নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪- ফরম নম্বর দিয়ে

সম্মানিত পাঠক, আসসালামুয়ালাইকুম আপনি কি নতুন ভোটার? কিভাবে নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪, ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি ডাউনলোড করার নিয়ম, ফরম নম্বর দিয়ে বের করতে হয় বুঝতে পারছেন না? নতুন এবং পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন ঘরে বসেই। ভোটার আইডি কার্ড চেক এবং সংশোধন, ডাউনলোড যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পাঠ পড়ুন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪
সম্মানিত পাঠক, এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো ভোটার আইডি কার্ডের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। যেমনঃ কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হয়, কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করতে হয়, কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি বের করতে হয় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানতে পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪

নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ ফরম নম্বর দিয়ে

আপনারা অনেকেই জানেন যে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে প্রত্যেক বছর নতুন ভোটার আইডির তালিকা প্রতিটি এলাকায় গিয়ে হালনাগাদ করা হয়। নতুন ভোটার আইডি কার্ড হালনাগাদ করার সময় তাদেরকে একটি ফরম নাম্বার প্রদান করা হয়। আপনি যদি নতুন ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য হালনাগাদ করে থাকেন তাহলে আপনি চাইলে উক্ত ফরম নাম্বার দ্বারা যে কোন অনলাইন হতে খুব সহজেই আপনার ভোটার আইডি কার্ডের সকল তথ্য চেক করতে পারবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক ফরম নম্বর দিয়ে
যারা নতুন ভোটার তথ্য হালনাগাদ করেছেন তারা খুব সহজেই ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করতে এবং ডাউনলোড করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। অনেকে নতুন ভোটার হওয়ার পর ও মনে মনে ভাবছেন কবে আইডি কার্ডটি কবে হাতে পাব। যে সকল নতুন ভোটাররা এরকম চিন্তা ভাবনা করছেন তাদের জন্য একটি অত্যন্ত সুখবর রয়েছে।

তা হল নতুন ভোটাররা ফরম নাম্বার দিয়ে নির্বাচন কমিশনার ওয়েবসাইট হতে আপনার এনআইডি কার্ডটি অনলাইন কপি সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।

ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি ডাউনলোড করার নিয়ম

নতুন ভোটাররা খুব সহজেই ঘরে বসেই অনলাইনে মাধ্যমে নিজের ভোটার আইডি কার্ডটি নিজে নিজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার জন্য এবং ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে বেশ কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। মোবাইলের মাধ্যমে আপনি যদি ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করতে চান তাহলে অবশ্যই দুইটি মোবাইল  ব্যবহার করতে হবে। 
এর মধ্যে একটিতে এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপটি ইন্সটল করে নিতে হবে। এরপর পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করুন। ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন।
০১. প্রথমে ভিজিট করুন নির্বাচন কমিশনারের ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd

০২. সরাসরি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে এখানে ক্লিক করুন

০৩.ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি অপশন আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে। অপশন গুলো হল অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করুন, আবেদন করুন, লগইন করুন।

ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-০১
০৩. আপনি উক্ত অপশন গুলোর মধ্যে থেকে রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করুন।
রেজিস্টার করুন বাটনের ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার সামনে ফরম নাম্বার অথবা ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং জন্ম তারিখ প্রদানের অপশান দেখতে পাবেন। (যদি আপনি 2019 সালের পরে ভোটার তালিকায় নাম হালনাগাদ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ফোন নাম্বারের পূর্বে NIDFN যোগ করতে হবে)
০৪. ফর্ম নাম্বার অথবা ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার এবং জন্ম তারিখ প্রদান করে একটু নিচে নামলে একটি ক্যাপস পূরণের ঘর দেখতে পাবেন সেখান থেকে আপনি পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-০২
০৫. পরবর্তী পেজে আপনাকে আপনার স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানার তথ্য প্রদান করতে হবে। স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা সঠিকভাবে প্রদানের পর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-০৩
০৬. পরবর্তী ধাপ আপনার মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশনের অপশনটি প্রদর্শিত হবে। আপনি যদি নতুন ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় যে নাম্বারটি প্রদান করেছেন সেই নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড প্রদান করার মাধ্যমে মোবাইল নাম্বারটি ভেরিফাই করে নিতে হবে। আপনি চাইলে নাম্বার পরিবর্তন করে নতুন নাম্বার দিয়ে মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করে নিতে পারেন। otp প্রদান করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলে পরবর্তী পেজে নিয়ে যাবে।
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-০৪
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-০৫
০৮. পরবর্তী বাটনে ক্লিক করলে উক্ত ব্যক্তির অর্থাৎ যার আইডি কার্ডটি আপনি বের করতে চাইছেন ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে। এর জন্য আপনার সামনে একটি কিউআর কোড প্রদর্শিত হবে। অন্য একটি ডিভাইস দিয়ে কিউআর কোডটি স্ক্যান করুন।
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-০৬
০৯. কিউআর কোড স্ক্যান করা হয়ে গেলে যে ব্যক্তির আইডি কার্ডটি উত্তোলন করতে চাইছেন তার মুখমন্ডলের সাথে কিউআর কোডটি ম্যাচ করান। এর জন্য আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হল প্রথমে উক্ত ব্যক্তিকে মোবাইলের ক্যামেরার সামনে বরাবর দাঁড়াতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে নিচের চিত্রের টিকচিহ্ন উঠে যাবে। এরপর ধীরে ধীরে ঘাড় ঘোরান।
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-০৭
১০. ঘাড় ঘোরানো সঙ্গে সঙ্গে নিচের ছবিতে ঠিক চিহ্ন প্রদর্শিত হবে এবং । একই পদ্ধতিতে ধীরে ধীরে ডানদিকে মাথা ঘুরাতে হবে এবং টিক চিহ্ন প্রদর্শিত হবে।
ফেস ভেরিফিকেশন কমপ্লিট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিউআর কোডটি একটু লোড নিয়ে ফর্ম নাম্বার ধারীর ছবিসহ একটি প্রোফাইল প্রদর্শিত হবে।
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-১০
১১. প্রোফাইলে সবার নিচে ডাউনলোড নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন।
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন-ধাপ-০৯
১২.সেখান থেকে আপনি আপনার এনআইডি কার্ড টি খুব সহজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক

বর্তমান আমাদের দেশে এরকম অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা এনআইডি কার্ড টি হারিয়ে ফেলেছেন অথবা নষ্ট করে ফেলেছেন অথবা চুরি হয়ে গেছে। তাই মানুষকেই এরকম কোন না কোন সমস্যা পড়তে দেখা যায়। অনেকে বুঝতে পারেন না এসব সমস্যায় পড়লে কিভাবে তার থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে এবং কিভাবে আইডি কার্ডটি আবার পুনরায় উত্তোলন করতে পারবেন। 
আমি আপনাদের হারিয়ে যাওয়া আইডি কার্ড, চুরি হয়ে যাওয়া আইডি কার্ড, নষ্ট হয়ে যাওয়া আইডি কার্ড, এবং স্থান পরিবর্তন করা হলে নতুন আইডি কার্ড কিভাবে অনলাইন থেকে খুব সহজে বের করে নিতে পারবেন সে সম্পর্কে ধারণা প্রদান করব। এর জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম এবং পদ্ধতি ফলো করতে হবে। যারা ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ২০১৬ অথবা 2017 সালের আগে ভোটার তালিকায় তথ্য

