উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানের জাত

প্রিয় পাঠক, আপনি কি বোরো ধান চাষ নিয়ে ভাবছেন? উচ্চ ফলনশীল  বোরো ধানের জাতসম্পর্কে অবহিত নন অথবা বোরো ধানের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না। ধান চাষ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে এবং ধান চাষের প্রয়োজনীয় পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্য এই আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানের জাত

প্রিয় পাঠক আপনি এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আরো জানতে পারবেন কিভাবে ধান চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়, বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত কোনগুলো, চারা রোপনের কতদিন পর কি পরিমানে সার প্রয়োগ করতে হয় ইত্যাদি বিষয়ে সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ভূমিকা

ধান হচ্ছে আমাদের দেশের প্রধান খাদ্যশস্য। এই ধানকে ঘিরে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল। যেহেতু জ্যামিতিক হারে জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে কিন্তু সেই অনুপাতে কৃষি জমি বাড়ছে না। তাই অল্প জমিতে কি পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে অধিক ফসল ফলানো সম্ভব। অতিরিক্ত জনসংখ্যার খাদ্যের অভাব দূর করার জন্য আধুনিক পদ্ধতিতে কিভাবে বেশি ফসল ফলানো সম্ভব সে বিষয়ে আলোচনা করা হল।

উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানের জাত

ভালো ফলন পাওয়ার জন্য অবশ্যই উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানের জাত নির্বাচন করতে হবে। আমাদের দেশে বোরো ধানের বেশ কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত রয়েছে। এর মধ্যে একটি অন্যতম এবং জনপ্রিয় ধানের জাত হলো বিধান-২৮। কেননা এ ধরনের ভাত খেতে অনেক সুস্বাদু এবং চাল অনেকটাই ভালো। 
আরো কিছু উচ্চ ফলনশীল বোরো ধরনের জাত হলো বিধান-৩৬, বিধান২৯, বিধান-৪৫, বিধান-৪৭, বিধান-৫০, বিধান-৫৫, বিধান-৫৮, বিধান-৫৯, বিধান-৬০, বিধান-৬৩, বিধান-৬৪, বিধান-৬১, বিধান-৬৭, বিধান-৬৮, বিধান-৭৪, বিধান-৮৬, বিধান-৮৮, বিধান-৮৯, ৯২, ব্রি হাইব্রিড ধান৫, ব্রি হাইব্রিড ধান৩,

ব্রি হাইব্রিড ধান২, ব্রি হাইব্রিড ধান১, বঙ্গবন্ধু ধান১০০, ব্রি হাইব্রিড ধান৮, ব্রি ধান১০৭, ব্রি ধান১০৫, ব্রি ধান১০২, ব্রি ধান১০১, ব্রি ধান৯৯, ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৬,বিআর১৯, বিআর১৮, বিআর১৭, বিআর১৬, বিআর১৫,বিআর১৪, বিআর১২, বিআর৯ ইত্যাদি।

বোরো ধানের চাষ পদ্ধতি

বোরো ধান সাধারণত হাওর এলাকায় খুব বেশি চাষ হয়। তাই হাওর শব্দ হতে বোরো ধানের উৎপত্তি ঘটেছে বলে ধারনা করা হয়। তবে বর্তমান আমাদের দেশে পানি সেচের জন্য অনেক ডিপ টিউবয়েল স্থাপিত হওয়ার জন্য অনেক উঁচু জমিতে ও ধান চাষ হচ্ছে। অন্যান্য ধানের মৌসুমের থেকে বোরো ধানের মৌসুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কেননা বোরো দানের মৌসুমে ধানের ফলন সব থেকে বেশি হয়ে থাকে। তবে ভালো ফলন পেতে হলে অবশ্যই ভাবে জমি তৈরি করা, ভালো সার প্রয়োগ করা, ভালো কীটনাশক ব্যবহার করা এ সকল বিষয়ে জানা দরকার। বোরো ধানের আধুনিক চাষ পদ্ধতিতে কিভাবে উচ্চ ফলনশীল ধান উৎপাদন করতে পারেন সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

