মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো - মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা

প্রিয় পাঠক, আমি আপনাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করব। আপনি যদি মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকারক দিক এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জানতে হবে।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো
সম্মানিত পাঠক, এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো যে বিষয় জানতে পারবেন তা হল মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় কি, ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে। সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অবশ্যই এ প্রশ্নের সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পেজসূচী পত্রঃ মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো

বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় লোকেই মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন। তরুণ তরুণীরা মোবাইল ফোন ব্যবহারে অনেক বেশি আসক্ত। বর্তমান সমাজে এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে যে মোবাইল ফোন ছাড়া কোন ব্যক্তি এক মুহূর্ত চলতে পারে না। কিন্তু মোবাইল ফোন ব্যবহার বেশ কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। তাই মোবাইল ফোন ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই সেই ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে জানা দরকার।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো

মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো

বর্তমান সমাজে অতিরিক্ত পরিমাণে মোবাইল ফোন ব্যবহার সবার কাছে একটি প্রচলিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনারা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তিনারা সবাই মোবাইল ফোনের সুবিধা অনেক বেশি ভোগ করে থাকেন। কিন্তু আপনারা এটা জানেন না যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে একজন মানুষের শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে ধাবিত হচ্ছে।
যদিও মোবাইল ফোনের ব্যবহারে অ্যাডভান্টেজ সুবিধা অনেক বেশি কিন্তু বর্তমান সমাজে প্রায় লোকেরাই মোবাইল ফোন ব্যবহারের পজিটিভ দিকগুলো ব্যবহার না করে নেগেটিভ দিকের প্রতি অনেক বেশি ধাবিত হয়ে থাকে। যার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা অনেক ক্ষতি সম্মুখীন হয়ে থাকেন কিন্তু সেটা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী নিজেও বুঝতে পারেন না। তাই আমি আপনাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করব।

শারীরিক সমস্যা
দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে মানুষের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। যদিও এই সমস্যা একদিনে হয় না। দীর্ঘদিন দীর্ঘ সময় ধরে যদি কোন ব্যক্তি মোবাইল ব্যবহার করে তাহলে এই সমস্যাগুলো বেশি হয়ে থাকে। আর এই সমস্যার সম্মুখীন বেশি হয়ে থাকে বর্তমান সমাজের তরুণ তরুণীরা। দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে যে সকল শারীরিক সমস্যা হয় তা হলোঃ

চোখের সমস্যাঃ শুধু মোবাইল নিয়ে নয় যেকোনো ধরনের ইলেকট্রন ডিভাইস যদি একটানা ২ থেকে ৩ ঘন্টা বা তার বেশি সময় উক্ত ডিভাইসের স্কিনে তাকিয়ে থাকলে অটোমেটিক ভাবে চোখে জ্বালাপোড়া হতে পারে। কখনো কখনো চোখ দিয়ে পানিও বের হতে লক্ষ্য করা যায়। ইলেকট্রিক ডিভাইসের বা মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে হতে এক ধরনের ঘামা রোশনি নিঃসরিত হয় যার থেকে মানুষের চোখ জ্বালাপোড়া এবং কোন কোন ক্ষেত্রে চোখের দৃষ্টি কমে যায়, চোখে ঝাপসা দেখা দেয়।

ঘাড় ব্যাথা করাঃ কখনো কখনো মোবাইল মানুষকে এতটাই আসক্ত করে যে অনেক সময় কোন দিকে খেয়াল না করে একটানা মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকে। এতটাই আসক্ত হয় যে ঘাড়ের একটু নড়াচড়া করানোর যে প্রয়োজন বোধ হয়েছে সেটাও ভুলে যাই। আর সেজন্য অধিক সময় ধরে একনাগারে মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে ঘাড়ে ব্যথা অনুভব হয়।

কানের সমস্যাঃ মোবাইল ফোন ব্যবহারের আরো একটি ক্ষতিকারক দিক হলো কানের সমস্যা। যেহেতু বাংলাদেশের মানুষ অনেক বিনোদন প্রিয়, সে কারণে সবাই গান-বাজনা, নাটক, গজল, সিনেমা ইত্যাদি দেখতে অনেক পছন্দ করে থাকে। আর এইসব দেখার জন্য এবং শোনার জন্য অনেকে আবার কানে হেডফোন ব্যবহার করে থাকেন।

