গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয় - গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার

আপনি নিশ্চয়ই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন। শরীরের বিভিন্ন অংশ ব্যাথা হওয়ার কারণে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয় বুঝতে পারছেন না। আপনি হয়তো বা এটাও বুঝতে পারছেন না যে গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার কি কি। তাই এ সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়
প্রিয় পাঠক, আপনি এই পোস্টটি সম্পন্ন পড়ার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিকসহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। যেমন গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম কি, গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা হয় কেন? গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঔষধ কি কি ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

ভূমিকা

আমাদের দেশে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় সম্মুখীন হননি  এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কেননা বিভিন্ন রকমের ভেজাল খাদ্যদ্রব্য, বদ অভ্যাস, অতিরিক্ত মধ্য পান, অতিরিক্ত রাত জাগা ইত্যাদি কারণে আমরা অনেকে এই গ্যাস্টিকের সমস্যায় ভুক্তভোগী। তাই গ্যাস্ট্রিক থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য যে সকল পদ্ধতি অবলম্বন করা প্রয়োজন সে বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।

বাঙালিরা আসলে একটু ভোজন রসিক মানুষ। তেল এবং মশলা জাতীয় খাবার অনেক সুস্বাদ্য হওয়ার কারণে আমরা অনেকেই এই খাবারগুলো পছন্দ করে থাকি। জিহ্বার স্বাধে আমরা প্রতিনিয়ত এই মুখরোচক খাবার গুলো খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা এটা জানি না যে এই খাবারগুলো খাওয়ার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিকের মতো মারাত্মক সমস্যা সম্মুখীন হতে পারে।

গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়

ছোট হোক কিংবা বড় তরুণ কিংবা তরুণী, কম বয়স অথবা বৃদ্ধ মোটকথা সকল বয়সের মানুষ একটি সাধারণ সমস্যা হল গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। সাধারণত খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল, ব্যস্ত ময় জীবনযাপন, অতিরিক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন ইত্যাদির কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাজের দিন দিন বেড়েই চলেছে। গ্যাস্ট্রিকের একটি অদ্ভুত সমস্যা হলো গ্যাস্টিকের ব্যথা কখনো কখনো এমন সব জায়গায় হয় যা কিছুতে বোঝা যায় না যে এই ব্যথাটা গ্যাস্টিকের জন্য উৎপত্তি হয়েছে বা গ্যাস্টিকের জন্য ব্যথা হচ্ছে।
সাধারণত যখন পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ অতিরিক্ত পরিমাণে বৃদ্ধি পায় তখনই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্টিকের সমস্যা হয়। এই সমস্যা থেকে আস্তে আস্তে পাকস্থলীতে ঘা সৃষ্টি হয়। যখন কোন ব্যক্তি বেশি মসলাযুক্ত খাবার গ্রহণ করে, অথবা অতিরিক্ত পরিমাণে ঝাল জাতীয় খাদ্য দ্রব্য গ্রহণ করেন, রাস্তার পাশে অথবা হোটেলে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খেলে এ ধরনের সমস্যা সম্মুখীন বেশি হতে লক্ষ্য করা যায়। 

খাবারগুলো পাকস্থলী থেকে হজম করার জন্য অধিক পরিমাণে এসিডের প্রয়োজন হয়। যার ফলে পাকস্থলীতে বেশি পরিমাণে হাইড্রোজেন নিঃসরিত হওয়ার কারণে ক্লোরিনের সঙ্গে মিশে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড সৃষ্টি করে। আর এ কারণে মূলত গ্যাস্টিকের সমস্যা সৃষ্টি হয়। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে যে সকল জায়গায় বেশি পরিমাণে ব্যথা অনুভূত হয় সে জায়গাগুলো হলো।
  • কখনো কখনো পেটের উপরে চিনচিন ব্যথা অনুভূত হয়।
  • অনেক সময় বুকের কাঠের ভেতর এবং বগলের নিচের কাঠির ভেতর খোঁচানোর মত ব্যথা অনুভব হয়। এই ব্যথা অত্যন্ত অস্বস্তির সৃষ্টি করে।
  • খাদ্য গ্রহণ করার পর কখনো কখনো পেটে ব্যথা অনেক পরিমাণে বেড়ে যায়।
  • অধিক সময় ধরে পেট খালি থাকলে বুকে এবং পিঠে ব্যথা হতে পারে।
  • কিছু কিছু সময় বুকের মাঝখানে গ্যাস্টিকের জন্য ব্যথা অনুভূত হয়।
  • গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা সবার জন্য একই রকম হয় না।
  • কারো কারো আবার অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে।
  • গ্যাস্ট্রিকের কারণে তলপেটে খোঁচানোর মত ব্যথা হয়।
  • কখনো কখনো মাজায় ব্যাথা হয় সেই সময় দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হয়।
  • অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি গ্যাস্ট্রিকের কারণে ঘাড়ে ও ব্যাথা হয়ে থাকে।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নতুন কোন সমস্যা নয় এটি একটি কমন সমস্যা যা যুগের পর যুগ ধরে মানুষ বয়ে বেড়াচ্ছে। একটু খাবারের সমস্যা হলে বা অতিরিক্ত পরিমাণে মসলা জাতীয় খাবার খেলে পেটের ভেতর অস্বস্তিকর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি হয়। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় সম্মুখীন হননি এরকম মানুষ , খুব কমই আছেন। ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষেরাই এ সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
গ্যাস্টিকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকেন। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধে প্রচুর পরিমাণে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা থেকে আস্তে আস্তে আরো মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। সে কারণে ওষুধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে কিছু খাবার নিয়ম মেনে খেলে এবং কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে গ্যাসটিক এবং বুকে জ্বালাপোড়া এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

