অনলাইনে নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান - নামজারি খতিয়ান চেক

প্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয়ই অনলাইনে নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান এবং নামজারি খতিয়ান চেক করার নিয়ম জানতে চাচ্ছেন। কিন্তু ই-নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান এবং নামজারি খতিয়ান চেক কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে হয়তোবা কোন ধারণা নেই। ই-নামজারি সম্পর্কিত সকল বিষয়াদি সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অনলাইনে নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান
প্রিয় পাঠক, এছাড়াও নামজারি করতে কতদিন সময় লাগে, অনলাইনে নামজারির আবেদন করার নিয়ম, ই নামজারি করতে কি কি লাগে, নামজারি করতে কত টাকা লাগে ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন। সেজন্য আপনাকে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরন করত হবে।

পেজ সূচীপত্রঃ অনলাইনে নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান

দীর্ঘদিন পর সরকার রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন এবং অন্যান্য আইনের ক্ষমতাবলে ভূমি জরিপের মাধ্যমে জমির মূল মালিকানার স্বত্বলিপি অর্থ্যাৎ মৌজা ও খতিয়ান তৈরি করার নিয়ম চালু করেছে। ভূমি জরিপের সুবিধার্থে খতিয়ানে রেকডীয় মালিকের মৃত্যুতে উত্তরাধিকার সূত্রে, রেকডীয় মালিক 
ই-নামজারি
অথবা উত্তরাধিকারগনদের ক্রয়-বিক্রয়, বিভিন্নক্ষেত্রে হস্তান্তর সূত্রে জমির মালিকানা পরিবর্তনের ফলে উক্ত ভূমি মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি) নিকট ই-নামজারির আবেদন করতে হয়।

অনলাইনে নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান

ই-নামজারি আবেদনের প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর আপনি অনলাইনে নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন। আপনার নামজারি খতিয়ানে জমির পরিমান ও অন্যান্য তথ্য দেখার এবং বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার জন্য নামজারি খতিয়ানের প্রয়োজন হয়। তাই নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা অত্যান্ত জরুরি।
নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করা জন্য ভিজিট করুন ভূমি মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে। ভূমি মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাটে প্রবেশ করতে https://land.gov.bd/ এখানে ক্লিক করুন। 
ভূমি মন্ত্রনালয়ের হোমপেজ
উক্ত লিংকে প্রবেশ করার পর ভূমি মন্ত্রনালয়ের হোম পেজ প্রদর্শিত হবে। পেজের নিচের অংশে স্মার্ট ভূমি রেকর্ড ও মৌজা নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। আপনি ভূমি রেকর্ড ও মৌজা এই অংশে ক্লিক করুন। আপনি সরাসরি খতিয়ান অনুসন্ধানের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন। সরাসরি খতিয়ান অনুসন্ধানের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে https://eporcha.gov.bd/ এখানে ক্লিক করুন
উক্ত লিংকে প্রবেশ করার পর ই-পর্চার ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে। এখানে আপনার সামনে মূল মেনু প্রদর্শিত হবে। মূল মেনুতে নির্দেশিকা, সার্ভে খতিয়ান, নামজারি খতিয়ান, মৌজা ম্যাপ, আবেদনের অবস্থা এই অপশনগুলো প্রদর্শিত হবে। আপনি সেখান থেকে নামজারি খতিয়ানে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর একটু নিচে আপনার বিভাগ-জেলা-উপজেলা-খতিয়ানের ধরন-মৌজা-খতিয়ান নাম্বার পর্যায়ক্রমে নির্বাচন করতে হবে।
নামজারি খতিয়ান

মৌজা এবং খতিয়ান নাম্বার সঠিকভাবে প্রদান করুন। সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদানের পর খুজুন বাটনে ক্লিক করুন। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে নিচের ছকের মাধ্যমে পদ্ধতি গুলো দেখানো হলো।
নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান
উপরের ছকে লক্ষ করলে আপনি বুঝতে পারবেন কিভাবে আমি eporcha gov bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নামজারি খতিয়ান সিলেক্ট করে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, মৌজা, খতিয়ান নং দিয়ে খতিয়ান অনুসন্ধান করেছি।

