ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল একসাথে কয়টি বাচ্চা দেয় - ছাগল পালন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি ছাগল পালনের কথা ভাবছেন। তাহলে আপনাকে জানতে হবে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল একসাথে কয়টি বাচ্চা দেয় এবং ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দৈনিক কত লিটার দুধ দেয়। ছাগল পালন সম্পর্কে জানতে এবং ভালো ছাগলের জাত কেনার উপায় কি এ সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল একসাথে কয়টি বাচ্চা দেয়
প্রিয় পাঠক, আপনি আরো জানতে পারবেন ছাগল পালন করলে কি পরিমান লাভ হয়, ভালো জাতের ছাগল কেনার উপায় কি, ছাগল দিয়ে আকিকার নিয়ম ইত্যাদি বিষয়াবলি।

ভূমিকা

পশুপালন একটি লাভজনক পেশা। বর্তমান বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খামারীদের মধ্যে পশুপালন করতে দেখা যায়। পশুপালন এর মধ্যে একটি অন্যতম হল ছাগল পালন। আর ছাগলের জাতের মধ্যে একটি ভাল জাতের ছাগল হল ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল। বর্তমানে গরু মোটাতাজাকরনে একটু বেশি মুলধন লাগে। আর সেই জন্য গরিব খামারীরা পশুপালন হিসেবে ছাগল পালনকে বেছে নিয়েছে। তাই ছাগল পালন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল একসাথে কয়টি বাচ্চা দেয়

বাংলাদেশ ও ভারতের একটি রাজ্যের ছাগলের জাত হল ব্ল্যাক বেঙ্গল অর্থাৎ কালোজাতের ছাগল। সাধারণ জাতির ছাগলের থেকে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল অনেক বেশি বাচ্চা প্রসব করে। এ ছাগল দুধ কম দিলেও বাচ্চা অনেক বেশি দেয় এবং উচ্চতায় এ জাতের ছাগল একটু খাটো প্রকৃতির হয়ে থাকে। এই ছাগলের চামড়া অত্যান্ত দামি এবং মাংস খুব সুস্বাদু হয়। এই ছাগল পালন গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল একসাথে এক থেকে প্রায় ছয়টি করে বাচ্চা দিতে পারে এবং বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়। মোট ১৪ মাসে প্রায় সর্বোচ্চ ১০ টা পর্যন্ত বাচ্চা প্রসব করতে পারে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল। অন্যান্য প্রজাতির ছাগল যেমন আফ্রিকার মশাই, ভারতের যমুনাপারি, চীনের চিনা জাতের ছাগল ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের থেকে বেশি দুধ ও মাংস উৎপাদন করে।

কিন্তু এ গুলোজাতের ছাগলের বাচ্চা জন্মানোর পরেই অনেক বাচ্চাই মারা যায়। আর এদিক থেকে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মৃত্যুর হার ৫ থেকে ১০ শতাংশ। তাই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের প্রজনন অত্যন্ত বেশি হওয়ায় বিজ্ঞানীরা এই জাতের ছাগলকে সর্বোচ্চ উৎপাদন কারী ছাগল হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দৈনিক কত লিটার দুধ দেয়

জনসংখ্যার সাথে তাল মিলিয়ে দেশের পোল্ট্রি ফার্ম এবং অন্যান্য মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও ছাগল পালনের প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে তেমন উন্নতি লাভ করতে পারেনি। বাংলাদেশে প্রায় ২০ মিলিয়ন ছাগলের ৯৩% ছাগল ক্ষুদ্র খামারিরা চাষ করে। কিন্তু পশু পালনের মধ্যে ছাগল পালন সহজ এবং লাভজনক। অনেকগুলো ছাগলের জাতের মধ্যে একটি হলো ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল।
ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের মাংস খেতে খুব সুস্বাদু এবং চামড়া অত্যন্ত দামি। ব্ল্যাক বেঙ্গল  ছাগলের ওজন দশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ কেজি কখনো কখনো আরও বেশি ওজনের ও হয়ে থাকে। এ ছাগলের দৈনিক বৃদ্ধির হার ২৫ থেকে ৩৫ গ্রাম। এ ছাগল পালন করে অনেক খামারীরাই সফলতা পেয়েছেন।