জমি তৈরি করা: ভালো ফলন পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে জমিটি ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। এর জন্য যা করতে হবে তা হলো জমির যদি শুকনো হয় তাহলে অবশ্যই শুকনোতেই জমি চাষ করে নিয়ে পানি দিয়ে ভিজাতে হবে অথবা শুকনো জমি পানি দিয়ে ভিজিয়ে নরম করার পর চাষ করতে পারেন। মোটকথা জমিয়ে যেন থকথকে কাদা হয়।

ভালোভাবে কাদা করার পর জমিতে জমির চারিদিকে পানি ধরে রাখার জন্য একটু উঁচু করে বাধ দিতে হবে। যাতে করে পানি বেরিয়ে খুব সহজেই জমি শুকিয়ে না যায়। জমি চাষ এবং বাধ দেওয়া শেষ হলে জমিতে পানি সেচ দিতে হবে এরপর জমি সমতল করতে হবে যাতে কোথাও উঁচু হয়ে শুকিয়ে না যায় আবার কথা নিচু হয়ে পানি বেশি আটকে না যায়।

এর জন্য আপনি মই ব্যবহার করে জমি ভালো করে সমান করে নেবেন। চাষ করার এবং মই দেয়ার এক সপ্তা পর্যন্ত জমিতে পানি দিয়ে কাদা মজিয়ে নিতে হবে। জমিতে যদি অন্যান্য আগাছা থাকে তাহলে আপনি সেগুলো বেছে পরিষ্কার করে নিতে হবে অথবা পচানোর জন্য ফচনশীল অ্যালুমিনিয়াম নাইট্রোজেন শার্ট দিতে পারেন। এতে করে আপনার জমির শক্তি অনেকটাই বেড়ে যাবে।

সার প্রয়োগ: ভালো ফলন পাওয়া অনেকটাই প্রথমবার সার প্রয়োগ করার ওপর নির্ভর করবে। কেননা ভালো ফলন পাওয়ার জন্য প্রথমবারের সার প্রয়োগ করাকে মূল সার প্রয়োগ বলা হয়। এ সময় আপনি যে স্যার ব্যবহার করবেন তা হলো জৈব, পটাশ, এবং কিছু পরিমাণ ইউরিয়া প্রয়োগ করতে পারেন। 

চারা রোপন: জমি তৈরি করা সম্পন্ন হলে বীজতলা থেকে তুলে নিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে চারার বয়স ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে অথবা একটু কম বেশি হতে পারে। চারা তোলার সময় একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে ধানের চারা সম্পূর্ণ সেকড় সহ ওঠে। কেননা গোড়া ছেড়া চারা রোপন করলে কোন কাজে আসবে না। 

এরপর ১৫ থেকে বেশি সেন্টিমিটার পরপর চারা গুলো গোছা গোছা করে রোপন করতে হবে। এক গোছাই দুই থেকে তিনটি চারা থাকতে হবে। চারাগুলো সুস্থ সবল হতে হবে এবং দুই থেকে ৩ মিটার গভীরে রোপন করতে হবে। তবে খুব বেশি গভীরে রোপন করা ঠিক হবে না। কেননা এতে করে ধানের কুশি গজাতে অসুবিধা হবে।
আর কুশি বেশি না হলে ফলন বেশি  হবে না। রোপনের সময় জমিতে কিছু পরিমাণ পানি রাখতে হবে। রোপন শেষ হয়ে গেলে কিছু পরিমান ছারা জমির এক কোণে পুতে  রাখতে পারেন। যাতে করে যেগুলো তারা মরে যাবে অথবা নষ্ট হয়ে যাবে সে সকল জায়গায় আবার চারাগুলো তুলে নিয়ে গিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করতে পারেন। এর ফলে একই সাথে চারাগুলো বেড়ে উঠবে।