আর্টিকেলের এ পর্যায়ে আমি আপনাদের গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ১৫ টি খাবারের তালিকা তুলে ধরলাম।

মৌরির পানি: মরি একটি খুবই উপকাররি ভেষজ উপাদান। এই উপাদানটি প্রতিদিন ভিজিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।

পুদিনা পাতা: ৫ থেকে 6 টি পুদিনা পাতা এক কাপ গরম পানিতে ফুটিয়ে পান করুন। এতে করে বমি বমি ভাব এবং পেট খোলা সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

সরিষা: প্রতিদিনের খাবারে সরিষা যোগ করতে পারেন। কেননা সরিষা পেটে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাই বিভিন্ন খাবারের সাথে সরিষা যোগ করে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে যাবে।

এলাচ: এলাস গুঁড়ো করে খেলে পেটে গ্যাস্টিকের সমস্যা সহ অন্যান্য আরো সমস্যা দূর হতে সাহায্য করে।

লবঙ্গ: লবঙ্গ খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সহায় হোক। তিন থেকে চারটি লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষতে থাকলে বুকের জ্বালাপোড়া, বমি বমি হওয়ার সমস্যা এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।

দারুচিনি: সাধারণত হজমের সমস্যা হলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায়। আর দারুচিনি খাবার হজম করতে বেশ স্বয়ং ভূমিকা পালন করে। তাই দারুচিনির গুঁড়ো পানিতে ফুটিয়ে দুই থেকে তিনবার খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।

আদা: আদা একটি অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি সমৃদ্ধ খাবার। যা কার্যকারিতা অত্যাধিক। তাই আদার রস পেটের গ্যাস সমস্যা দূর করে। আদার রস ছাড়াও আধা কুচি করে চিবিয়ে খেলে, কাঁচা আদা খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা সহ আরো অন্যান্য রোগের থেকে মুক্তি লাভ করা যায়।

জিরা: অতিরিক্ত পরিমাণে পায়খানা সমস্যা হলে, বমি হলে, পেটে অত্যাধিক পরিমাণে গ্যাস হলে জিরা খেতে পারেন। এছাড়াও জ্বর হলে বা অন্যান্য সমস্যা হলে জিরা দিনে তিনবার থেকে চার বার খেলে যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

কলা: কলা গ্যাস কমাতে খুবই উপকারী খাবার। কলা এমন একটি খাবার যাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। আর ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্য সহ অন্যান্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন নিয়মিত হারে দুই থেকে তিনটি কলা খেতে পারেন।

কমলা লেবু: কমলা লেবু রস গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করে থাকে। তাই গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি লাভের জন্য কমলা খেতে পারেন। আমরা সকলেই জানি যে ভিটামিন সুই-যুক্ত খাবার পাকস্থলীর অতিরিক্ত সোডিয়াম দূরীভূত করতে সাহায্য করে। যার কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম হয়ে থাকে

শসা: পেট ঠান্ডা থাকলে অটোমেটিক ভাবেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম হয়ে থাকে। আর সাথে রয়েছে সপ্ত নব্বই শতাংশ পানি। যা পেটকে ঠান্ডা রেখে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে দূরে রাখে।

পাকা পেঁপে: হজম শক্তি বাড়াতে পাকা পেঁপে একটি অন্যতম খাবার। পাকা পেঁপে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পরিষ্কারভাবে পায়খানা হতে সাহায্য করে। আর পেট পরিষ্কার হলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অটোমেটিক ভাবেই কমে যায়। তাই নিয়মিতভাবে পাকা পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলে প্রায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।

আমড়া: আমরা ভালোভাবে কেটে নিয়ে রোদে দিন। শুকনো আমরা চিবিয়ে খেলে বদহজম এবং গ্যাস্টিকের সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে।