তাই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন নিঃসন্দেহে লাভজনক একটি ছাগল পালন পেশা। ছাগল আকারে খুব ছোট মাথার উপর দুটি সিং বাকানো থাকে, গায়ের লোম ছোট, তবে দুধ উৎপাদন তুলনামূলক খুবই কম। প্রতিদিন ৪০০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম দুধ দিয়ে থাকে এই ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল।

ছাগল পালনে লাভ ক্ষতির হিসাব

ছাগল পালন এমন একটি পশু পালন পেশা যেখানে অল্প খরচে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায়। ছাগল পালনের জনপ্রিয় চার টি পদ্ধতির রয়েছে। যে পদ্ধতিতে ছাগল পালন করলে অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ করা যায়। নিম্নে ছাগল পালনের এই চারটি পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো

পারিবারিকভাবে ছাগল পালন: পারিবারিকভাবে ছাগল পালার জন্য তিন থেকে চারটি ছাগল রাখা হয়।
  • এ ধরনের ছাগল পালনে পদ্ধতিতে  খুব একটা খরচ হয় না।
  • এ ধরনের ছাগল পালনে পদ্ধতিতে জন্য ভিন্ন কোন বাসস্থান ব্যবহার করা হয় না।
  • বাড়ির উঠানে বেঁধে রেখে পারিবারিকভাবে ছাগল পালন করা হয়।
  • এই পদ্ধতিতে ছাগল পালনের জন্য বাড়তি লোকের প্রয়োজন হয় না।
  • তবে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দানাদার খাদ্য প্রদান করা হয়।
মুক্তভাবে ছাগল পালন: 
  • এ পদ্ধতিতে ছাগলের সংখ্যা সাত থেকে ১০ টি হয়।
  • আবাদি জমির পাশে উঁচু অংশে যেগুলো জায়গায় চাষাবাদ হয় না, পুকুরপাড়ে, রাস্তার পাশে, চর এলাকায় অনুপযুক্ত জমিতে এই ছাগলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সারাদিন মাঠে চরানোর পরে সন্ধ্যা বেলায় বাড়িতে নিয়ে এসে চারিদিকে ঘেরাও করে এ ধরনের ছাগলকে রাখা হয়।
  • এ ধরনের ছাগলকে আলাদা করে ঘাস এনে দিতে হয় না।
  • বিশেষ করে চর এলাকায় এ পদ্ধতিতে ছাগল পালন করা হয়।
  • এ পদ্ধতিতে ছাগল পালন অত্যন্ত লাভজনক।
  • এই পদ্ধতিতে ছাগল পালন করার জন্য দানাদার খাদ্য প্রদান করা হয়। যাতে ছাগলগুলো খুব দ্রুত বেড়ে ওঠে।
  • চর এলাকায় এই পদ্ধতিতে ছাগল পালন করার জন্য অনেক খোলা জায়গা রয়েছে। যেখানে ছাগল সারাদিন মুক্ত ভাবে খাবার খায়। এজন্য ছাগলের রোগ বালাই তেমন হয় না এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তেমন খরচও হয় না।।
  • বর্তমান বাংলাদেশের সব অঞ্চলে মুক্তভাবে ছাগল পালন করা হচ্ছে
আধা নিবিড় পদ্ধতি:
  • এ পদ্ধতিতে ছাগলের সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ টি হয়ে থাকে।
  • মুক্ত পদ্ধতিতে যেভাবে ছাগল পালন করা হয় এই পদ্ধতিতেও একইভাবে ছাগলকে মাঠে নিয়ে গিয়ে চরানো হয় এবং সন্ধ্যেবেলা বাড়ি নিয়ে এসে ছাগলদেরকে নির্দিষ্ট আবাসস্থলে বেঁধে রাখা হয়।
  • এই পদ্ধতিতে ছাগলদেরকে আলাদাভাবে ঘাস এবং দাদার খাদ্য প্রদান করতে হয়।
  • যেহেতু বাণিজ্যিকভাবে এই পদ্ধতিতে ছাগল পালন করা হয় সেজন্য ছাগলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রজনন এবং স্বাস্থ্যের বিষয়ে বিশেষ যত্ন নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না।
  • এই পদ্ধতিতে ছাগল পালন খরচ একটু বেশি হয় কেননা অনেক ছাগল একসাথে পালন করার জন্য উৎপাদন খরচ এবং বিনিয়োগ খরচ একটু বেশি হয়ে থাকে।
  • যেহেতু এক জায়গায় অনেক ছাগল একসাথে থাকে সেহেতু বিভিন্ন সংক্রামক রোগ এক ছাগল থেকে অন্য ছাগলের কাছে পার হয়ে যায়। ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর সেজন্য চিকিৎসা খরচ অত্যাধিক বেশি হয়।
  • যদি রোগ বালাই তেমন না হয় তাহলে এই পদ্ধতিতে ছাগল পালন করে অনেক বেশি পরিমাণে লাভবান হওয়া সম্ভব।
নিবিড় পদ্ধতি: 
  • এ পদ্ধতিতে ছাগলের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে থাকে। আবাসস্থল অনুযায়ী পরিমাণ মতো ছাগল রাখা যায়।
  • এই পদ্ধতিতে ছাগল পালনের জন্য সেড প্রয়োজন হয় এবং ছাগলকে ঘাস ও দানাদার খাদ্য প্রদান করতে হয়।
  • খামারে ছাগল পালনের ভাল ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ঘাস সরবরাহ করা হয়। এজন্য আলাদা ভাবে ঘাস চাষ করতে হয়।
  • বাণিজ্যিকভাবে ছাগল পালন করা হয় বলে সকল ছাগলের স্বাস্থ্যের এবং পুষ্টির সঠিক খেয়াল রাখা সম্ভব হয় না।
  • এই পদ্ধতিতে কম জায়গায় বেশি ছাগল পালন করা যায়। কিন্তু প্রাথমিক বিনিয়োগ একটু বেশি হয়ে থাকে।
  • এই পদ্ধতিতে প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ছাগল মাঠে চড়ানোর পরে আবারো বেঁধে রাখে খাবার খাওয়ানো হয়।

