নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল - সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু তারিখ

প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয় নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলা মৃত্যু তারিখ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারী কে এবং কেন তাকে হত্যা করা হয়েছিল এ সকল বিষয় সম্পর্কে না জেনে থাকলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল
প্রিয় পাঠক এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন,নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দি হন, নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ, নবাব সিরাজউদ্দৌলা বংশধর সম্পর্কে। তাই নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হলে এই পোস্টটি অবশ্যই পাঠ করুন।

ভূমিকা ‍

বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় অধ্যায় হল ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে  নবাব সিরাজ দৌলার পতন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে বাংলার মাটি থেকে স্বাধীনতার সূর্য সম্পূর্ণভাবে অস্তমিত হয়েছিল। যার পেছনে লুকিয়ে ছিল নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজমহলেরই কয়েকজন কুচক্রী এবং বিশ্বাসঘাতক। নিজের রাজ্যের সেনাবাহিনীর এবং রাজদরবারের বিশ্বাসঘাতক কিছু কর্মচারীর জন্য নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় বরণ করতে হয়।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় হওয়ার পর বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর তৎকালীন বাংলার রাজধানী পৌঁছে রাজপ্রাসাদে নবাবকে না পেয়ে নবাবকে খুঁজে বের করার জন্য চারিদিকে লোক পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মহানন্দা নদীর অতিক্রম করে ১৭৫৭ সালে তেশরা জুন নবাব সিরাজউদৌলা নাজিমপুরে যাওয়ার পথে নদীর জল হঠাৎ কমে যাওয়ায় কারনে পাড়ে এসে নৌকা আটকে যায়।

এ সময় নবাব ক্ষুধা নিবারণের জন্য খাবার সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী একটি বাজারে যান। বাজারে কিছু লোক নবাব কে দেখে চিনে ফেলেন এবং অর্থের লোভে পড়ে মীরজাফরের সেনাবাহিনীকে খবর দেয়। অনেকে এরকম ধারণা করেন যে, এক ফকির নবাব কে দেখে চিনে ফেলে এবং অর্থের লোভে ওই ফকির মীরজাফরের সেনাবাহিনীদের জানিয়ে দেয়। 
সেখান থেকে নবাব সিরাজদৌলা কে বন্দী করে আবারো পুনরায় মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসা হয়। যখন নবাবকে বন্দী করা হয় তখন তার সাথে লুৎফা বেগম এবং তার চার বছর বয়সী কন্যা উম্মে জোহরা সঙ্গে ছিলেন। পরের দিন অর্থাৎ চৌঠা জুলাই মির্জাপুরের আদেশক্রমে মীরজাফরের পুত্র মিরনের তত্ত্বাবধানে মহম্মদ বেগ নামে এক হত্যাকারীর দ্বারা নবাব কে হত্যা করা হয়।

প্রবাদে আছে যে নবাব কে হত্যা করার পর তাকে হাতির পিঠে চড়িয়ে সারা রাজধানী ঘোরানো হয়। সারা শহর ঘোরানোর পর আলীবর্দী খানের কবরের পাশে তাকে কবরস্থ করা হয়।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা মৃত্যু তারিখ

নাজিমপুর-এর এক নিকটবর্তী বাজার হতে নবাব সিরাজদৌলা কে বন্দী করে নিয়ে রাজধানী মুর্শিদাবাদে ঘাতক মোহাম্মদ বেগ এর দ্বারা মীরজাফর এর আদেশক্রমে তাকে হত্যা করা হয়। হত্যা করার পর নবাবের লাশ হাতির পিঠে চড়িয়ে সারা শহর ঢোল বাজিয়ে ঘোরানো হয়। ১৭৫৭ সালের ৩ জুলাই নবাব কে বন্দী করা হয় এবং পরের দিন অর্থাৎ ৪ জুলাই মোহাম্মদ বেগ এর দ্বারা নবাবকে হত্যা করা হয়।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইতিহাস

নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাংলা বিহার উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন। তার শাসনামূল হচ্ছে হাজার ১৭৫৬ সাল হতে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর বাংলা শাসন ক্ষমতা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে চলে যায়। নববীর বিশ্বস্ত সেনাপতি মির্জাপুর, রায়দুর্লভ, বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজয় বরণ করেন। 
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ এবং পরাজয়ের পেছনে কলঙ্কময়, রহস্যময় কাহিনী আপনাদের সামনে পরিষ্কারভাবে আলোকপাত করা হলো।
জন্ম
নবাব সিরাজউদ্দৌলা শুধু ১৭৩৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার নানার নাম ছিল আলিমুদ্দি খান। নবাব আলিমুদ্দিন এর কোন পুত্র সন্তান না থাকায় রাজ সিংহাসনে নানা সূত্র ধরে নবাব সিরাজদৌলা সিংহাসন আহরণ করেন। আলিমুদ্দিন খান তার তিনটি কন্যাকে তার বড় ভাইয়ের তিন পুত্রের সাথে বিবাহ দেন। 
এদের মধ্যে হাজী আহমদ এর প্রথম পত্র নোয়া ইজ শাহ এর সাথে আলিমুদ্দি খানের বড় মেয়ে ঘসেটি বেগমের, দ্বিতীয় কন্যা সাহা বেগমের সাথে শাহিদ আহমদ, এবং তৃতীয় কন্যা আমেনা বেগমের সাথে জয়েন উদ্দিন আহমেদ সাথে বিবাহ দেন। ছোট মেয়ে আমেনা বেগমের দুটি পুত্র সন্তান ছিল এবং একটি কন্যা সন্তান। দুটি পুত্র সন্তানের মধ্যে একজন হলেন সিরাজউদ্দৌলা। 

আলীবর্দী খান যখন পাটনা আক্রমণ করে সফলতা লাভ করেন ঠিক এই সময় তার তৃতীয় মেয়ে আমেনা বেগমের গর্ভে সিরাজউদ্দৌলার জন্ম হয়। আর সে কারণেই সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে নবাব সিরাজদুল্লাহ কে আলিবর্দী খান নিজের ছেলের মতোই আগলে রাখতেন এবং নবাব তার আলিমুদ্দিন খানের কাছেই মানুষ হন।
রাজ্যের ক্ষমতা ইতিহাস
ছোটবেলা থেকেই নবাব সিরাজদৌলা বিভিন্ন যুদ্ধে নানা আলিমুদ্দি খানের সাথে সঙ্গ দিতেন। ১৭৪৬ সালের মারাঠা যুদ্ধে নবাব খুব সাহসিকতার পরিচয় দেন। এর ফলস্বরূপ সিরাজদৌলাকে পার্টনার শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। বয়স খুব কম হওয়ার কারণে রাজা জানকিরাম কে রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এই বিষয়টি নবাবের অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 
তাই তিনি গোপনে তার স্ত্রী লুৎফুন নেছাকে সঙ্গে নিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে সোজা পাটনায় পৌঁছে যান এবং রাজা জানকিরামকে তার শাসনভার থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আদেশ করেন। কিন্তু জানকিরাম নবারের আদেশ অমান্য করে শাসনভার ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানাই। এ সময় নবাব দুর্গের দার বন্ধ করে নবাবের কাছে একটি চিঠি পাঠান

নবাব জানকিরামের ওপর আক্রমণ করেন। যুদ্ধ চরম পর্যায়ে গেলে খবর পেয়ে আলিমুদ্দিন খান দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে যুদ্ধ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনেন এবং তিনি ঘোষণা দেন যে আলীবর্দী খানের পরে নবাব সিরাজউদ্দৌলায় বাংলা বিহার উড়িষ্যার সিংহাসন আরোহন করবেন।
ক্ষমতা গ্রহণ
১৭৫৬ সালের ১০ই এপ্রিল এক দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে আলীবর্দী খানের মৃত্যু হলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসন আরোহন করেন। ক্ষমতা গ্রহণ করে নবাব সিরাজউদ্দৌলা রাজ্যকে সুশৃংখলভাবে সাজানোর জন্য তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি রাজ্যে ক্ষমতা গ্রহণ করে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তা হলো।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার সিংহাসনে আরোহন
প্রাথমিক কার্যাবলী
নবাব সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসন আহরণ করার পর রাজ্যের অবস্থা খুবই উরাধুরা ছিল। তাই রাজ্যকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী অর্থাৎ সংস্কার মূলক কিছু কাজ হাতে নিয়েছিলেন। তিনি যে সকল কার্যাবলী সম্পাদন করেছিলেন তা হলো।

মতিঝিল প্রাসাদ এবং কাশিমবাজারের দুর্গ আটক
নবাব যখন সিংহাসন আহরণ করেন তখন থেকেই কলকাতায় ইংরেজদের প্রকোপ অত্যাধিক হারে বাড়তে থাকে। এ কারণে ইংরেজদের দমন করার জন্য কাশিমবাজারের দুর্গ প্রাচীর ভেঙে ফেলেন যাতে ভবিষ্যতে নবাবের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের কাজ কেউ না করতে পারে। কিন্তু ইংরেজরা তার আদেশ অমান্য করে কাজ চলমান রাখে। 
তাই সিরাজউদ্দৌলা বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রথমে তিনি তার খালা ঘসেটি বেগমকে মঞ্জিল প্রাসাদ হতে মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসা হয়। মতিঝিল অধিকার করে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কাশিমবাজারের দিকে রওনা হন এবং ২৭ তারিখে কাশিমবাজার দুর্গাপুর করেন।

