কড়া গন্ডার হিসাব বাহির করার সূত্র

প্রিয় পাঠক, আপনি কি আপনার প্রাপ্ত সম্পত্তির অংশ বের করতে পারছেন না। কড়া গন্ডার হিসাব বাহির করার সূত্র সম্পর্কে জানেন না। কিভাবে জমির অংশ বের করার ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে হয়? এ সকল বিষয় আপনার মনে অনেক প্রশ্ন থাকলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কড়া গন্ডার হিসাব বাহির করার সূত্র
এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন আনা গন্ডা কড়া ক্রান্তি তিলের হিসাব সম্পর্কে এবং ১৬আনা সমান কত শতাংশ হয়, সম্পত্তি বন্টনের ইসলামিক নিয়ম, নিঃসন্তান ব্যক্তির সম্পত্তি কিভাবে ভাগ হয় ইত্যাদি বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

ভূমিকা

পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ বাটোরা করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায় যখন সম্পত্তির হিসাব নিকাশ বুঝতে না পারা যায়। তবে সম্পত্তির হিসাব রাখাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বেশিরভাগ সম্পত্তির খতিয়ান পুরাতন সময়ের ক্রান্তি আনা করা গন্ডা ইত্যাদি ফর্মুলায় লিখা হয়। যার জন্য প্রাপ্ত সম্পত্তির অংশ অর্থাৎ হিস্যা বের করা বেশ কঠিন হয়ে যায়। তাই এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদের কড়া গন্ডার হিসাব বাহির করার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা দেবো।

কড়া গন্ডার হিসাব বাহির করার সূত্র

কলাকোন্ডার ক্রান্তির হিসাব থেকে শতাংশ বের করার জন্য আপনাদের বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এর জন্য বিষেশ করে আপনাদের কড়া গন্ডা ক্রান্তির, আনা এগুলোর লেখার চিহ্ন সম্পর্কে জানতে হবে। কড়া গন্ডার হিসাব বাহির করার সূত্র বেশ কয়েকটি চিহ্ন রয়েছে। আপনি অনলাইনে সার্চ
করলে খুব সহজেই দেখতে পারবেন। চিহ্ন গুলো দেখার জন্য সার্চ করুন

উপরের লিংকে ডুকার পর ভালভাবে লক্ষ্য করলে আপনি এগুলো চিহ্ন সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাবেন বলে আশা করছি। একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন যে এক করা লেখার সময় একটি টান দুই করা লেখা সময় দুইটি টান তিন করা লেখার সময় তিনটি টান ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু চতুর্থ করায় এক লেখা হয়েছে তার কারণ হচ্ছে চার করা সমান এক গন্ডা হয় আর সে কারণেই এক লেখা হয়েছে।
একইভাবে ক্রান্তি লেখার সময় / , // , /// এভাবে না লিখে তৃতীয়বারে এক কড়া লিখা হয়েছে। তার কারন তিন ক্রান্তি সমান এক কড়া। এই হিসেবে বের করার জন্য এর একটি ধারাবাহিকতা রয়েছে। যেমন প্রথমে আনা-গন্ডা-কড়া-ক্রান্তি-তিল এভাবে পরপর লেখা হয়েছে। তার কারণ হচ্ছে যাতে করে আপনি একটি খতিয়ান দেখার সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারেন কিভাবে হিসাবটি লিখা হয়েছে।

কিছু কিছু খতিয়ানে এরকম ধারাবাহিকতা নাও থাকলে পারে। সেখোনে আবার ইলেক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আনা, গন্ডা, এগুলোর নিশা শতাংশরূপে কিভাবে বের করা যায় সে সম্পর্কে একটু ধারণা না যাক। এজন্য আপনাদের একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে আনা গন্ডা ক্রান্তি তিল এস এর মধ্যে সবার থেকে ছোট্ট হল তিল। আর সে কারণে আনাগণ্ডা ক্রান্তিকে তিলে রূপান্তরিত করতে হবে।

কিভাবে আনা গন্ডা কড়া ক্রান্তি থেকে শতাংশ বের করা যায় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো
কড়া গন্ডার হিসাব বাহির করার সূ
ওপরে চিত্রটি ভালোভাবে মুখস্ত করলেই খুব সহজেই করতে খতিয়ানের সম্পত্তির সাধারণ হিসাব বের করতে পারবেন।

কিভাবে একটি খতিয়ান হতে হিংসা শতাংশ বের করবেন চলুন তার একটি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা নেওয়া যাক।