অনেকে আবার কানে হেডফোন দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলে গেমস খেলে সময় কাটিয়ে থাকে। অধিক সময় ধরে হেডফোন ব্যবহার করার কারণে কানের অনেক বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

মাথা ব্যাথা অনুভব করাঃ একনাগাড়ে কোন কাজে মানুষের জন্য সুফল বয়ে নিয়ে আসে না। দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইলে মুভি দেখলে বা কথা বললে মাথার ব্যথা হতে পারে। কি সমস্যা মূলত তখনই বেশি হয় যখন কোন মানুষ এক ধ্যানে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে মুভি সিনেমা বা গেম খেললে।

চোখে ঝাপসা দেখাঃ অধিক সময় ধরে মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে ঝাপসা লেগে যায়। যা মোবাইল ব্যবহারকারী নিজেও বুঝতে পারে না। দীর্ঘক্ষণ সময় মোবাইলে তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎ করে চোখে পানি চলে আসে এবং চোখে ঘসা দিলে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।

অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ অনুভব করাঃ দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার মাধ্যমে শরীর আস্তে আস্তে হয়ে পড়ে যার ফলে শরীর অনেকটাই ক্লান্ত অনুভব হয়। কিছু কিছু সময় অনেক মানুষের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। যার জন্য সংসারের কোন কাজের মন বসে না। অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহারের নেশায় মানুষের শরীল নিস্তেজ হয়ে পড়ে যার ফলে শরীর অনেকটাই ক্লান্ত অনুভব হয়।

ঘুমের সমস্যাঃ বর্তমান তরুণ তরুণীদের একটি বদ অভ্যাস হলো রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার করা। অতিরিক্ত রাত জাগার কারণে ঘুমের সমস্যা হয়। আর ঘুমের সমস্যা হলে মানুষের স্মৃতিশক্তি শারীরিক শক্তি, মানসিক বিকাশ সবকিছুতে বাধা আসে। যে কোন মানুষের শারীরিক মানসিক গঠন ঠিক রাখার জন্য সঠিক মতই ঘুম অত্যন্ত জরুরী।

মানসিক সমস্যা
মোবাইলে প্রতি আসক্ত হওয়ার পড়ার কারণে মানুষের মানসিক সমস্যা ও দেখা দেয়। এ সময় মানুষ কোন কাজে মন না দিয়ে শুধু মোবাইলে সময় দিয়ে থাকে। যার জন্য মানুষের মানুষের মানসিকতার বিকাশ নেগেটির দিকে ধাবিত হয়। এর ফলে মানুষের মানসিক শক্তি অনেকটাই লোভ পায়। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে যে ধরনের মানুষের সমস্যা হতে পারে তা হলোঃ

একাকীত্ব বোধঃ মানুষ যখন দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তখন সাধারণত সে একাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং ইন্টারনেট জগতে ঘোরাঘুরি করে। যার কারণে ঔ ব্যক্তিটি সমাজের বিচ্ছিন্ন অবস্থায় এবং একাকীত্ববোধ তাকে গ্রাস করে ফেলে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার পারফর্মে অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে নিজের তুলনা করতে গিয়ে আবেগপ্রবণতা অনেক সময় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একাকীত্ব বোধের এই সমস্যা অনেক তরুণ এবং তরুণীকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে হয়েছে।

মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়াঃ মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মানুষ অনেক সময় খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো না করার কারণে শরীর অনেকটাই দুর্বল হয় হয়ে যায়। যার জন্য মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় কোন ব্যক্তি কোন কথা বললে অল্প সময়ের মধ্যে রেগে যায়।

চিন্তা শক্তি কমে যাওয়াঃ চিন্তাশক্তি কমে যাওয়া অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিকারক। মোবাইল ফোনে আসক্ত হওয়ার ফলে ওই ব্যক্তিটি জীবন জগত এবং নিজের কাজ করা সত্যি বা কোন কিছু চিন্তা করা শক্তি কমে যায়।

স্মৃতিশক্তি লোভ পাওয়াঃ ব্যবহারের আরো একটি ক্ষতিকারক দিক হলো এই ডিভাইসটি মানুষের স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়। যার কারণে সে পড়াশোনা বা অন্যান্য বিষয় মাথায় রাখতে পারেনা। কোন কাজ করার বা প্রোগ্রাম থাকলেও সে হঠাৎ করে মন থেকে মুছে যায়।