দাগ নং ও মালিকের নাম দিয়ে খতিয়ান অনুসন্ধান
উপরের সকল পদ্ধতি অনুসরন করবেন এবং যেখানে খতিয়ান তালিকার ঘরে, খতিয়ান নং সহ একটু নিচে অধিকতর অনুসন্ধান নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে আপনার সামনে মালিকের নাম এবং দাগ নং দিয়ে খতিয়ান অনুসন্ধানের অপশনটি প্রদর্শিত হবে।
দাগ দিয়ে খতিয়ান অনুসন্ধান

আপনি মালিকের নাম দিয়ে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান তাহলে মালিকের নামের ঘরে মালিকের নাম সঠিকভাবে প্রদান করে খুজুন অপশনে ক্লিক করলে খতিয়ানটি দেখতে পাবেন। যদি আপনি দাগ নং দিয়ে খতিয়ার দেখতে চান তাহলে দাগ নং এর ঘরে দাগ নম্বর সঠিকভাবে প্রদান করে খতিয়ান দেখতে পাবেন।
আপনি চাইলে এ খতিয়ান ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে খতিয়ান উত্তোলনের নিদিষ্ঠ পরিমান ফি প্রদান করার মাধ্যমে খতিয়ানটি ডাউনলোড করে অনলাইন কপি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। খতিয়ান উঠানোর পর আপনি আপনার জমির অংশ, দাগ প্রভৃতি তথ্য চেক করে দেখতে পারবেন। নামজারি খতিয়ার ছাড়াও আপনি, আরএস, এসএ, বিএস, সার্ভে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।

খতিয়ান উত্তোলনের জন্য আবেদন করার নিয়ম
নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করার পর খতিয়ানের মালেকের নাম, দাগ, খতিয়ান নং দেখতে পাবেন। কিন্তু উক্ত খতিয়ান উত্তোলনের জন্য আপনাকে কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরন করতে হবে।

প্রথমে আপনি জমির মালিকের নামের উপর ডাবল ক্লিক করুন। এরপর বিস্তারিত এবং খতিয়ানের আবেদন নামে দুই অপশন দেখতে পাবেন। আপনি খতিয়ানের আবেদন অপশনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে দ্বিতীয় পেজে খতিয়ান আবেদন ফরম প্রদর্শিত হবে। প্রথম অংশে আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে হবে। তথ্য গুলো হল:
  • আপনার ভোটার আইডি নং ইংরেজিতে।
  • জন্ম তারিখ।
  • নাম (ভোটার আইডি অনুযায়ী) ইংরেজিতে।
  • মোবাইল নং।
  • যোগফল প্রদান করুন ঘরে যোগফল প্রদান করুন।
  • এরপর সবশেষে যাচাই বাটনে ক্লিক করুন।
খতিয়ানের আবেদন ০১ অংশ
দ্বিতীয় অংশে:
প্রথম অংশে সকল তথ্য সঠিক ভাবে প্রদান করার পর যাচাই বাটনে ক্লিক করলে তথ্য যাচাই সঠিক হয়েছে এরকম লিখা আসবে। এরপর আপনার ইমেইল এড্রেস, আপনার ঠিকানার ঘর সঠিক ভাবে পূরন করতে হবে। নিচে আপনি দেখতে পাবেন আবেদনের ধরন। আপনি কোন ধরনের খতিয়ান পেতে ইচ্ছুক সেটি নির্বাচন করতে হবে। সিলেক্ট করার সঙ্গে সঙ্গে পাশে সেবা প্রদানের তথ্যাদি সম্পর্কে কিছু তথ্য দেখতে পাবেন। যেমন

যদি আবেদনের ধরন: অনলাইন কপি পাওয়ার জন্য
  • খতিয়ান প্রদানের সময়সীম হবে তাতক্ষনিক।
  • খতিয়ানের আবেদিন ফি হবে ১০০ টাকা।
সার্টিফাইড কপি

