বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা - বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা সকল শ্রেনীর জন্য

সম্মানিত পাঠক আপনি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। বিভিন্ন বইয়ের এবং ওয়েবসাইটে খোঁজাখুঁজির পরও আপনি হয়তোবা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রচনা সকল শ্রেণীর জন্য এ বিষয়ে মানসম্মত রচনা খুঁজে পাচ্ছেন না? তাহলে এই পোস্টটি মূলত আপনার জন্যই খুবই কার্যকরী হবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা
সম্মানিত পাঠক, এই পোস্টটি সম্পন্ন পাঠ করার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন, একটি মানসম্মত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা এবং সকল শ্রেণীর জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রচনা সম্পর্কে। তাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি মানসম্মত রচনা পড়ার জন্য, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা সকল শ্রেনীর জন্য এবং ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ মূলক সহকারে পড়ুন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা

আমরা যদি প্রবন্ধ বা রচনা লিখতে যাই তাহলে সর্বপ্রথম আমাদের নিয়ম জানতে হবে । প্রবন্ধ বা রচনা লেখার কিছু নিয়ম আছে সেগুলো নিয়ম অনুযায়ী লিখলে প্রবন্ধগুলো মানসম্মত হয় এবং পরীক্ষাতেও ভালো নাম্বার পাওয়া যায়। যেকোনো প্রবন্ধ বা রচনা লেখার নিয়ম রয়েছে। প্রতিটি প্রবন্ধ মূলত ০৩ টি অংশে বিভক্ত। প্রবন্ধের প্রধান অংশ তিনটি-ভূমিকা, মূল আলোচনা ও উপসংহার।

ভূমিকা
ভূমিকা প্রবন্ধের প্রবেশক অংশ। এ অংশে মূল আলোচনার ইঙ্গিত থাকে। প্রবন্ধের শিরোনামের কোনো শব্দের ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন হলে সেটি ভূমিকাতেই দিতে হয়। আলোচনা কীভাবে অগ্রসর হবে, তার ইঙ্গিতও থাকে ভূমিকায়।

মূল আলোচনা
মূল আলোচনা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত থাকতে পারে। কখনো কখনো ভাগগুলোকে পরিচ্ছেদ দিয়ে বিভাজন করা যায়। এসব ক্ষেত্রে পরিচ্ছেদগুলোর আলাদা শিরোনাম থাকতে পারে, যার নাম পরিচ্ছেদ শিরোনাম। গুরুত্বের ভিত্তিতে, যুক্তির ভিত্তিতে, কালের ক্রম অনুযায়ী পরিচ্ছেদগুলোকে পরপর সাজিয়ে নিতে হয়। 
এক অনুচ্ছেদ থেকে অন্য অনুচ্ছেদে উত্তরণের সময়ে সঙ্গতি থাকছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। প্রবন্ধের মধ্যে একই কথা বার বার উল্লেখ করা ঠিক নয়। এক অংশের বক্তব্য অন্য অংশের বক্তব্যের সঙ্গে কোনো রকম বিরোধ সৃষ্টি করছে কি না, সেটি খেয়াল রাখতে হয়।

মূল অংশের মধ্যে অনেক সময়ে সারণি বা নকশা ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। এগুলো কখনো বক্তব্যকে শক্তিশালী করে, আবার কখনো বক্তব্যকে অস্পষ্ট করে। সেটি বিবেচনায় রেখে সারণি বা নকশা ব্যবহার করা যেতে পারে।

উপসংহার
প্রবন্ধের শেষ অংশকে উপসংহার বলে। এটি প্রবন্ধের সারসংক্ষেপ নয়; ফলে পুরো প্রবন্ধের বক্তব্যকে এখানে নতুন করে বলার দরকার নেই। এমনকি, উপসংহারে নতুন প্রসঙ্গের অবতারণাও করা যায় না। উপসংহারে প্রবন্ধ-লেখকের নিজের মতামত তুলে ধরা জরুরি। এই মতামতের মধ্যে আলোচ্য বিষয়ের উপযোগিতা নিয়ে কথা বলা যায়, কোনো সুপারিশ করা যায়, সিদ্ধান্ত বা ফলাফল উপস্থাপন করা যায়।
সীমাবদ্ধতার কথা বলা যায়, সম্ভাবনার ইঙ্গিত তুলে ধরা যায়। 'উপসংহারে বলা যেতে পারে' বা 'সবশেষে বলা যায়'-এ ধরনের বাক্য উপসংহারে না থাকাই ভালো। অনেক সময়ে প্রবন্ধে ভূমিকা, উপসংহার কিংবা মূল আলোচনার পরিচ্ছেদ-শিরোনাম আলাদা করে উল্লেখ করা হয় না। তবে প্রবন্ধের মধ্যে এগুলো ঠিকই বিদ্যমান থাকে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা সকল শ্রেনীর জন্য