মনে করুন একটি একটি খানে জমির পরিমাণ পঞ্চাশ শতাংশ এবং এর পঞ্চাশ শতাংশে আপনার অংশ রয়েছে পাঁচ আনা, ৫ গন্ডা, পাঁচ কড়া. পাঁচ ক্রান্তি, দশ তিল। কড়া গন্ডা থাকার কারণে আপনি হয়তো আপনার প্রাপ্ত সম্পত্তির হিসাব বুজতে পারছেন না। তাই এর সম্পর্কে আপনাকে সুস্পষ্ট ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব।
এর জন্য আপনাকে অবশ্যই সকল হিস্যা কে তিলে রূপান্তরিত করতে হবে। উপরের চিত্রে আগেই উল্লেখ করা ছিল এক আনা সমান ৪৮০০ তিল। তাহলে ৫ আনা সমান সমান ...তিল। এক ঘন্টা সমান ২৪০ দিন তাহলে ৫ ঘন্টা সমান সমান.....তিল। দুই কড়া সমান ১২০ তিল। তাহলে মোট তিলের পরিমান.......এবার আপনার কাজ মোট সম্পত্তিকে ৭৬০০০ দ্বারা ভাগ দেওয়া। এর পর প্রাপ্ত ফলাফলকে আপনার খতিয়ানের প্রাপ্ত তিল দ্বারা গুন করলেই আপনার জমির শতাংশ বের হবে।

জমির অংশ বের করার ক্যালকুলেটর

বর্তমান জমির খতিয়ানে প্রাচীন যে নিয়মাবলী দ্বারা জমি অংশ ভাগ করা আছে সে জমিগুলোকে সহজ ভাবে বন্টন করার জন্য এবং খতিয়ানের হিসাব বুঝতে পারার জন্য জমির অংশ বের করার ক্যালকুলেটর নামে একটি সফটওয়্যার গুগলে প্লে স্টোরে পাওয়া যায়। যেখান থেকে এই সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে খুব সহজেই আপনার জমির অংশ বের করতে পারবেন।

পূর্বে জমি বের করার জন্য খাতা কলম দিয়ে লিখে তারপর যোগ বিয়োগ করে বের করতে হতো। বর্তমান যুগের লোকজনেরা আগেকার সময়কার ওই লেখাগুলো বুঝতে পারেনা। এই লেখাগুলো না বুঝার কারণে সম্পত্তির সঠিক অংশ বের করতে পারেনা। যার জন্য অনেক হয়রানি এবং দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। আর যদি আপনি জমির অংশ বের করার ক্যালকুলেটরটি ব্যবহার করেন তাহলে খুব সহজেই জমির সঠিক অংশ বের করতে সক্ষম হবেন।

আনা গন্ডা কড়া ক্রান্তি তিলের হিসাব

বর্তমান যুগে আমরা দশমিক ব্যবহারে অভ্যস্ত। কিন্তু প্রাচীনকালে এই দশমিকের পরিবর্তে আনা গন্ডা করা ক্রান্তি এসব ব্যবহার করা হতো। তাই পুরনো খতিয়ানের এবং জমির দলিলের জমির অগ্র সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্য এ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যক।

আনা গন্ডা কড়া ক্রান্তি তিলের হিসাব

আনা গন্ডা কড়া ক্রান্তি তিলের হিসাব ক্যালকুলেটর

আমাদের দেশের প্রাচীনকালের তৈরি করা এগুলো হচ্ছে সিএস এবং এস এ খতিয়ান। এই খতিয়ান গুলোতে একাধিক জমির মালিকের নাম থাকে। একাধিক মালিকের একজনার মোট জমির পরিমাণ কত টুকু অংশ আছে তা আনা গন্ডা করা ক্রান্তি এবং তিল এই চিহ্নগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে বোঝানো হয়ে থাকে

বর্তমান সময়ে আমরা খতিয়ানে সংখ্যা ব্যবহার করা হয় যেমন ধরুন: ১.০০, ১.০০০০ । কিন্তু সিএস এবং অত্র স্বত্যের বিবরণ এবং দখলদার এর ঘরে জমির মালিকের নাম এবং তার ডান পাশে অংশগ্রহণ রয়েছে সেখানে ওই ব্যক্তির মোট জমির পরিমাণ দশমিকের বদলে আনা, গন্ডা, কড়া, তিলে চিহ্ন দ্বারা বোঝানো হয়। তাই এই সম্পত্তির সঠিক অংশ বুঝে নেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে চিহ্ন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।

১৬ আনা সমান কত শতাংশ এটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। কেননা ষোলআনা বলতে উক্ত খতিয়ানের সমস্ত সম্পর্ক থেকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ একটি খতিয়ানে যদি সর্বমোট ৭০ শতাংশ জমি থাকে তাহলে ৭০ শতাংশ জমিকেই ষোল আনা সম্পত্তি বলা হয়। ১৬ আনা সম্পত্তি খতিয়ানের নামভুক্ত মালিকের অংশ মোতাবেক ভাগ হয়ে থাকে।

শেষ কথা

আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে অনেক ভোগান্তি এমনকি মারামারি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে লেখকের পরামর্শ হলো বর্তমান যুগে সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা এবং সঠিক অংশ বুঝে নেওয়ার অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতি গুলো আপনি নিজে বুঝতে না পারলে অবশ্যই জানাশোনা কারো থেকে ভালোভাবে বুঝে নেবেন। প্রয়োজনে স্থানীয় ভূমি অফিসে থেকে প্রয়োজনে পরামর্শ নিতে পারেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url