যদি আবেদনের ধরন: সার্টিফাইড কপি পাওয়ার জন্য
  • প্রথমে আপনাকে সেবা প্রদানে মাধ্যম ডাকযোগে নির্বাচন করতে হবে।
  • সেবা প্রদানের স্থান দেশের বাহিরে, নাকি দেশের অভ্যান্তরে গ্রহন করবেন তার নির্বাচন করুন।
দেশের অভ্যান্তরে সেবা প্রদানের তথ্যাদি
  • খতিয়ান প্রদানের সময়সীম হবে ০৭ দিনে মধ্যে
  • খতিয়ানের আবেদিন ফি হবে ১০০ টাকা
  • পোস্ট ফির পরিমান ৪০ টাকা
  • সর্বমোট ১৪০ টাকা প্রদান করতে হবে।
সার্টিফাইড কপি
যদি দেশের বাহিরে সেবা প্রদানের তথ্যাদি
  • কোন থেকে আপনি খতিয়ান নিতে চান সেই দেশটি নির্বাচন করুন।
  • পোস্ট ফি নির্ভর করবে আপনি কোন দেশে খতিয়ানের কপি পেতে ইচ্ছুক তার উপর।
  • উদাহরন স্বরুপ ভারত থেকে নিতে চাইলে
  • খতিয়ান প্রদানের সময়সীম ০৭ দিন
  • খতিয়ান ফি ১০০ টাকা
  • পোষ্ট ফি ২৭১ টাকা
  • সর্বমোট ৩৭১ টাকা
  • ফি প্রদানে মাধ্যম
সার্টিফাইড কপি
আবেদন ফি আপনি মোবাইল ব্যাংকিং যেমন বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়, একপে ব্যবহার করে দিতে পারবেন।

নামজারি খতিয়ান চেক করার নিয়ম

নামজারি খতিয়ানের আবেদন করার পর নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে না পেলে নামজারি খতিয়ান চেক করার প্রয়োজন হয়। আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে ভিজিট করুন https://mutation.land.gov.bd। আপনি সরাসরি ইনামজারি খতিয়ানে অবস্থা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা

সর্বশেষ আবেদন অবস্থা এই অপশনে ক্লিক করুন। তারপর বিভাগ, আবেদনের আইডি নম্বর, ভোটার আইডি নম্বর এবং সর্বশেষ ক্যাপস টির যোগফল অবশ্যই ইংরেজিতে পূরন করবেন। তারপর খুজুন বাটনে ক্লিক করুন।
আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা

অনলাইনে নামজারির আবেদন করার নিয়ম

বর্তমানে নামজারির আবেদন অনলাইন সিস্টেমে হওয়ার কারনে যে কেউ ঘরে বসে নামজারির আবেদন করতে পারে। কিন্তু আবেদন ফরম পূরন নির্ভুলভাবে করতে না পারার কারনে অনেক সময় নামজারির আবেদন বাতিল হয়ে যায়। অনলাইনে আবেদন করবার সময় প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে নামজারির আবেদন সাবমিট করতে হবে।
আবেদন করার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি, আবেদন ফি সঠিকভাবে পরিশোধ করে আপনি সঠিকভাবে আবেদন করতে পারবেন। সঠিক ভাবে আবেদন করার জন্য নিম্নোক্ত নির্দেশিকা এবং পদ্ধতি অনুসরন করুন।
আপনি সর্বপ্রথম ই-নামজারির ওয়েবসাইট (https://mutation.land.gov.bd/application-request) এ প্রবেশ করুন। আপনি সরাসরি আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন

নামজারি আবেদনের কোর্ট ফি নম্বর ভেরিফাই
নামজারি আবেদন করার সময় সর্বপ্রথমে আপনাকে ২০ টাকা কোট ফি অনলাইনের মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। কোট প্রদান করার ০৭ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। অন্যথায় কোট ফি নম্বর পরবর্তীতে কোন কাজে আসবে না। যাহোক কোট ফি প্রদান করার সাথে সাথে আপনি একটি ভূমি নামজারি আবেদনের কোর্ট ফি নম্বর পাবেন। এরপর নামজারি আবেদনের কোর্ট ফি নম্বর এবং মোবাইল নম্বর প্রদান করে ভেরিফাই বাটনে ক্লিক করুন।
নামজারি আবেদনের কোর্ট ফি নম্বর ভেরিফাই
০১ জমির মালিকানা সূত্র
আপনি কোন সূত্রে জমির মালিকানা হচ্ছেন তা উল্লেখ করুন। ক্রয়, ওয়ারিশ, হেবা, ডিক্রি, নিলাম, বন্দোবস্ত, অধিগ্রহন, অন্যান্য এর মধ্য হতে আপনি যে সূত্রে জমির মালিক হবেন তা নির্বাচন করুন।
মালিকানা সূত্র
০২ ক্রেতা/বাদী/গ্রহীতার তথ্য
০২.০১. যিনি জমি ক্রয় করছেন/অন্য কোন সূত্রে জমির মালিক হিসেবে জমি খারিজ করেছন তিনি কি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির জন্য আবেদন করছেন।
০২.০২. নাকি প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানাধীন জমির জন্য আবেদন করছেন সেটি নির্বাচন করুন।
গ্রহিতার তথ্য
ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির জন্য আবেদন অপশনটি সিলেক্ট করলে আপনার সামনে আরো কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। ক্রেতার বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধে কিনা, ভোটার আইডি আছে কি না।
গ্রহিতার তথ্য
০৩.মৌজা নির্বাচন করুন
আপনি যে মৌজার জমি খারিজ করবেন তা নির্বাচন করুন।
প্রথমে বিভাগ-জেলা-উপজেলা-মৌজা নির্বাচন করুন।
মৌজা নির্বাচন
৪ আবেদন সংক্রান্ত ঘোষণা
৪.১. সর্বশেষ রকর্ডয়ের সময় এবং নামজারি করার সময় জমির মলিকানার কোন ধারাবাহিকতা আছে কিনা? হ্যা অথবা না উল্লেখ করুন।
৪.২. জমির দাবী ও হিস্যা দলিলমূলে ঠিক আছে কিনা? হ্যা অথবা না উল্লেখ করুন।

৪.৩. যে জমি খারিজ করছেন সে জমিরটি মালিকের দখলে আছে কিনা? হ্যা অথবা না  উল্লেখ করুন। যদি জমি দখলে না থাকে তাহলে না সিলেক্ট করুন এবং না সিলেক্ট করলে জমি দখলে না থাকার কারন ব্যাখ্যা করুন।

৪.৪. আংশিক অধিগ্রহণকৃত, আংশিক অর্পিত,আংশিক খাস আছে কিনা? হ্যা অথবা না উল্লেখ করুন। যদি আংশিক খাস বা অধিগ্রহকৃত বা, কারো কাজ হতে অর্পিত হলে তার কারন ব্যাখ্যা করুন।

৪.৫. যে জমি নামজারির আবেদন করছেন সে জমি কোন দেওয়ানী কেস বা মামলা রয়েছে কি না? মামলা না থাকলে কোন জামেলা নেই। আর যদি মামলা থাকে তাহলে হ্যা সিলেক্ট করুন। হ্যাঁ সিলেক্ট করার পর আরো কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। কেস নম্বর, কোর্টর নাম, মামলার সর্বশেষ অবস্থা এবং জমির তফসিল বর্ননা করতে হবে। জমি হস্তান্তরে কোন বাধা নিষেধ আছে কি না তা উল্লেখ করুন।
আবেদন সংক্রন্ত ঘোষনা
৪.৬. আবেদিত জমির কোন সরকারি মালিকানা আছে কি না? হ্যাঁ অথবা না সিলেক্ট করুন। যদি থাকে আরো কিছু অপশন প্রদর্শিত হবে। যেমন: খাস, পরিত্যক্ত, অর্পিত, বিনিময়, দেবত্তর, অধিগ্রহনকৃত, কোট অফ ওয়ার্ডস, ওয়াকফ, খাসমহল, সরকারি সংস্থা, অন্যান্য।

৪.৭. সর্বশেষ অর্থ বছরের ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করেছেন কি না? হাঁ অথবা না সিলেক্ট করুন।

৪.৮. জরিপের সর্বশেষ তথ্য প্রদান করুন। আরএস. এসএ,সিএস,বিএস, বিআরএস,পেটি দেয়ারা, খেবট, মহানগর, মিউনিসিপ্যালিটী, অন্যান্য যে কোন একটি সিলেক্ট করুন।

৪.৯ আবেদনকৃত জমির তফসিলের বর্ননা প্রদান করুন। জমি, এপার্টমেন্ট/ফ্লোর স্পেস যে কোন একটি সিলেক্ট করুন।