শেষ ব্যবস্থা: জমি শেষ ব্যবস্থা অবশ্যই ভালো হতে হবে। বোরো ধানের জমিতে সব সময় পানি বাধিয়ে রাখতে হবে। তবে কোন কোন সময় জমি শুকিয়ে ফেলতে পারেন। এতে করে আগাছা দূর করতে সুবিধা হবে। আগাছা দূর হয়ে গেলে আবারো জমিতেসেচ দিতে হবে। ধানের চারা বেড়ে ওঠার পর যখন থোড় হয়ে যাবে তখন এবং ভেতর ধান উৎপন্ন শুরু হওয়া পর্যন্ত পানি চাহিদা বেশি হবে।

এ সময় দ্বিগুণ হারে সেচ দিতে হবে। এরপর ধান কাটার প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন পূর্বে থেকে পনি সেচ বন্ধ করে দিতে হবে।  যাতে করে জমি শুকিয়ে যায়। জমি না শুকালে ধান কাটতে অসুবিধা হবে।

বোরো ধানের বীজ বপনের সময়

বোরো ধান চাষের সর্বপ্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে বোরো ধানের বীজ বপন করা। সাধারণত বোরো ধান রোপনের প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ দিন পূর্বে বোরো ধানের বীজ বপন করতে হয়। এতে করে ধানের বীজ থেকে তারা অঙ্কুরদম হয়ে অনেকটাই সাবলীল হয়। আরচারা রোপন করার সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে শেখর দ্রুত ছড়িয়ে ফেলে এবং প্রাকৃতিক গতিতে বেড়ে ওঠে যার ফলে ধানের চারা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে। বোরো ধানের বীজ বপণের সময় এবং নিয়মাবলী:

বোরো ধানের আদর্শ বীজতলা তৈরি

সময়: সাধারণত বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের শেষের দিকে এবং পৌষ মাস এর শুরুর সময় বোরো ধানের বীজ বপন করতে হয়। তবে অঞ্চল ভেদে বীজভবনের সময় এবং তারা রোপণ একটু আলাদা আলাদা হতে পারে।
স্থান নির্বাচন: একটি আদর্শ বীজ তলা তৈরির জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল বীজ তলা জন্য জমি নির্বাচন করা। বীজ বপন করা পূর্বে আপনাকে অবশ্যই একটি ভালো স্থান নির্বাচন করতে হবে। সাধারণত উর্বর ও নিয়মিত রোদ পড়ে এরকম একটি স্থান যা পানি ছেচের কাছাকাছি হতে হবে যাতে করে প্রয়োজন হলে জমিতে পানি শেষ দিতে পারেন।

জমির পরিমাণ: কতটুকু জায়গায় কি পরিমান বীজ রোপন করা যায় এবং কি পরিমান সার প্রয়োগ করার মাধ্যমে বোরো ধানের বীজ বপন করা যায় সে সম্পর্কেও জানা দরকার। এক বর্গ মিটার অর্থাৎ ১ ফুট গুনন ৩.৫ ফুট জায়গার জন্য ২ কেজি জৈব সার বপন করবেন। মনে রাখবেন জমিতে যদি কাদা কম হয় তাহলে একটু ভালো করে কুপিয়ে নিয়ে একটু কাদা কাদা করবেন।

তারপর সেখানে সার প্রয়োগ করবেন। জমি শক্তি বাড়ানোর জন্য আপনি অন্যান্য জৈব পদার্থ যেমন গোবর, খায় ছাই দিতে পারেন।

বীজ বপন: বীজ বপন করার চার পাঁচ দিন পূর্বে ধান পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। একদিন পর পানি থেকে তুলে একটি পাত্রে কিছু পরিমাণ খড় বিছিয়ে তার ওপর ধান এবং ধানের উপর আবার খড় ও ছাই দিয়ে চাপা দিয়ে রাখবেন। এতে করে দুই-তিন দিনের মধ্যেই ধান ফেটে শিকড় বের হয়ে আসবে। এরপর আপনি ধান ভালো করে ঝরঝরে করে আপনার তৈরি করা জমিতে নিয়ে পাতলা পাতলা করে রোপন করবেন।