আপনারা অনেকেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা নিয়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ পড়ে থাকেন। এগুলো প্রবন্ধে বিভিন্ন বইয়ে বিভিন্ন ধরনের পয়েন্ট উল্লেখ করা থাকে। তাই সব রকমের বই পড়ে পয়েন্ট সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ হয়ে যায়। এ কারণে বিভিন্ন বই হতে পয়েন্ট সংগ্রহ করে একটি রচনা সুন্দরভাবে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা হলো। প্রতিটি পয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

ভূমিকা

বাংলাদেশে একটি স্বাধীনতার সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। তবে স্বাধীনতা এত সহজভাবে আসেনি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে যুদ্ধ করার পর অসংখ্য বাঙালি রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এই স্বাধীন বাংলাদেশ এবং সার্বভৌমত্ব একটি রাষ্ট্র। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বেদনার ইতিহাস হলেও তা গৌরবোজ্জ্বল মহিমায় ভাস্বর।

মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি ও স্বাধীনতা আন্দোলন

পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে রাষ্ট্রভাষা প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পশ্চিম পাকিস্তানে সাধারণভাবে ব্যবহৃত ছয় ভাগ জনগণের মাতৃভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাঙালি জাতির কোন আপত্তি ছিল না। তবে তারা চেয়েছিল উর্দুর পাশাপাশি সিংহভাগ জনগণের ভাষা বাংলাকেও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পেতে।

কিন্তু তা না করে বাঙালি জাতিকে আন্দোলনের মুখে ঠেলে দেয়া হয়। সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা বাংলা আন্দোলন। ১৯৪৮ এ শুরু হওয়া ভাষা আন্দোলন ৫২ তে শহীদ হওয়া বরকত সালাম রফিক জব্বারের রক্তে হয়ে চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছিল। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের ভরাডুবি এবং যুক্তফ্রন্টের অদ্ভুত পূর্ব বিজয় লাভ পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার ভিতকে নড়বড়ে করে দেয়।
১৯৬৫ সালে মৌলিক গণতন্ত্রের নামে আইয়ুব খান এক প্রহসনে নির্বাচন দিয়ে এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করে নেয়। তখন থেকেই স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্য ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপিত হয়। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে তালবাহানা শুরু করে।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে জাতিকে মুক্তি সংগ্রামে হাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। সারা বাংলায় শুরু হয় আন্দোলন। আপোশ আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করে ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে গোপনে সৈন্য ও অস্ত্র এনে শক্তি বৃদ্ধি করে। ২৫ শে মার্চের গভীর রাতে পাক বাহিনীর ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাস, ইপিআর ও রাজার বাগ পুলিশ লাইনে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চলে।

স্বাধীনতার ঘোষণা 
গ্রেফতার হওয়ার পূর্বমুহূর্তে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে (অর্থাৎ ২৫ মার্চ রাত ১২টার পর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ঘোষণাটি ছিল ইংরেজিতে, যাতে বিশ্ববাসী ঘোষণাটি বুঝতে পারেন। স্বাধীনতা ঘোষণার বাংলা অনুবাদঃ "ইহাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন।

আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যা কিছু আছে, তা-ই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ কর। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।” (বাংলাদেশ গেজেট, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, ৩ জুলাই ২০১১)।

স্বাধীনতার এ ঘোষণা বাংলাদেশের সকল স্থানে তদানীন্তন ইপিআর-এর ট্রান্সমিটার, টেলিগ্রাম ও টেলিপ্রিন্টারের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা এম.এ. হান্নান চট্টগ্রামের বেতার কেন্দ্র থেকে একবার এবং সন্ধ্যায় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয়বার প্রচার করেন।

মুক্তিযুদ্ধের শুরু

২৫ মার্চের কালো রাতে পাকবাহিনী ঢাকার বুকে যে হত্যা ও ধ্বংসের খেলা শুরু করে, স্বাধীনতা ঘোষণার সাথে সাথে তাদের সে নিষ্ঠুর খেলা আরো বহুগুণ বেড়ে যায়। অগ্নিসংযোগ ও গোলাবর্ষণ করে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয় রাজধানী ঢাকাকোডেকাসহ গোটা দেশে শুরু হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ। পাকিস্তানিদের এ রক্ত ও ধ্বংসের খেলায় সমগ্র দেশ প্রতিশোধ স্পৃহায় ফেটে পড়ে।
প্রতিরোধ গড়ে তুলে হানাদারদের বিরুদ্ধে। আর এভাবে প্রতিরোধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করার দৃঢ়প্রত্যয়ে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। মূলত ০৭  ই মার্চের শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে বাংলার জনড়ন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেয়।

মুজিবনগর সরকার গঠন

যুদ্ধরত স্বাধীন বাংলাদেশকে পরিচালনা এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানের জন্য ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়, যা মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত। কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার ভবেরপাড়া ইউনিয়নের বৈদ্যনাথতলা গ্রামে আমবাগানে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে। মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে সংগঠিত ও সুপরিকল্পিতভাবে শুরু হয় মুক্তিসংগ্রাম।