৪.১০ জমি গ্রহিতার উক্ত মৌজায় আর কোন খতিয়ান আছে কি না? হাঁ অথবা না উল্লেখ করুন।
আবেদন সংক্রন্ত ঘোষনা
সকল তথ্য আবার যাচাই করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
পরবর্তী বাটনে ক্লিক করলে আপনার প্রদানকৃত মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি কোড প্রেরন হবে। উক্ত ওটিপি কোড ৫.০০ মিনিটের মধ্যে প্রদান করতে হবে। ওটিপি প্রদান করে নিচে কিছু নিদের্শনা প্রদর্শিত হবে। নির্দেশনা ভালভাবে পড়ে নিয়ে বক্সে টিক চিহ্ন প্রদান করে যাচাই বাটনে ক্লিক করুন।
ওটিপি যাচাই
পরবর্তী ধাপে জাতীয় পরিচয় পত্রে সকল তথ্য সার্ভার যাচাই হলে সকল তথ্যের পাশে যাইচাইকৃত লেখা প্রদর্শন হবে। তারপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
যাচাইকৃত
০৫. আবেদন কৃত জমির তফসিল

যে জমিটি খারিজি করা হবে সেই জমির বিবরন প্রদান করুন। কোন ধরনের খতিয়ান নামজারি করছেন তা নির্বাচন করুন। খতিয়ানের ধরন: আর.এস, সিএস, বিআরএস ইত্যাদি।
  • খতিয়ান নং প্রদান করুন।
  • খতিয়ানের দাগ নং প্রদান করুন।
  • জমির পরিমান উল্লেখ করুন। যেমন: ১০ শতক হলে ০.১০০০ লিখুন।
  • দলিল নং এবং তারিখ উল্লেখ করুন।
  • জেলা এবং সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের নাম নির্বাচন করুন।
  • একাধিক খতিয়ান বা দলিলের জমি হলে আরো দলিল যুক্ত করুন এবং আরো খতিয়ান যুক্ত করুন অপশনে ক্লিক করে দলিল ও খতিয়ান যুক্ত করুন।
আবেদন কৃত জমির তফসিল
০৬. দাতার তথ্য প্রদান করুন
  • দাতা জীবিত না মৃত সেটা উল্লেখ করুন।
  • জীবিত হলে ভোটার আইডির সকল তথ্য প্রদান করুন।
  • মৃত হলে ওয়ারিশগনের জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী তথ্য প্রদান করুন।
দাতার তথ্য
দাতার তথ্য
০৭. গ্রহিতার তথ্য
গ্রহিতার তথ্য জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই অন্তে সকল তথ্য পূরন থাকবে। শুধু জেলা ও উপজেলা এবং আবেদন কারির একটি ছবি আপলোড করতে হবে।
গ্রহিতার তথ্য
০৮. প্রতিনিধির তথ্য
আবেদন কারী ১৮ বছরের কম হলে প্রতিনিধির তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক। ১৮ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয় পত্র হতে সকল তথ্য পূরন থাকবে। শুধু জেলা ও উপজেলা এবং ঠিকানার ঘরটি পূরন করতে হবে। সকল তথ্য সঠিক ভাবে প্রদান করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
প্রতিনিধির তথ্য
০৯. সংযুক্তি প্রদান করুন
  • মূল দলিলের স্ক্যান করা পিডিএফ (দলিলের নম্বরসহ) কপি আপলোড করুন।
  • খতিয়ানের স্ক্যান করা পিডিএফ (খতিয়ানের নম্বরসহ) কপি আপলোড করুন।
  • জমির নকশা চোহদ্দি আপলোড করুন।
  • এছাড়াও অন্যান্য আরো প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ডকুমেন্ট যদি থাকে স্ক্যান করে আপলোড করুন।
. সংযুক্তি প্রদান করুন
ডকুমন্টে আপলেঅড সম্পন্ন হলে নিচে একটি নির্দেশনা প্রদর্শিত হবে। সকল নির্দেশনা ভালভাবে পড়ে বক্সে টিক মার্ক দিয়ে আবেদন খসড়া করুন অথবা আবেদন দাখিল করুন বাটনে ক্লিক করুন। আপনার যদি আবেদন খসড়া করার প্রয়োজন না হয় তাহলে আবেদন দাখিল করে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন।
পেমেন্ট