আসক্তি এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণহীনতাঃ মানুষ কখনো কখনো মোবাইলে প্রতি এতটাই আসক্ত হয় যে মোবাইল কোন ব্যতীত কোন কাহিনী অর্থাৎ ব্যর্থ প্রেমের গল্প নাটক সিনেমা দেখার সময় নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আর এর প্রভাব বাস্তব জীবনের উপর এসে পড়ে।

জীবাণুর আক্রমণঃ মোবাইল ফোনের ডিভাইসে থেকে যে ক্ষতিকারক রশ্মি নিঃসরিত হয়। তাতে বিভিন্ন রকমের জীবাণু থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা ফলে এই জীবাণু মানুষের চোখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে এবং চোখের বড় ধরনের ক্ষতি করে ফেলে।

চোখের জ্যোতি কমে যাওয়াঃ আপনারা ইতিমধ্যে অবগত হয়েছেন যে মোবাইল ফোনের পিনের যে আলো চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল দেখে তাকিয়ে থাকলে চোখের জ্যোতি অটোমেটিক ভাবেই কমতে থাকে। ,

পর্নো আসক্তিঃ বর্তমান সমাজের মানুষেরা কোন বস্তু নিয়ে নেগেটিভ চিন্তাভাবনা থেকে দূরে না থেকে বেশি আসক্ত হয়ে পড়ে। এর অন্যতম হলো মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোনের অনেক পজেটিভ দিক থাকলেও বর্তমান সমাজের তরুণীরা নেগেটিভ দিককে অনেক বেশি পছন্দ করে। আর সেজন্যই ধাবিত হয় ফর্ম মুভি দিকে। যা শারীরিক এবং মানসিক ভাবে বিশেষ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

শ্রবণ শক্তি কমে যাওয়াঃ দীর্ঘ সময় ধরে কানে হেডফোন দিয়ে গান বা নাটক সিনেমা দেখলে কানের শ্রবণ শক্তি অনেকটাই কমে যায়।

এছাড়াও আরো অনেক মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো হলঃ
  • সম্পর্কের উপর নেগেটিভ প্রভাব পড়া।
  • মূল্যবান সময় অপচয়
  • আর্থিক সংকট পড়া
  • কাজ ও পড়ালেখায় অমনোযোগী
  • স্বাস্থ্যের ব্যাপক অবনতি

মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়

বর্তমান সময়ে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা অর্থাৎ মোবাইল হাতে থাকা একটি বাধ্যতামূলক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার এর পরিণতি যে কত খারাপ হতে পারে এ বিষয়ে আপনারা অনেকেই অবগত নন। মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাত্রা অত্যাধিক হলে একজন মানুষের মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
মোবাইলের সিমের আলো চোখের উপর একটি বিরূপ প্রভাব ফেলে যা মানুষের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হয়। অনেকের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে কেউ কেউ মানসিক শক্তি। মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতি করার দিক থেকে বাঁচার উপায় অর্থাৎ মোবাইল ফোনের ক্ষতিকারক রোশনি থেকে তোকে রক্ষা করার জন্য আমাদের যে সকল উপায় অবলম্বন করতে হবে সে বিষয়ে কিছু টিপস আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।

তাহলে জেনে নেওয়া যাক মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ টিপ সম্পর্কে।

ডার্ক মোড অন করে রাখা
আপনার মোবাইল ফোনে অবশ্যই ডার্ক মোড অন করে রাখবেন। বর্তমানে প্রত্যেকটি এন্ড্রয়েড ফোনে এই ডার্কমড অপশনটি রয়েছে। এছাড়াও রাতের বেলায় মোবাইল ব্যবহার করার জন্য বেশিরভাগ android ফোনে আপনি নাইট মোড অপশনটি অন করে রাখলে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের রং একটু পর পর পরিবর্তন হয়ে যায়।

যার ফলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সময় মোবাইল থেকে বের হওয়া নীল রস্মি কমে যায়। বর্তমানে অনেক বিশেষজ্ঞরা মোবাইল ফোন ব্যবহারের জন্য চোখের ভালোর জন্য দারুন ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

