালে হিটলার তার নাৎসি পার্টি জার্মানির রাজনৈতিক দিক দিয়ে অনেক শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং আগ্রাসী বৈদেশিক নীতি, ছোট কারণ হিসেবে ইতালীয় তে ১৯২০ শতকের ফ্যাসিবাদ এবং সর্বশেষ ১৯৩০ এর দশকে তিন প্রজাতন্ত্রকে জাপান সাম্রাজ্য আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সূচনা হয়।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর জার্মানিকে দায়ী করা হয়। জাপানো জার্মানির স্বৈরতান্ত্রিক শাসক ব্যবস্থায় আগ্রাসন মূলক ভূমিকা নেওয়ার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং সমস্ত সামরিক শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

জার্মানি কর্তৃক ১৯৩৯ সালে পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে ১৯৩৯ সালের ৩তারিখে ফ্রান্স ও ব্রিটেন জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঘোষণা করে।

২য় বিশ্বযুদ্ধ কোন দেশের অধীনে ছিল

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যে দুটি পক্ষ অংশগ্রহণ করেছিল তা হচ্ছে মিত্রপক্ষ ও অক্ষ পক্ষ। কোন দেশ কার পক্ষে ছিল তা নিম্নে আলোকপাত করা হলো
  • মিত্রপক্ষ: চীন, চেকোশ্লোভাকিয়া, ইথিওপিয়া, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ব্রিটিশ ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, কানাডা, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, গ্রীস, মিশর, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুগোস্লাভিয়া, মেক্সিকো, ব্রাজিল, ফিলিপাইন।
  • অক্ষশক্তি: জার্মানি, জাপান, ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, বুলগেরিয়া,, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড, রোমানিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালিয়ান সোশ্যাল রিপাবলিক।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কত মানুষ মারা যায়

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৪০ লাখ ৫০০০০ এরও বেশি লোক মারা যায়। তবে সঠিক ধারণা মতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিজের সংখ্যা প্রায় আট কোটি। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে বিশ্বের সবচেয়ে রক্ত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এ যুদ্ধে জার্মানির নেতৃত্ব দিয়েছিল অ্যাডলফ হিটলার। হিটলারের ষড়যন্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় তিনি প্রায় ইহুদি নিধন মিশন চালিয়েছেন।


হিটলার প্রায় তৎকালীন সময়ে অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ৬০ লক্ষ ইহুদি হত্যা করেছেন। সেজন্য হিটলার কে বিশ্বের সবচাইতে বড় হত্যাকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এছাড়াও ইতালি, ফ্রান্স, জাপান, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, সহ আরো যেসব দেশ প্রায় ৩০ টি দেশের ১০ কোটি সেনাবাহিনী এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং তারা তাদের সর্বোচ্চ সামরিক শক্তি দিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করে।

এ যুদ্ধে সব দেশের সামরিক বাহিনী তাদের অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক এবং প্রযুক্তিগত দি ক ব্যবহার করে বলে মিত্রের সংখ্যা অনেকটাই বেশি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেকগুলো কারণের মধ্যে সবচাইতে বড় কারণ হলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরাজয়ের পর জার্মানির উপর অপমান মূলক ভাষায় চুক্তি সম্পাদন করে দেওয়া। এতে জার্মানি সব দিক দিয়ে ভেঙে পড়ে। এই ভেঙে পড়ার জার্মানির নেতৃত্ব দেয় হিটলার এবং তিনি জার্মানিকে আবার রাজনৈতিক সামরিক শক্তি তে শক্তিশালী করে গড়ে তোলেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হলো হিটলারের নাৎসি পার্টির রাজনৈতিক মনোভাব। এবং ইটালির আগ্রাসী বৈদেশিক নীতি এবং ফ্যাসিবাদ। সবশেষে ১৯৩৯ সালে সেপ্টেম্বর আক্রমণ করে এবং এই আক্রমনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।
ফলাফল: 
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি মিত্রশক্তির কাছে পরাজিত হয়।
  • যার ফলে পুজিবাদ ও সমাজ তন্ত্রের বিকাশ ঘটে।
  • এই যুদ্ধের ফলে অক্ষশক্তির ক্ষমতা হ্রাস পায়।
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের নির্মম পরাজয় ঘটে।
  • এই যুদ্ধের সময় পারমানুবিক বোমা আবিস্কার হয়। যা পরবর্তীতে বিভন্ন দেশ পারমানবিক শক্তি ব্যবহার করা শুরু করে এবং শুরু হয় পারমানবিক অস্ত্র প্রতিযোগীতা।
  • এই যুদ্ধের ফলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের কাছ থেকে অনেক উপনিবেশ স্বাধীন হয়ে যায়।
  • এই যুদ্ধে প্রাং ৫ কোটি ৭০০০০০ মানুষ প্রান হারায়। লক্ষ লক্ষ মানুর গ্রহহীন হয়ে পড়ে।
  • জার্মানি থেকে সম্পূর্ণরুপে নাৎসি বাহিনীর স্বৈরত্বান্তিক শাসনের অবসান ঘটে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে শেষ হয়েছিল

দ্বিতীয় বিশ্ব শেষ হওয়ার সঠিক তারিখ হল ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়া যুদ্ধ সংঘটিত হয় তার মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অন্যতম এ সময়কাল ছিল ১৯৩৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১৯৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ছয় বছর এ যুদ্ধ চলমান ছিল। ১৯৪৫ সালে অক্ষশক্তি নির্দ্বিধায় নিজ ইচ্ছায় আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে।

তখন যুদ্ধ ছিল জাপানি বাহিনী এর কিছু পরেই জাপানি বাহিনী ও আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ সমাপ্তি ঘোষণা করে এবং পরাজয় স্বীকার করে নেয়। পরাজয় স্বরূপ এ যুদ্ধে রোধের মধ্য দিয়ে জার্মানির নেতা নাৎসি পার্টির নেতা স্বৈরতান্ত্রিক শাসক এবং পৃথিবীর সর্ববৃহৎ হত্যাকারী হিটলার আত্মহত্যা করেন এবং তার স্ত্রী তার সাথে আত্মহত্যা করে।

শেষ কথা

পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে তাদের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ একটি বড় রক্তক্ষয়ী এবং ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। এ যুদ্ধের ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তাতে করে বিশ্ব প্রায় দশ বছর পিছিয়ে পড়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তথা বিশ্ব ইতিহাস সম্পর্কে আরো কিছু জানতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং নিত্য নতুন তথ্য জেনে নিন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url