মনে রাখবেন জমিতে যেন কিছু পরিমাণ কিছু পরিমাণ পানি থাকে। আপনি যদি কোন ঠান্ডা প্রকোপ এলাকায় বসবাস করেন যে সকল জায়গায় শুকনো নিচতলা বীজ বপনের জমি তৈরি করতে পারবেন।

বোরো ধানে সার প্রয়োগ পদ্ধতি

সার প্র্রয়োগের উপর আপনার ধানের ফলন অনেকটাই নির্ভরশীল। তাই ভালো ফলন পাওয়ার জন্য পরিমাণ মতো সার প্রয়োগ করবেন। এক্ষেত্রে চার মাসের মেয়াদের ধনের জন্য অর্থাৎ বিধান ৮১, বিধান ৮৪, বিধান ৮৮, বিধান ৪৫ বিধান এ ধরনের দাঁতের জন্য প্রতি বিঘায় মাত্রা হবে ১৫ কেজি টিএসপি ডিএপি মাত্রা হবে ১২ কেজি থেকে ১৫ কেজি।

আর যদি চার মাসের ও বেশি মেয়াদী জাত হয় তাহলে অর্থাৎ বিধান ৫০ বিধান ২৯ বিধান ৫৮ এবং হাইব্রিড জাতের ধান সকল ধরনের ক্ষেত্রে ইউরিয়া সার চল্লিশ কেজি, টি এ পি ১৩, ডিএপি ১৩ কেজি জিপ সাড়ে ১৫, করে প্রয়োগ করতে হবে। তবে অঞ্চল ভেদে সারের মাত্রা কম-বেশি হতে পারে। কেননা নিচু অঞ্চলের জমি বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে।

সেগুলো জমিতে সার পরিমাণ অবশ্যই কম দিতে হবে। আর যেগুলো জমি অত্যন্ত উচু প্রকৃতির অর্থাৎ পানি থেকে অনেক দূরে। সব সময় শুকনো থাকে, অনুরবার হয়। আর এ সকল জমিতে সারের পরিমাণ বেশি দিতে হয়। এমনকি জমিতে সালফার প্রয়োগ করাও দরকার। জিংক এবং জিপসাম এমপি এগুলো সার পরিমান মতো প্রয়োগ করা উচিত।

সার প্রয়োগে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথমবার অর্থাৎ চারা বোনের পনেরো দিন পর দ্বিতীয়বার ২৫ থেকে ৪০ দিন পর এবং ধানের থোড় আশার এক সপ্তা পূর্বে।

ধানের কুশি বৃদ্ধির উপায়

ধানের চারা রোপনের পর খুশি বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কুশি বৃদ্ধির উপর নির্ভর করে ধানের ভাল ফালন। চারা রোপনের পর কিছু নিয়ম নীতি সঠিক ভাবে অনুসরন করলে ধানের কুশি বৃদ্ধি হয়।যেমন:
ধানের আগাছানাশক ব্যবহার:
এসিটাফ্লোর+বেনসালফিউরান মিথাইল+বেনসালফিউরানমিথাইল+মেফেনেসেট ইত্যাদি। আগাছা নাশক কীটনাশক চারা রোপন করার তিন দিনের মাথায় দিতে হবে। বিশেষ করে বোরো ধানের জন্য আগাছা নাশক প্রয়োগ করা এবং ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার করা খুবই জরুরী। এক্ষেত্রে আপনি বিসপাইরিবেক সোডিয়াম+বেনসালফিউরাল মিথাইল, ডায়াফিমনি, ইথক্সিসালফিউরান এবং ফেনক্সলাম গ্রুপের এছাড়াও অন্যান্য গ্রুপের আগাছা নাশক কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন।

তবে হাত দিয়ে য়ে আগাছা তুলে ফেলার পর সার প্রয়োগ করলে এটা বোরো ধানের জন্য খুবই ভালো। সাধারণত তারার উপর দশ থেকে পনেরো দিনের মধ্যে প্রথমবার হাত দিয়ে অথবা জমিতে একটু বেশি পরিমাণে পানি ব্যবহার করার মাধ্যমে আগাছা নাশক কীটনাশক ব্যবহার করবেন।