মোবাইলের ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা
মোবাইল ফোনের ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা পরিমাণ অর্থাৎ ব্রাইটনেস যদি অনেক বেশি পরিমাণে দিয়ে থাকেন তাহলে এটি চোখের জন্য অনেক ক্ষতির সৃষ্টি করে। সে কারণে আপনি আপনার মোবাইল ফোনের ব্রাইটনেস অটোমেটিক করে রাখুন। তাহলে আশেপাশের আলোর সাথে সামঞ্জস্য করে উজ্জ্বলতা নির্ধারণ হবে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় কিছুক্ষণ পরপর চোখের পাতা বন্ধ করুন।

সময় নির্ধারণ
সময়ের নির্ধারণ সম্পর্কে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে কতটুক সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের জন্য কোন ক্ষতি হবে না। এ প্রশ্নের উত্তরে অনেক গবেষকরা গবেষণা করার মাধ্যমে তারা এ মতবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, প্রতিদিন আপনারা এক থেকে দেড় ঘন্টা আর যদি অত্যাধিক প্রয়োজন হয় তাহলে ২ ঘন্টা পর্যন্ত মোবাইল ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।

নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা
আমরা সচরাচর প্রয়োজনে আবার কেউ কেউ অপ্রয়োজনীয় মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন যার জন্য আমরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকি অনেকে আবার চোখের সামনে সামনে নিয়ে এসে মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন। তাই নির্দিষ্ট একটি দূরত্ব বজায় রেখে মোবাইল ফোন ব্যবহার করুন।

হেডফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকা
বর্তমান সমাজের তরুণ তরুণীদের প্রয়োজনীয় এবং অপ্রয়োজনে হেডফোন ব্যবহার করতে লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ দীর্ঘ সময় ধরে হেডফোন ব্যবহার করে নাটক অথবা সিনেমা অথবা মোবাইলে কথাবার্তা বলে থাকেন। যার জন্য আপনি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে। তাই হেডফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। আর যদি হেডফোন ব্যবহার করা অতটুক জরুরী হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ভালো মানের হেডফোন ব্যবহার করুন।

খেলাধুলা মূলক বিনোদনে অংশগ্রহণ
বর্তমান সমাজে প্রায় ছেলেমেয়েদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যাবতীয় বিনোদন নিয়ে থাকেন। কিন্তু মাঠে গিয়ে খেলাধুলার অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে এই বিনোদন নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। কেননা খেলাধুলা অংশগ্রহণ করলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং ওই সময়টাকে মোবাইল থেকে নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব হয়।

নিজের ধর্ম পালনে সচেষ্ট হন
এটি একটি অদ্ভুত পয়েন্ট। কেননা ধর্ম পালনের সাথে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতির থেকে বাঁচার উপায় কি করে হতে পারে। হ্যাঁ, অবশ্যই হতে পারে কেননা আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে বুঝতে পারবেন বর্তমান তরুণ তরুণীদের শরীর এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা অনেকটাই খারাপ। তার অন্যতম কারণ হলো বর্তমান তরুণ তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষই ওয়েস্টার্ন ফরম মুভি দেখে থাকেন।

এটা একটা নেশা। তাই এই নেশা থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য অবশ্যই আপনাকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে হবে। কেননা ধর্মের বাধ্যবাধকতা মানুষকে সকল খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখে।

শিশুদের মোবাইল ফোন হতে দূরে রাখা
বর্তমান সমাজের বাবা মারা তার শিশুদেরকে বিনোদনের জন্য মোবাইল ফোন হাতে তুলে দেন। অনেকে আবার বাচ্চার কান্নাকাটি দূর করার জন্য তাদের সামনে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন রকমের ভিডিও উপস্থাপন করে থাকেন। কিন্তু আপনি জানেন না ওই বাচ্চাটি আস্তে আস্তে আপনার মাধ্যমে মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ে। তাই বাচ্চাদেরকে অবশ্যই মোবাইল ফোন থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখবেন।

ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা

বর্তমান যুব সমাজ ধ্বংসের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা । সব কিছুরই ভালো এবং খারাপ দুটি দিক থাকে । আমরা ভালোর দিকে না গিয়ে বেশিরভাগ সময় খারাপটাই বেছে নিই। বর্তমান বিশ্বে ছোট বড় সকলেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে এর যেমন ভালো দিক আছে তেমন খারাপ দিক আছে উপকারের পাশাপাশি অপকারিতাও আছে ।