মুক্তিযুদ্ধে, সংগঠন ও পরিচালনা 

সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে একেকজন সেক্টর কমান্ডারের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ শুরু করে এবং বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানিদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। সাথে সাথে গোপন ও অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীকে জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে মারাত্মকভাবে পরাজিত ও পর্যুদস্ত করে। শুধু মুক্তিযোদ্ধারাই নয়, দেশের সর্বস্তরে মানুষ দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুদ্ধে অংশ নেয়।

মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা

প্রতিবাদের আরেক নাম ছাত্র সমাজ । যুগ যুগ ধরে সকল অবৈধ অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে এই ছাত্র সমাজ । তেমন ই  মুক্তিযুদ্ধের সময় ও ছাত্র সমাজ থেমে থাকেননি।  মুক্তিযুদ্ধের কাহীনিতে লক্ষ্য করলে দেখা  যায় ছাত্ররাই বেশি ভূমিকা রাখে । সারা দেশের মধ্যে তারা আলোড়ন সৃষ্টি করে ফেলে । সকল স্কুল কলেজের ছাত্ররা  ঝাপিয়ে পড়ে যুদ্ধে।

অনেকে পরিবারের কথা না শুনে বাবা মায়ের অবাধ্য হয়ে দেশের জন্য লড়াই করেছে। তারা দেশের বাহিরে গিয়ে বিভিন্ন ট্রেনিং নিয়ে এসে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন এবং পাকিস্থানিদের বিতাড়িত করেছেন । দেশের জন্য দিয়ে দিয়েছে জীবন। শুধু মুক্তিযুদ্ধে না ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও ছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশ আধুনিক ছিলো না । ছিলোনা তেমন কোনো যোগাযোগ প্রযুক্তি  । মুক্তিযুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছিলো বিভিন্ন ধরনের পত্রিকা । পত্রিকাতে লেখালেখি হতো এই যুদ্ধ সম্পর্কে । খবর শোনার জন্য একমাত্র উপায় ছিলো রেডিও । রেডিও ওত তখন নিয়মিত প্রচারিত হতো খবর । তৎকালীন সময়ের পত্রিকাগুলো বর্তমানে স্বাধীনতার দলিল।

মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ

১৯৭১ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে মুক্তিযুদ্ধ তীব্রতর হয়ে ওঠে। ৩ ডিসেম্বরে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ৪ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী যৌথভাবে হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়তে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দান করে। ৪ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলায় পাকবাহিনী সবগুলো বিমান হারায়। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। 

আত্মসমর্পণ ও চূড়ান্ত বিজয়

শেষ পর্যন্ত পাকবাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জেনে যৌথ কমান্ডের নিকট ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। ফলে বাংলাদেশে চূড়ান্ত বিজয় সূচিত হয়। 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, তাৎপর্য ও গুরুত্ব

বাঙালির জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অত্যধিক। এ যুদ্ধের মধ্য দিয়েই ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে- বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ তার স্থান করে নিয়েছে। এর জন্য আমাদের পূর্বপুরুষদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ লোক শহিদ হয়েছেন এবং দু'লক্ষ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। 

তাঁদের জীবনের বিনিময়ে, সম্ভ্রমের বিনিময়ে, ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ। আজকের এ স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে সুখী, সমৃদ্ধ, আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাসম্পন্ন দেশ হিসেবে গড়ে তোলার মধ্যেই নিহিত রয়েছে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা তথা সকল মুক্তিযোদ্ধার সার্থকতা এবং মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য ও গুরুত্ব।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও দায়িত্ববোধ

মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের অনেক ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে  স্বাধীনতা । স্বাধীনতা অর্জন করতে যেমন কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে ঠিক তেমনি রক্ষা করাও কঠিন। দেশের জনগনের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উন্মোচন করতে হবে। কৃষক থেকে শুরু করে চাকুরিজীবি সবাইকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে । দেশকে একটি দারিদ্রমুক্ত ও উন্নয়নমীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে ।

উপসংহার

দীর্ঘ নয় মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাঙালি জাতি অর্জন করে বহুল প্রত্যাশার চূড়ান্ত বিজয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশ একটি গৌরময় স্থান পেয়েছে। আজ আমাদের দায়িত্ব, এক সমুদ্র রক্ত আর ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে সুখী-সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত করা।

লেখকের শেষ কথা

যে কোন বিষয় বস্তু সম্পর্কে রচনা লেখা লিখা অনেকটা আর্টের মতো। আপনি মূল বিষয় বস্তুকে ফোকাস না করে যদি অসংগতি বিষয়বস্তু জুড়ে দিয়ে অনেক বেশি শব্দের রচনা লিখেন তাহলে সেটা খুব েএকটা কার্যকর বা মান সম্মত রচনা হবে না। আপনাকে নির্দিষ্ঠ বিষয় বস্তুর উপর ফোকাস করে সম্পর্ন রচনা লিখতে হবে। বাংলায় আরো অনেক ভালো এবং শিক্ষনীয় ব্লগ পড়তে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url