নামজারি করতে কতদিন সময় লাগে

সাধারণত নামজারি আবেদন করার সর্বোচ্চ ২৮ দিনের মধ্যে নামজারি প্রক্রিয়াটি নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। সহকারী কমিশনার ভূমি আবেদন পর্যবেক্ষণ করার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন এবং অনুমোদন প্রেরণের পর ভূমি অফিসের অফিস সহকারী নামজারি অনলাইনে খতিয়ান তৈরি করবেন। খতিয়ান প্রস্তুত করা হলে ডিসিআর এর ফিস প্রদানের জন্য আপনার মোবাইলে একটি এসএমএস প্রেরণ করা হবে।
আপনি ভূমি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ই-নামজারি পেজে প্রবেশ করে  আবেদন ট্র্যাকিং অপশনে গিয়ে আবেদন আইডি নং, ভোটার আইডি নাম্বার এবং আবেদন নাম্বার প্রদান করে আবেদনটি মঞ্জুর হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে পারবেন। আবেদন মঞ্জুর হলে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ডিসিআর এর ১১০০ টাকা বিকাশ, নগদ, উপায়, ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড এ ছাড়া যে কোন অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেমে পরিশোধ করতে পারবেন।

এই টাকা পরিশোধ করে অনলাইন চালান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারবেন। সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে https://mutation.land.gov.bd/ এই লিংকে গিয়ে ট্র্যাকিং নাম্বার এবং ভোটার আইডি নাম্বার, মোবাইল নাম্বার প্রদান করে ডিসিআর কপি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের আইন অনুযায়ী এই ডিসিআর এর সমতুল্য এবং এটি আইনগতভাবে বৈধ এবং সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য এবং ব্যবহারযোগ্য হবে আপনাকে ভূমি অফিসে গিয়ে ডিসিআর সংগ্রহ করতে হবে না।

নামজারি করতে কত টাকা লাগে

প্রায় লোককে ভূমি অফিসে নামজারি আবেদন করার জন্য ঘুরপাক খেতে দেখা যায়। কেননা অনেকেই বেশি টাকা দিয়ে আবেদন মঞ্জুর করে নেয়। অনেকেই দিনের পর দিন ঘোরাঘুরি করার পরেও নামজারি করতে পারছে না। আবার অনেকেই নামজারীর সরকারি ফি সম্পর্কে জানেন না। এজন্য অনেক বেশি টাকা দিয়ে নামজারি করে থাকেন। নামজারি করার জন্য তিন ভাবে টাকা পেমেন্ট করতে হয়।

প্রথম ধাপে: নামধারীর আবেদন দাখিলের সময় ভূমি নামজারি আবেদনের কোর্ট ফি নম্বর পাওয়ার জন্য ২০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পেমেন্ট করতে হয়।

দ্বিতীয় ধাপ: নোটিশদের জন্য আবেদন দাখিলের পর ৫০ টাকা ফি প্রদান করার মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করতে হয়। টাকা প্রদানের পর পেমেন্ট রিসিভ বাটনে ক্লিক করে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। এছাড়াও আবেদন পত্রটি পিডিএফ কপি প্রিন্ট করে সংগ্রহ করতে পারবেন।

আপনি যদি অনলাইনে শুনানী করতে চান তাহলে পেমেন্ট করার পর্যায়ে এই প্রশ্নটি হা অথবা না নির্বাচন করবেন। অথবা http://oh.lams.gov.bd এই লিংকে প্রবেশ করে আপনি শুনানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ বিষয়ে জন্য সহকারী কমিশনার ভূমি অনলাইনে শুনানির জন্য আপনার মোবাইলে একটি লিংক প্রেরণ করবেন। শুনানির পূর্বে খসড়া খতিয়ানটি নাগরিক কর্নারে দেখতে পাবেন। খসড়া করতে কোন ভুল থাকলে অবশ্যই শুনানের সময় ভূমি সরকারি কমিশনার ভূমি কে জানাতে পারেন।