ছাগলের জাত চেনার উপায়

বিশ্বের সকল প্রাণীর যেমন বিভিন্ন রকমের জাত রয়েছে তেমনি ছাগলেরও অনেক জাত রয়েছে। শারীরিক এবং রং ও অন্যান্য দিক দিয়ে এদের বৈশিষ্ট্য গত বিভিন্ন পার্থক্য দেখা যায়। যতগুলো ছাগলের জাত রয়েছে তার মধ্যে কিছু জাত আমরা সচারচর পালন করে থাকি। তবে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত বিদেশি জাতের ছাগল লালন পালন করা হচ্ছে।
সাধারণত দুধ উৎপাদনের জন্য এবং মাংস উৎপাদনের জন্য এই বিদেশী ছাগল গুলো পালন করা হয়ে থাকে। যেভাবে ছাগলের জাতগুলো চিনতে পারবেন তা নিচে আলোচনা করা হলো:

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল
বাংলাদেশ যতগুলো ছাগলের জাত রয়েছে তার মধ্যে একটি পরিচিত ছাগলের জাত হল ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ছাগল দেখা যায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের আকার খাটো এবং মাঝারী সাইজের হয়ে থাকে। এই ছাগলে ওজনে ১০ থেকে ৩০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে তবে মেয়ে ছাগলের তুলনায় পুরুষ ছাগল ওজন বেশি হয়।

এটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ মিলি লিটার দুধ উৎপাদন করে থাকে। এ জাতের ছাগলের গায়ের রং সাধারণত কালো হয়ে থাকে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু ছাগলের গায়ের রং খয়েরি আবার সাদা ও হয়ে থাকে। তবে এ জাতের ছাগলের খাবারের চাহিদা অন্যান্য ছাগলের চেয়ে কম হয়। গাছের পাতা লতা, মাঠের ঘাস খেয়ে এই ছাগল জীবন যাপন করতে পারে। 

বছরে দুইবার অর্থাৎ ১৪ মাসে দুইবার তিনটি করে আবার কখনো তার অধিক বাচ্চা প্রসব করে থাকে। এ ছাগলের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু এবং চামড়া অনেক দামি।

রাম ছাগল
বাংলাদেশের আরো একটি পরিচিত ছাগলের নাম হলো রাম ছাগল। এই ছাগল অন্যান্য জাতের রাম ছাগল ছাগলের থেকে আকারে বড় হয় এ জাতের ছাগল সাধারণত বিদেশি জাতের ছাগল। রাম ছাগলকে যমুনাপারি ছাগল বলা কারণ হচ্ছে এই ছাগল ভারতের উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা ও যমুনার মধ্যবর্তী এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। 