টক দই: দই হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। দ্রুত হজম করতে দই খুবই উপকারী খাবার। খাবার দ্রুত হজম হলে অটোমেটিক ভাবেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে যায়।

দুধ: শরীরের জন্য খুবই উপকারী খাবার। ক্যালসিয়ামের অভাবসহ শরীরের অন্যান্য পুষ্টির অভাব দূর নিয়মিত হারে দুধ খেতে পারেন। তবে এসিডিটি দূর করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ঠান্ডা দুধ খেতে হবে।

গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম

গ্যাস্ট্রিক রোগ সম্পর্কে কাউকে নতুন করে কিছু বলার নেই। কেননা কম বেশি সবাই এই রোগে ভুক্তভোগী। বর্তমানে গ্যাস থেকে সমস্যা দিন দিন অত্যাধিক হারে বেড়ে চলেছে এর অন্যতম কারণ হলো ভেজাল খাবার এবং কীটনাশক জাতীয় খাবার এবং ফরমালিন জাতীয় খাবার। অনেকে গ্যাস্ট্রিককে সাধারণ সমস্যা বলে মনে করলেও এটি একটি খুবই মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে।
গ্যাস্ট্রিক থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে শুরু থেকে এর সমাধান করার জন্য ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করতে পারেন। আর ঘরোয়া টোটকা হিসেবে একটি অত্যন্ত উপকারী উপাদান হলো মেথি। অনেক রকমের গুণাবলী থাকার কারণে মে থেকে বিভিন্ন রোগের মহা ওষুধ বলা হয়। গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
  • প্রথমে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখুন।
  • ভিজিয়ে রাখার আট থেকে দশ মিনিট পর পান করুন। যদি খেতে অসুবিধা হয় তাহলে আপনি মেথির সাথে মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য যেমন মধু অথবা লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে মেথি ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ভেজানো মেথি খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর হবে।
  • আপনি চাইলে খাবারের সাথে মিশিয়ে মেথি খেতে পারেন। এতেও আপনার অনেক রকমের উপকার মিলবে।
মেথির গুণাবলী
  • মেথি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • মায়েদের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • মাথার চুল পড়ার সমস্যা দূর করে।
  • শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
  • শরীরের ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
  • শরীরে ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়।
  • শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমাতে মেথি সাহায্য করে।
  • যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে মেথি কিডনির সমস্যা দূর করে থাকে।
  • মেয়েদের পিরিয়ডের জন্য যে ব্যথা হয় মেথি খেলে এই ব্যথা দূর করে।
  • পেটের কৃমি দূর করতে সাহায্য করে।
  • বুকের জ্বালাপোড়া কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঔষধ

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে গেলে ঘরোয়া টোটকায় কাজ না হলে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষুধ সেবন করতে পারেন। তবে প্রথমে ঘরোয়া টোটকা অর্থাৎ প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করার পরে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করবেন। আমাদের দেশে গ্যাস্ট্রিকের জন্য অনেক রকমের ওষুধ রয়েছে। এর মধ্যে ভালো কার্যকরী ওষুধগুলো হল
  • সারজেল
  • ওমিপ্রাজল
  • রেনিটিডিন
  • ইসিম্রোপাজল
  • প্যানটোনিক্স
  • সেকলো
  • লোসেটিক ই্যত্যাদি।

গ্যাস্ট্রিক পেট ব্যাথা

অনিয়ন্ত্রিত খাবারের জন্য আমরা প্রায় সময় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে গ্যাস্ট্রিক পেট ব্যাথা ভুক্তভোগী। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে অল্পতেই অতিরিক্ত পরিমাণে অম্বলে চাপ দেয়। কখনো কখনো দুপুরে বেশি খাবার খেলে রাতে পায়খানা হয়। আর না হলে পেটে ব্যথা হয়ে থাকে। কাজে ব্যস্ততার কারণে কিংবা বন্ধুদের আড্ডায় বাইরে খাবার খেলে পেটের ব্যথা হয়ে থাকে।
অতিরিক্ত ক্ষুধা অনুগ্রহ হওয়ার পরও হয়তো বা কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে খাচ্ছেন না, আবার খেলেও পেটে ব্যথা হচ্ছে, আবার কখনো কখনো এরকমটা হচ্ছে যে খাবার যেন পেট থেকে খাবার গলায় এসে আটকে আছে। এসব সমস্যা হলে গ্যাস্টিকের রোগের চিকিৎসা নিতে হবে।