হালনাগাদ করেছেন তারা সরাসরি নির্বাচন কমিশনারের ওয়েবসাইট হতে এনআইডি কার্ড পুনরায় ডাউনলোড করে নিতে পারবেন না। যদি আপনি পুরাতন এনআইডি কার্ড পুনরায় ডাউনলোড করে নিতে চান তাহলে অবশ্যই অনলাইনে পুর্নমুদ্রণ আবেদন করার মাধ্যমে নিতে হবে। এর জন্য আপনাকে কয়েকটি পদ্ধতি এবং নিয়ম ভালোভাবে অনুসরণ করতে হবে।
  • আপনার আইডি কার্ড যদি হারিয়ে যায়, অথবা চুরি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিকটস্থ থানায় একটি জিডি করতে হবে।
  • নষ্ট হয়ে গেলে অথবা স্থান পরিবর্তন করলে নতুন ভোটার আইডি পুনর মুদ্রণ ভোটার আইডির ফটোকপি প্রয়োজন হবে।

পুরাতন ভোটার আইডি পুর্নমুদ্রণ আবেদন প্রক্রিয়া

উপরোউক্ত দুইটি কাজ করলে আপনি আপনার আবেদন করার জন্য প্রস্তুত। এবার আপনি পুরাতন ভোটার আইডি পুর্নমুদ্রণ আবেদন প্রক্রিয়ায় আবেদন করুন।
  • প্রথমে আপনাকে এনআইডির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে একাউন্ট রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করতে হবে
  • সরাসরি ব্রাউজারে প্রবেশ করতে এখানে ক্লিক করুন services.nidw.gov.bd
  • আপনার ভোটার আইডি নাম্বার এবং জন্ম তারিখ সঠিকভাবে প্রদান করে ক্যাপস পূরণ করার পরে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
  • এরপর আপনাকে থাই এবং বর্তমান ঠিকানা সঠিকভাবে সিলেট করতে হবে এবং পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে।
  • এরপর আপনার সামনে একটু কিউআর কোড প্রদর্শিত হবে। কিউআর কোডটি এনআইডি কার্ড ধারীর ফেস এর সাথে মিল করাতে হবে। এর জন্য কিউআর কোডটি অন্য কোন ডিভাইস দ্বারা স্ক্যান করে উক্ত ব্যক্তির মুখ সামনে বরাবর এবং ডান দিকে বাম দিকে ঘোরানোর মাধ্যমে মিল করাতে হবে।
  • ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে আপনাকে পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে আপনি চাইলে পাসওয়ার্ড সেট না করেই লগইন করতে পারেন।
  • লগইন সম্পন্ন হলে উক্ত ব্যক্তির ছবিসহ প্রোফাইল এবং আরও বেশ কিছু অপশন প্রদর্শিত হবে।
  • উক্ত অপশন গুলো মধ্য থেকে রিইস্যু নামে একটা অপশন দেখতে পাবেন এবার আপনি রিইস্যু বাটনে ক্লিক করুন।
  • রিইস্যু বাটনে ক্লিক করলে আপনার সামনে একটি পপ আপ উইন্ডো ওপেন হবে সেখান থেকে বহাল নামে অপশন দেখতে পাবেন আপনি উক্ত অপশনে ক্লিক করুন।
  • এ পর্যায়ে আপনাকে রিইস্যু তথ্য প্রদান করতে হবে। রিইস্যু কারণটি সিলেক্ট করে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
  • এ পর্যায়ে আপনাকে রিইস্যু আবেদনফি প্রদান করতে হবে।
  • রিইস্যু জন্য ২৩০ টাকা এবং আবেদনের ধরন জরুরী হলে ৩৪৫ টাকা ডিপোজিট দিতে হবে।
রিইস্যু আবেদন ফি জমা দেওয়ার নিয়মাবলী
মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার আবেদনটি জমা দিতে পারবেন।
  • বিকাশ অথবা ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং হতে আবেদন পিটি জমা দিতে হবে। আমি আপনাদের বিকাশের মাধ্যমে কিভাবে টাকা জমা দিবেন সে সম্পর্কে ধারণা প্রদান করব।
  • প্রথমে আপনি আপনার বিকাশ অ্যাপটি লগইন করে নিন।
  • এরপর পেমেন্ট অপশনে ক্লিক করুন।
  • ক্লিক করে একটু নিচে আসলেই এনআইডি সার্ভিস নামে একটি অপশন দেখতে পারবেন।
  • সেখান থেকে এন আই ডি সরকারি ফি প্রদান অপশনটিতে ক্লিক করুন।
এরপর আপনার সামনে আরো একটি নতুন পাতা প্রদর্শিত হবে সেখানে আপনাকে ভোটার আইডি নাম্বারটি সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। আইডি কার্ডের নাম্বার অবশ্যই ১০ সংখ্যার হতে হবে। যাদের দশ সংখ্যার এন আই ডি নাম্বার নেই আর ১৩ সংখ্যার নাম্বার রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই এনআইডি নাম্বার এর পূর্বে জন্ম সাল যোগ করে ১৭ সংখ্যা করে উক্ত নাম্বারটি প্রদান করতে হবে।
এরপর আপনাকে আবেদনের ধরন নির্বাচন করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করলে কত টাকা ফি প্রদান করতে হবে তা প্রদর্শিত হবে আপনি এনআইডি নাম্বার চেক করে নিয়ে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে পিন নাম্বার প্রদান করে সাবমিট দিলেই পেমেন্ট সম্পন্ন হয়ে যাবে। 
  • পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিপোজিটের পরিমাণ প্রদর্শিত হবে। এবার আপনি পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
  • রিইস্যু আবেদনের জন্য হারিয়ে গেলে জিডি কপি এবং স্থানান্তর করলে এন আইডি কার্ডের ফটোকপি স্ক্যান করে আপলোড করে আপনার আবেদনটি সাবমিট দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করুন।
  • সফলভাবে আবেদন সাবমিট এর এক সপ্তাহ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই আপনার এন আইডি কার্ড টি আবেদনটি মঙ্জুর করা হবে।
  • এরপর আবার একই পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি আপনার এন আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আশা করছি পুরাতন ভোটার আইডি পুর্নমুদ্রণ আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