তবে রাম ছাগলকে পুরোপুরি বিদেশি জাত বলা ঠিক হবে না কেননা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রচুর পরিমাণে রাম ছাগল দেখা যায়। রাম ছাগল ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের থেকে আকারে বড়। আর সে কারণেই সাধারণত মাংস উৎপাদনের জন্য লালন পালন করা হয়। কিন্তু রাম ছাগলের মাংস ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংসের মত সুস্বাদু নয়।

তবে রামছাগল প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে পারে। এই ছাগলের দুধ অত্যন্ত মিষ্টি এবং পুষ্টি সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ ছাগলের রঙ সাদা, কালো, বাদামি, হলুদ হয়ে থাকে। রাম ছাগলকে চেনার সহজ উপায় হচ্ছে ছাগলের কান অত্যাধিক লম্বা হয়। এর কানের থেকে ৮ইঞ্চি ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয় আর ওজন ৭০ থেকে ৯০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

যদিও ছেলের রাম ছাগল তুলনায় মহিলা রাম ছাগলের ওজন প্রায় অর্ধে হয়ে থাকে। এ জাতির ছাগল বছরে একবার করে এবং প্রতিবার একটি করেই বাচ্চা প্রসব করে থাকে।
বিটল ছাগল
বাংলাদেশের আরো একটি জনপ্রিয় ছাগলের জাত হলো বিটল জাতের ছাগল। এ জাতের ছাগল দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, নেপাল, পাকিস্তান এ খুবই জনপ্রিয়। এ জাতীয় ছাগল শুধু মাংস উৎপাদনের জন্যই নয় পাশাপাশি দুধ উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। এ জাতের ছাগলের মাঝারী সাইজ হয়ে থাকে। ওজন ৫০ থেকে ৭০ কেজি পর্যন্ত পড়ে থাকে আর লম্বায় ৭০ সেন্টিমিটার।

তবে এই ছাগলের কান রাম ছাগলের মতো লম্বা হয়ে থাকে গায়ের রং দেখে রামছাগল এবং বিটল জাতের ছাগলকে খুব সহজেই চেনা যায়। ছাগলের চামড়ার রঙ কালো তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হলুদ বাদামি এবং খয়রি আর বড় বড় চাপকা (চাপ) লক্ষ্য করা যায়। ছাগল প্রতিদিন ৪ লিটার দুধ দেয়।সে কারণে দুধ উৎপাদনের জন্য এই ছাগল পালন করা হয়। বিটল জাতের ছাগল বছরে একবার একটি করে বাচ্চা দেয়।
বোয়ার ছাগল
যিনারা খামারের মাধ্যমে ছাগল পালন করতে আগ্রহে তাদের জন্য এ জাতের ছাগল খুবই উপযুক্ত। এ যাতে ছাগলের ওজন ১০০ থেকে ১৫০ কেজি হয়ে থাকে। আর মেয়ে ছাগল ওজন ৮০ থেকে ১১৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। এ জাতীয় ছাগলের ওজন প্রতি সাত দিনে দুই কেজি করে বাড়ে। তাহলে এটা বোঝা যাচ্ছে যে, এ ছাগল পালন কতটা লাভজনক।

আমাদের দেশে এ জাতি ছাগল খুব একটা দেখা যায় না নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া উন্নত দেশে ছাগল অনেক সংখ্যক রয়েছে।
বারবারই ছাগল
আফ্রিকার দেশ সোমালিয়াতে এ জাতির ছাগলের উৎপত্তি। সেখান থেকে দক্ষিণ এশিয়া এবং এশিয়াতে ও লালন পালন করা হয়। এই ছাগলের একটি বিশেষ গুণ হলো এই ছাগলগুলো খুব সহজেই যেকোনো পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।

বারবার জাতের ছাগলের ওজন ২৫ থেকে ৩০ কেজির মধ্যে হয়। দুধ ও মাংস জন্য ছাগল খুবই উপযুক্ত। ছাগলের খাদ্যের চাহিদা খুবই কম। তবে বাংলাদেশ এখানে ছাগল খুব একটা দেখা যায় না।

কোন জাতের ছাগল বেশি দুধ দেয়

বর্তমানে বিশ্বের প্রতিটি দেশেই বিভিন্ন জাতের ছাগলের জাত রয়েছে। তবে সব জাতের ছাগল এর জাত মাংস প্রজনন এবং দুধ উৎপাদনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দুধ উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন জাতের ছাগল পালন লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে কয়েকটি জাত সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো

আলপাইন ছাগল: ছাগল দুধ উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত এই ছাগলগুলো প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে পাঁচ লিটার দুধ দিয়ে থাকে। এ জাতের ছাগলকে ফরাসি আলপাস থেকে উৎপত্তি হয়েছে।
সানেন ছাগল: দুধ উৎপাদন করতে আরেকটি ছাগলের জাতের নাম হলো থানিন ছাগল সাধারণত সুইজারল্যান্ডে এই ছাগল দেখা যায় এই ছাগল প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ লিটার দুধ উৎপাদন করে থাকে
লামনছা ছাগল: এ প্রজাতির ছাগল ছোট আকৃতির হলেও কানের জন্য এদের খুব সহজেই চেনা যায় এ ছাগলগুলো বন্ধুত্বসুলভ এবং মাংস প্রজননের জন্য খুবই ভালো তবে ছাগল ও বেশি পরিমাণে দুধ উৎপাদন করে থাকে
যমুনাপারী ছাগল: না পারি ছাগল পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একটি বুদ্ধজাত ছাগলের জাত যা প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচ লিটার দূর করে থাকে এতে ছাগলের কান অনেক লম্বা এবং সুন্দর চেহারা হয়ে থাকে।
টোগেনবুর্গ ছাগল: ছাগল দুধ উৎপাদনের জন্য অন্যতম এই ছাগল ১৬০০ দশকের সময় দেখা গিয়েছিল। চেহারায় সোজাসাপ্টা এবং পূর্ণ স্বাস্থ্য সম্পন্ন ছাগলের জাতএগুলো।
নুবিয়ান ছাগল: ছাগল পালনের জন্য আরও একটি ছাগলের জাত হলো নবিয়ান জাতের ছাগল। এ জাতীয় ছাগল সারা বছর দুধ উৎপাদন করতে পারে। দৈনিক এই ছাগল তিন থেকে ছয়টা ৩ থেকে ৬ লিটার পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে।
ওবেরহসালি ছাগল: এ জাতের ছাগল সাধারণত সুইজারল্যান্ডে দেখা যায় দুধ উৎপাদন এবং দৈনিক প্রায় তিন থেকে ছয় লিটার দুধ উৎপাদন করে থাকে।
গোল্ডেন গার্ন্সি ছাগল: উৎপাদনের জন্য আর্টিফিশিয়ার যাদের ছাগল হচ্ছে গোল্ডেন গার্ন্সি ছাগল এছাড়াও দুধ উৎপাদনের জন্য আরো ছাগলের জাত হলো সাবল ছাগল এবং নাইজেরিয়ান বামন ছাগল।

ছাগল দিয়ে আকিকার নিয়ম

হাদিস মোতাবেক বাচ্চার আকিকা করার জন্য ছাগল এবং দুম্বা সর্বোত্তম। একটি শিশুর জন্মগত ভাবে তার পরিচয় প্রদান করার জন্য একটি নির্দিষ্ট নাম স্বরূপ আকিকা দেওয়া হয়ে থাকে। ছাগল দিয়ে আকিকার নিয়ম হচ্ছে যদি ছেলে সন্তান হয় তাহলে তার জন্য দুইটি পশু এবং যদি মেয়ে সন্তান হয় তার জন্য একটি পশু দিয়ে আকিকা করা যায়। একটি শিশুর জন্মের ০৭/১৪/২১ দিনের মধ্যে আকিকা দেওয়া নিয়ম।

তবে অনেকে গরু দিয়েও আকিকা দিয়ে থাকেন। তবে হাদিসে একটা উল্লেখ আছে যে, আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ ও সাহাবীগণ গরুর দিয়ে করে করেছেন। তবে হাদীসে গরু দিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ নেই। আর সেজন্য আকিকা করার জন্য ছাগল বেছে নেওয়ায় সর্বোত্তম।

শেষ কথা

ছাগল পালন একটি লাভজনক পশুপালন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খামারি মাধ্যমে ছাগল পালন করা হচ্ছে। আপনি যদি ছাগল পালন করতে চান তাহলে অবশ্যই কোন উদ্দেশ্যে ছাগল পালন করছেন সেটা নির্বাচন করুন। এবং সে যাতে ছাগল নির্বাচন করুন এর জন্য আপনি পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। ছাগল পাল সম্পর্কে এবং আরো অন্যান্য পশুপালন সম্পর্কে জানতে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url