বিশেষ করে আপনারা যারা ছাত্র তাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন একটু বেশিই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহার কোন সময় বাধ্যতামূলক করা হয়নি বলে আমি মনে করি । কারণ কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আপনার জীবন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে তাই এই মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপকারিতা জেনে এগুলো থেকে দূরে থাকবেন ।
অবশ্যই ছাত্র জীবনে মোবাইলের দরকার আছে কিন্তু একেবারে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হওয়া যাবে না। কেননা ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন লাগে শুধুমাত্র অনলাইন ক্লাসের জন্য অথবা ইবুকে বই পড়ার জন্য কিন্তু আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়াসহ অনলাইনে বেশি সময় দেন তাহলে সেটা আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে যাবে । আবার অনেক সময় লক্ষ্য করা যায় মোবাইলে প্রচুর পরিমাণ গেম খেলে এবং

গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে যায় এই দিক টা খুবই খারাপ। কেননা এইগুলাতে বেশি সময় দিলে লেখা পড়ায় মন বসবে না পরবর্তীতে দেখা যাবে লেখাপড়া থেকে আপনি দূরে চলে যাবেন সুতরাং অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। আপনি যে সময় মোবাইলে দিবেন ওই সময়টুকু যদি আপনি পড়ালেখা না করেও বাস্তব জীবনে অন্য কোন ক্ষেত্রে কাজে লাগান তাহলে জীবনকে আরো ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন ।

মোবাইল আমাদের জন্য যতটা ভালো ততটাই খারাপ । আমি মোবাইলে গেম না খেলে চাইলেই বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করতে পারেন এতে করে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে।

মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে লেখাপড়ার উপর যে যে কুপ্রভাব পড়বে তা হলো:

ছাত্র জীবনে আমাদের সকলের একটায় কাজ সেটা হলো লেখা পড়া করা । তাই মোবাইলে চিন্তা বেশি না করে লেখাপড়ায় মন দেওয়া । আপনি যদি লেখাপড়ায় মন না দিতে পারেন তাহলে আপনার ভবিষ্যৎ খুবই খারাপ। কেউ চায় না যে তার ভবিষ্যৎ খারাপ হোক। আপনি যদি অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তাহলে কখনোই পড়াশোনায় মনোযোগ আসবেনা।

আর যদি পড়াশোনায় মনোযোগ না পড়াশোনা থেকে ছিটকে গেলে আপনি আর কখনো সেই আগের জায়গায় ফিরে আসতে পারবেন না। মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত সময় দেওয়া কারণে আপনি যে পড়াটা পড়েন তা আপনার মনে থাকে না। আবার আপনি যদি জেগে পড়াশোনা না করে পর্নোগ্রাফি দেখেন তাহলে শুধু আপনার জীবন নয় যৌবনও নষ্ট হয়ে যাবে।
মোবাইল ফোনে অনেকগুলো গেম আছে যেগুলো একবার খেলেই বারবার খেলতে মন চাই, দেখা যায় এরকম খেলতে খেলতে একসময় আসক্ত হয়ে পড়ে। তখন সে বাস্তব জীবনে বন্ধু-বান্ধবের সাথে সময় দিতে পারে না বাস্তবে কোন খেলাধুলা করতে পারে না। শুধু এইগুলা ছাড়াও যারা আমার ছোটো ভাই হাসানের মতো অনলাইন রিলেশনশিপে আছেন তাদের ভবিষ্যৎও অন্ধকার।

কেননা এতে করে মোবাইলে প্রচুর পরিমাণে সময় ব্যয় হয়। তাহলে আপনি কি ভেবে দেখেছেন আপনার ভবিষ্যৎ কি হতে পারে । এগুলা থেকে যদি আপনি বেরিয়ে না আসতে পারেন তাহলে এক সময় দেখা যাবে আপনিও হয়ে গেছেন কিশোরগ্যাংয়ের সদস্য। সমাজের অপকর্মে লিপ্ত হবেন । মোবাইলকে নয় নিজেকে সময় দিন বদলে যাবে আপনার জীবন।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের ভালো দিকগুলো

বর্তমান যুগে যোগাযোগের একমাত্র অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো মোবাইল ফোন। বর্তমান বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এই মোবাইল ফোন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ডিজিটাল এই যুগে সকল ক্ষেত্রে আমরা প্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। আমরা চাইলেই মোবাইল ফোনকে ভালো কাজে লাগাতে পারি । আর বর্তমান সময়ে শতকরা ৯৮% মানুষই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।