৩য় ধাপ: এরপর যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ডিসিআর জন্য ১১০০ টাকা পরিশোধ করলে অনলাইনে মাধ্যমে খারিজি খতিয়ান অর্থাৎ ডিসিআর খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। ডিসিআর টাকা প্রদান করার লিঙ্ক হচ্ছে https://mutation.land.gov.bd/। সরাসরি লিঙ্কে প্রবেশ করতে এখানে ক্লিক করুন

ই নামজারি করতে কি কি লাগে

নামজারির আবেদন করার আগে অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে। কেননা অনলাইনে আবেদন করার সময় ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে এবং কিছু ডকুমেন্ট স্ক্যান করে সার্ভারে আপলোড করতে হবে। ই-নামজারির আবেদন ফরম পূরণ করার জন্য যে সকল কাগজ প্রয়োজন হবে তা হল
  • দলিল নাম্বার এবং দলিলের তারিখ যদি দলিল সূত্রে মালিক হন তবে।
  • খতিয়ানে রেকর্ডীয় মালিকের এবং একাধিক মালিকানা হলে সকল মালিকগণের নিজের নাম, পিতার নাম/স্বামীর নাম এবং পূর্ণ ঠিকানা। এক কথায় বলা যায় জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • আবেদনকারীর মোবাইল নাম্বার।
  • আবেদনকারীর ইমেইল এড্রেস।
  • আবেদনকারী যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক হয় তাহলে জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি।
  • আবেদনকারী যদি কোন কোম্পানি অথবা কোন ফার্ম এর অধিদপ্তর এর নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধির নাম, প্রতিনিধির ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং ঠিকানা।
  • আবেকারি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আবেদন করলে প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান প্রধানের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, মোবাইল নাম্বার এবং পদবী
  • যদি কোন নাম কর্তন করে নামজারি আবেদন করেন তাহলে অবশ্যই প্রতিপক্ষ দ্বয়কে নোটিশ দিয়ে তাদের সকলের নাম ও পূর্ন ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বার প্রদান করতে হবে।
  • আবেদনকারী যদি নিজে না হয়ে অন্য কোন প্রতিনিধি মারফতে আবেদন করেন তাহলে উক্ত প্রতিনিধির ভোটার আইডির ফটোকপি, মোবাইল নাম্বার ,ইমেইল এড্রেস এবং আবেদনকারীর সাথে কি সম্পর্ক সেটা উল্লেখ করতে হবে।
  • নামজারিকৃত খতিয়ানের মালিক অর্থাৎ দাতা যদি মৃত হয় তাহলে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট এবং দাতা কোন প্রতিষ্ঠানের হলে প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধির ভোটার আইডি নাম্বার মোবাইল নাম্বার প্রদান করতে হবে।

নাম জারি আবেদন কি কি কাগজ লাগে

  • আবেদন পত্র পূরণ করার সময় আবেদনকারী নিজে না হলে প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদন করলে প্রতিনিধির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, নিজ নিজ স্বাক্ষর, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি অথবা জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি।
  • আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ডে ফটোকপি।
  • আবেদনকারী পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • খতিয়ানের ফটোকপি।
  • দলিল নাম্বার সহ দলিলের ফটোকপি।
  • দাতা মৃত হলে সকল ওয়ারিশ গণের আইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • ওয়ারেশান সনদ।
  • সর্বশেষ প্রদানকৃত খাজনার রশিদ।
  • আবেদনকারী যদি কোন প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন সনদ প্রতিষ্ঠান প্রদানের ভোটার আইডি নাম্বার প্রতিষ্ঠান প্রধানের ছবি প্রতিষ্ঠান প্রদানের স্বাক্ষর।

লেখকের মন্তব্য

অনলাইনে ই-নামজারি আবেদন ঘরে বসেই খুব সহজেই করতে পারবেন। কিন্তু সঠিকভাবে আবেদন করতে না পারলে আবেদন অবশ্যই নামঞ্জুর করা হবে। আপনি যদি সঠিকভাবে নামজারি আবেদন করতে চান তাহলে অবশ্যই অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিবেন এবং প্রতারক চক্রের থেকে দূরে থাকবেন। নামজারি ছাড়াও ভূমি সংক্রান্ত আরো অন্যান্য বিষয়ে জানতে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url