কলকাতা আক্রমণ
১৭৫৬ সালের ১৮ই জুন নবাব সিরাজদৌলা কলকাতা। তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পর বিষে ২০ জুন নবাব সিরাজদোলা কলকাতার দুর্গ  জয়লাভ করেন এবং জয়লাভ করেন।

নবাবগঞ্জের যুদ্ধ
নবাবগঞ্জের শওকত জং সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুতি নেন। এই সংবাদ পেয়ে শওকত জং গোপনে ইংরেজদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করেন। অপরদিকে ইংরেজ দরবার হতে রবার্ট ক্লাইভ কে প্রধান সেনাপতি করে কলকাতা পুনরুদ্ধ করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শওকত জং পথিমধ্যে নবাবগঞ্জ স্থানে যুদ্ধ সংঘটিত হন এবং শওকত জং পরাজিত হলে নবাব সিরাজদৌলা মোহনলালের হাতের্পুনিয়া শাসন ক্ষমতা তুলে দেন।

কচুক্রি সেনাপতিদের দমন
সিংহাসন আহরণ করে নবাব সিরাজউদ্দৌলা যখন সকল সমস্যার সমাধান এবং রাজ দরবারের অপকর্মের বিচার শুরু করেন। প্রথমে তিনি মানিক চন্দ্র নামে এক সেনাকে কারাবন্দি করেন এবং শাস্তি প্রদান করেন। এই ঘটনায় ভীত হয়ে পড়েন মীরজাফর জগৎসেট এবং রাজবল্লভ। নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য তারা ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে সিংহাসনের নবাব কে সরিয়ে মীরজাফরকে বসানোর চক্রান্ত শুরু করেন।

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ পরিচালনা
১৭৫৭ সালে ১২ই জুন চন্দননগরে ইংলিশ সেনারা পুনরায় মিলিত হন। কিন্তু সেখানে নবাবের দুর্গ থাকা সত্ত্বেও তারা নির্দ্বিধায় হুগলি কাটোয়ার দুর্গ অগ্রদ্বীপ এবং পলাশীতে এগুলো দ্বীপেও নবাবের সৈন্য থাকা সত্ত্বেও ইংরেজরা বিনা বাধায় নবারে সেনাদের আক্রমণের জন্য পলাশীতে প্রান্তরে উপস্থিত হন। এতে নবাব বুঝতে পারলেন যে তার সেনাপতি এই ষড়যন্ত্রের সাথে লিপ্ত রয়েছে।

তাই তিনি মীরজাফরকে বন্দী না করে তাকে পবিত্র কোরআন শরীফ স্পর্শ করে শপথ নিতে বললেন। মীরজাফর পবিত্র কোরআন শরীফ স্পর্শ করে স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য শপথ নিলেন। এদিকে গৃহ  সমস্যা সমাধান করে নবাব রায় দুর্লভ, ইয়ার লতিফ খান, মীর মদন, মোহনলাল এবং ফরাসি সেনাপতি সাফ্রেঁকে যুদ্ধ চালানোর দায়িত্ব অর্পণ করে যুদ্ধ পরিচালনা ভার দেন এবং যুদ্ধ শুরু করলেন।
তেইশে জুন পলাশীর প্রান্তরে ইংলিশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নবাবের সেনাবাহিনীর এক কঠিন যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মীর মদন ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রবল আক্রমণ করেন এতে ইংরেজ সেনাবাহিনী টিকতে না পেরে পাশের আম বাগানে পালিয়ে যায়। মীর মদন আস্তে আস্তে অগ্রসর হলেও রাই দুর্লভ, মিরজাফর ইয়ার লতিফ সৈন্যদের নিয়ে নির্বাক চলচ্চিত্রের মত দাঁড়িয়ে রইলেন।

হয়তো বা তাদের সামান্য সাড়া পেলেই মীরমদন ইংরেজ বাহিনীদের পরাজয় করতে পারতেন। তারপরও মিরমদন খুব সাহসিকতার সহিত যুদ্ধ চালিয়ে গেলে দুপুরের পর হঠাৎ বৃষ্টি নেমে যাবতীয় গোলাবারুদ ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে মীর মদনের যুদ্ধের প্রকোপ একটু কমে যায়। এই সুযোগে  গোলার আঘাতে মির মদনকে হত্যা করা হয়।
মিরমদনের মৃত্যুর পর সেনাপতি মোহনলাল সমান হারে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। যুদ্ধ বিরতি দেওয়া হলেও তিনি তার বিরুদ্ধে গিয়ে ইংরেজি বাহিনীদের আক্রমণ করার জন্য সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর তার সৈন্য বাহিনীদের নিয়ে শিবিরে ফিরে আসেন। আর এই সুযোগেই ইংরেজরা নবাব কে আক্রমণ করে।