সেচ ব্যবস্থা: 
ধানের কুশি বৃদ্ধি করার জন্য জমিতে অন্তত দুই থেকে তিন সেন্টিমিটার পরিমাণে পানি রাখতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে অতিরিক্ত শীতে তারা যেন মরে না যায়। অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে ধানের চারা খেয়ে প্রকৃত রাখার জন্য প্রতিদিন জমির পানি পরিবর্তন করতে হবে। এতে করে যা হবে তা হল মাটির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে।

বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ দমন: 
ধানের খুশি গলানো অবস্থায় ধানের চারায় বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ যেমন মাজরা পোকা সহ আরো অন্যান্য পোকা আক্রমণ করে ধানের চারার আগা খেয়ে ফেলে। এজন্য মাজরা পোকা এবং পাতা মাছি নিধনের জন্য জমিতে পানি কম রাখতে হবে। আক্রমণের পরিমাণ বেশি হলে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করবেন।

এতে করে প্রকার আক্রমণ ২৫ ভাগ কমে যাবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পাতাগুলো কে সংক্রামন মুক্ত করার জন্য ডার্সবার্ন এক এক লিটার পানিতে এক মিলি লিটার কীটনাশক মিশিয়ে ভালোভাবে প্রয়োগ করুন। কীটনাশক ছাড়াও জমির মধ্যে ডাল পাতা পুতে রাখার মাধ্যমে এ পোকা দমন করতে পারবেন। যেখানে বেশি পরিমাণে প্রকার ডিম দেখতে পাবেন সেটি নষ্ট করে ফেলুন।

বালাই নাশক কীটনাশক: 
ধানের কুশি বৃদ্ধি করার জন্য বালাইনাশক কীটনাশক ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। কোন রোগ বালাই দেখা দিলে ধানের চারায় প্রতি দীঘায় ৫ কেজি প্রোডাকশার প্রয়োগ করতে পারেন এবং জমির পানি শুকিয়ে দিতে হবে। জমিতে যদি বাগানে রোগ এর প্রভাব লক্ষ্য করেন তবে আক্রান্ত কুশি ভেঙ্গে দিতে হবে। কেননা ঐ আক্রান্ত খুশি থেকে পার্শ্ববর্তী আরো অনেক খুশি আক্রান্ত হতে পারে।

ধানের মাজরা পোকা দমনের কীটনাশক

ধানের চারার জন্য মাজরা পোকা দমনখুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পোকা ধানের পাতা খেয়ে খেয়ে ফেলে। যার জন্য ধানের দ্বারা বৃদ্ধি হতে এবং কুশি গজাতে ব্যাহত হয়। ধানের চারা রোপণের প্রায় ১৫ দিন পর 30 গ্রাম ভীর থাকো পাউডার সামান্য পরিমাণে পানিতে মিশিয়ে তার সাথে পরিমাণ অনুযায়ী ইউরিয়া সার মিশিয়ে জমিতে ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। 

এই কীটনাশকের কার্যকারিতা তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আর সে কারণে ধানের শীষ আষাঢ় পর মাঝরা পোকা দাঁতে কোনো ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য চারা লাগানোর প্রায় ৪০ দিন পর যথা নিয়মে আবারো ভিরতাকো প্রয়োগ করতে হবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি নতুন ধান চাষি হয়ে থাকেন তাহলে ধান চাষ করার পূর্বে অবশ্যই ধান তার সম্পর্কে এবং উন্নত ধরনের জাত সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেবেন। প্রয়োজনে আপনি আপনার নিকৃষ্ট কৃষি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজন পরামর্শের মাধ্যমে ধান চাষ শুরু করতে পারেন এবং ধানের কোন কীটনাশক ব্যবহার করার পূর্বে কৃষি অফিসারের অথবা অভিজ্ঞ ধান চাষীদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োগ করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url