যেকোনো সাধারণ ব্যথা সাধারণত এক থেকে দুদিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য বমি হলে, পায়খানা পরিষ্কার হলে, সাধারণত এই ব্যথা সেরে যায়। কিন্তু পরবর্তীতে আবারো এই সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়।
যে সকল সমস্যা হলে আপনি বুঝবেন যে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়েছে
  • ঘনঘন ঢেকুর ওঠা
  • পেতে অতিরিক্ত পরিমাণে বদহজম হওয়া
  • পেট ভারী ভারী ভাব হয়ে থাকা
  • অতিরিক্ত পরিমাণে ক্ষুধা অনুভব হওয়ার পরও খেতে না পারা
  • পেটে প্রচুর পরিমাণে জ্বালাপোড়া হওয়া
  • খাওয়ার পরিমাণ পরে পেটে ব্যথা হয়
  • পেট খালি হলে ব্যথার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
মুক্তির উপায়
  • সময়ের খাবার সময় মতোই গ্রহণ করা।
  • ভাজা পোড়া জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকা।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা না করা।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো।
  • ধূমপান অথবা মধ্যপানের অভ্যাস থাকলে তার পরিত্যাগ করা।
  • ব্যথার  ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকা।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর না করলে যে সকল সমস্যা হতে পারে
  • কখনো কখনো রক্ত বমি হতে পারে
  • পায়খানার রং কালো হতে পারে
  • শরীরের রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে
  • ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
  • পাকস্থলি ফুলে যেতে পারে
  • পাকস্থলী ফুটো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
  • আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা

গ্যাস্ট্রিক ব্যাক পেইন হলো গ্যাস্ট্রিকের কারণে সৃষ্ট একটি ব্যথা যা মানুষের পিঠে অনুভূত হয়। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা জনিত কারণে এ ব্যথা হয়ে থাকে। এই রোগ থেকে অনেক অস্বস্তিকর ব্যথা অনুভূত হয়। কোন অংশে ব্যথা অনুভূত হওয়ার পর সেই ব্যথা গ্যাস্ট্রিকের কারণে হচ্ছে কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন বেশকিছু লক্ষণ অনুভব করার মাধ্যমে। গ্যাস্ট্রিকের কারণে পিঠে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা অনুভব হতে পারে। গ্যাস্ট্রিক ব্যাক পেইন লক্ষণগুলো হল।
  • খাবার খাওয়ার পর এই ব্যথা বেড়ে যায়।
  • কখনো কখনো খাবার খাওয়ার পর শুয়ে থাকলেও এই ব্যথা বাড়তে পারে।
  • বমি বমি ভাব হতে পারে কোন কখনো বমিও হয়।
  • অম্বল হয়ে থাকে।
  • বেলচিং হয়।
  • পিঠের ওপরে মাঝখানে ব্যথা অনুভব হয়।
  • দীর্ঘক্ষণ সময় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলে বা হাঁটাচলা করলেও মাজায় প্রচুর পরিমাণে ব্যথা অনুভব হয়।
মুক্তির উপায়
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য মানুষের জীবনযাত্রার স্থির হয়ে পড়ে কখনো কখনো অনেক ভোগান্তিরও শিকার হতে হয়। সে কারণে এই সমস্যা দূর করার উপায় জানা অত্যন্ত জরুরী। যে সকল পদ্ধতি অবলম্বন করে গ্যাস্ট্রিক পেইন ব্যথা দূর করতে পারবেন তা হল।
  • গ্যাস্ট্রিক জাতীয় খাবার না খাওয়া।
  • একবারে অতিরিক্ত পরিমাণে না খাওয়া।
  • অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাওয়া।
  • বেশি দুশ্চিন্তা না করা।
  • মসলা জাতীয় খাবার না খাওয়া।
  • অ্যালকোহল জাতীয় খাবার না খাওয়া।
  • ভিটামিন যুক্ত খাবার না খাওয়া।
  • ফাস্টফুড জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করা।
  • নিজের জিহ্বাকে কন্ট্রোল করা।
  • গ্যাস্ট্রিক ব্যাক পেইন থেকে মুক্তি লাভের জন্য মাথা মাথা উঁচু রাখা।
  • নিয়মিত ওষুধ সেবন করা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।

লেখকের মন্তব্য

আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি লাভের উপায় সম্পর্কে এবং গ্যাস্ট্রিকের কারণে কোথায় কোথায় ব্যাথা হয়। এছাড়াও আরো অন্যান্য গ্যাস্ট্রিকের অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি যদি কোন উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি সবার সাথে শেয়ার করুন।
কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন আর যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা জনিত সমস্যায় আপনি ভুক্তভোগী হন আর যদি কোন স্থায়ী সমাধান না পান তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদের জানান। শুধু গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নয় আরো অন্যান্য রোগ থেকে মুক্তি লাভের উপায় সম্পর্কে জানতে এই ওয়েবসাইটটি অবশ্যই নিয়মিত ভিজিট করুন। আজকের এই পোস্টটি এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url