এর মধ্যে অনেক লোক আছে যারা মোবাইল ফোনের খারাপ দিকগুলো ব্যবহার করে থাকে কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই মোবাইল ফোনের ভালো দিকগুলো ব্যবহার করে থাকে । আমরা মূলত বিশেষ করে যেই ভালো দিক গুলো ব্যবহার করি তা উল্লেখ করা হলোঃ

যোগাযোগ মাধ্যমে মোবাইল ফোনঃ এখন থেকে বিগত কয়েকবছর বছর আগে লক্ষ্য করলে দেখা যায় সেই সময় যোগাযোগ মাধ্যম খুব ভালো ছিল না । এই মোবাইল ফোন আসার মাধ্যমে যোগাযোগ মাধ্যমের যে পরিমাণ উন্নতি হয়েছে তা দেখলেই বোঝা যায়। পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায় । খুব অল্প সময়ে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হলো মোবাইল ফোন।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনঃ আমরা অনলাইনের মাধ্যমে অনেক বড় বড় ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারি । বিভিন্ন রোগ বালাই সম্পর্কে জানতে পারি সেগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে পারি। বিভিন্ন ডাক্তারের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আপনার রোগের চিকিৎসা নিতে পারেন। এখন মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে প্রেসার বা সহ অনেক কাজ করা হয়।

ঠিকানা খোঁজার ক্ষেত্রে: আমরা যদি কোথাও যেতে চাই তাহলে সর্বপ্রথম কাজ হলো আমাদের সেই জায়গাটাকে চিনতে হবে। যদি জায়গায় না চিনি তাহলে সেখানে আমরা যেতে পারবো না। আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে চাইলেই গুগল ম্যাপের সাহায্যে যে কোন জায়গা খুঁজে বের করতে পারবেন। এবং খুব সহজেই সে জায়গায় আপনি যেতে পারবেন।

কেনাকাটার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন: দৈনন্দিন জীবনে আমাদের কেনাকাটা করার জন্য বাজারে যেতে হয় কিন্তু আপনি চাইলেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘরে বসেই পেতে পারেন সকল কিছু। মোবাইল ফোনে কয়েকটি অ্যাপস ইনস্টল এর মাধ্যমে । আপনি যেকোনো ধরনের পণ্য বাজারে না গিয়ে বাসায় বসে থেকে কিনে ফেলতে পারেন ।

আপনি যদি খাবার খেতে চান সেটিও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অর্ডার করে আপনি আপনার বাসায় পেতে পারেন । আপনি জামা কাপড় কেনাকাটা করতে চাইলে যে গার্মেন্টস দোকানে যান সেখানে হয়তো বা পছন্দের পোশাকটি নাও থাকতে পারে কিন্তু অনলাইন থেকে আপনি অসংখ্য পণ্য দেখে অন্য জিনিসটি বেছে নিতে পারেন। এভাবে মোবাইল ফোন দিয়ে কেনাকাটার কাজে লাগাতে পারেন।

বিনোদনের ক্ষেত্রে: মন ভালো না থাকলে কিছুই ভালো লাগেনা। আর মন ভালো করার জন্য আমি মনে করি মোবাইল ফোনে যথেষ্ট। আপনার কিছু ভালো লাগছে না আপনি চাইলেই একটা কৌতুক অথবা একটা মজার নাটক দেখে মনকে ফ্রেশ করে নিতে পারেন। অনেক ধরনের গান-বাজনা শুনতে পারেন। ফেসবুক ইউটিউব ইত্যাদিতে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখতে পারেন। এতে করে আপনার সময় গুলো আনন্দময় কাটবে।

লেখকের মন্তব্য

মোবাইল ফোন ব্যবহারের ভালো এবং খারাপ দুটি দিকে রয়েছে। তবে বর্তমান সমাজের কিছু অসৎ মানুষেরা অসৎ উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য খারাপ দিকগুলোকে বেছে নিয়ে থাকে। অনেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে গিয়ে প্রতারিত ও হয়ে থাকেন। অনেকে আবার মোবাইল ফোনে গভীরভাবে আসক্ত হয়ে পড়েন। 

সে কারণে লেখকের পরামর্শ থাকবে আপনারা অবশ্যই মোবাইল ফোনের নেগেটিভ দিকগুলো থেকে দূরে থেকে পজেটিভ দিকগুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনার জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url