বিকেল পাঁচটার দিকে নবাবের সামনে ইংরেজদের অধিকার এ চলে আসে। ইংরেজদের পক্ষে ৭ জন ইউরোপীয় সৈন্য এবং ১৬ জন দেশীয় সৈন্য নিহত হন। নিশ্চিত পরাজয় জেনে নবাব সিরাজদৌলা রাজধানী রক্ষার উদ্দেশ্যে মুর্শিদাবাদে রওনা হন। কিন্তু রাজধানীর রক্ষা করার জন্য কেউ তাকে সহায়তা প্রদান করেনি। অবশেষে নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার সহধর্ম লুৎফুন্নেছাকে নিয়ে এবং তার ভাতিজা গোলাম হোসেন কে নিয়ে স্থলভাগ দিয়ে পালিয়ে যান।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা বংশধর

নবাব সিরাজদুল্লাহ কে হত্যা করা হলেও তার স্ত্রী লুৎফুন্নেছা এবং তার কন্যাকে মিরজাফরের আদেশে পুত্র মিরনের নির্দেশে ঢাকায় বন্দী করে রাখা হয়। সিরাজের পতনের আগ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রকারী ঘসেটি বেগম কে ব্যবহার করা হলেও নবাব সিরাজউদ্দৌলা পতনের পর ঘসেটি বেগমকে আর কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি। নবাবের স্ত্রী কন্যা টি বেগম মা আমিনা, সবাইকেই ঢাকার জিনজিরা প্রাসাদে বন্দী করে রাখা হয়।
কিছুদিন পর মিরজাফরের পুত্র মিরনের নির্দেশে আমেনা বেগম এবং ঘসেটি বেগম কে নদীতে ডুবিয়ে মেরে ফেলা হয়। ইংরেজ সেনা ক্লাইভের নির্দেশক্রমে সিরাজের স্ত্রী কন্যা এবং কন্যাকে পুনরায় মুর্শিদাবাদের নিয়ে আসা হয়। কোম্পানি হতে প্রদত্ত সামান্য খাবারের উপর নির্ভর করে তাদের জীবনধারণ করতে হয়। অবশেষে ৩৪ বছর বয়সে নবাবের স্ত্রী লুৎফুন্নেছা ১৭৯০ সালে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেন।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন উত্তর

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন নবাব সিরাজদৌলা। তার মৃত্যুর পর স্বাধীনতার সূর্য বাংলার মাটি থেকে চিরতরে ডুবে যায়। যেহেতু নবাব সিরাজউদ্দৌলার ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে এক চক্রান্তমূলকভাবে পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল সে কারণেই এই যুদ্ধ নিয়ে অনেকের বিভিন্ন রকমের মতভেদ এবং প্রশ্ন রয়েছে। আর্টিকেলের এ পর্যায়ে আমি আপনাদের নবাব সিরাজউদ্দৌলার সিংহাসন আহরণ হতে পরাজয় পর্যন্ত কিছু সাধারণ প্রশ্ন এবং তার উত্তর প্রদান করব।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম কি?

সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম লুৎফুন্নেছা।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার কন্যার নাম কি?

নবাব সিরাজউদ্দৌলার অন্য নাম জোহরা।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারী কে?

নবাব সিরাজদৌলা কে হত্যাকারী অর্থাৎ ঘাতক হলেন মোঃ বেগ, আদেশক্রমে মীরজাফর।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ?

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের অন্যতম কারণ রাজ দরবারে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দি হন?

নবাব নাজিমপুর নিকটবর্তী বাজারে বন্দী হন।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার জন্ম সাল?

নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৭৩৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর তারিখ?

১৭৫৭ সালের ৪ জুলাই নবাবকে হত্যা করা হয়।

লেখকের মন্তব্য

নবাব সিরাজদৌলা সিংহাসন আহরণ করে সকল সমস্যার সমাধান করলেও রাজদরবারে বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীর বিচার করার জন্যই তিনি আরো বেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হন। ফলস্বরুপ ১৭৫৭ সালে ২৩ শে জুন পলাশী প্রান্তরে ইংরেজ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজয় বরন করেন এবং সেখান থেকে পালিয়ে যান। ১৭৫৭ সালের এই যুদ্ধকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম বীজ বলে অভিহিত করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url