বর্তমান বাংলাদেশের ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ভুল এবং এটা নিয়ে ভোগান্তি মানুষের প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন সমস্যায় সৃষ্টি করেছে। ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ভুলভাল আসার কারণে সোশ্যাল মিডিয়া অনেক রকমের ফানি মূলক ভিডিও ও আমরা ইতিমধ্যে লক্ষ্য করেছি। যেমন ধরুন সোশ্যাল মিডিয়ায় থেকে সংগৃহীত একটি ভিডিওতে একটি লোককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে।

আপনার ভোটার আইডি কি সমস্যা আপনি কেন নির্বাচন অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। উত্তরের লোকটি বলে সরকার নির্বাচন অফিসে যারা চাকরি করে তারা কি কোন লেখাপড়া করে নাই, পড়াশোনা না জেনে কি তারা চাকরি নিয়েছে। তাকে আবারো প্রশ্ন করা হলো কেন? লোকটা উত্তরে বলল নাম আমার বাবলু আর ভোটার আইডি কার্ডের লিখেছে বালবুলু। 
এটি আসলে একটি হাস্যকর ঘটনা হলেও মর্মাহত ঘটনা বটে। কেননা এ ধরনের ভুল সাধারণত নির্বাচন অফিসে যারা ডাটা এন্ট্রি কাজ করেন তারা এ ধরনের ভুল করে থাকেন। এছাড়াও আপনার এলাকায় যে ব্যক্তি ভোটার তালিকা তথ্য ধারণ করেন অনেক সময় তথ্য এন্টি দেওয়ার সময় ভুল হতে পারে অথবা আপনি যে তথ্য প্রদান করেছেন সেখানেও কিছু ভুল থাকতে পারে।

এছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ভুল আসতে পারে। আর এই ভুলের মাশুল দিতে হয় সাধারণ মানুষদের। যাইহোক ভুল তো ভুলি। ভুল হলে ভুল সংশোধন করতে হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই আপনার ভোটার আইডি কার্ড যদি কোন তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে আপনি ঘরে বসে অনলাইনে মাধ্যমে খুব সহজেই আবেদন করতে পারবেন। 

কিন্তু তার জন্য কিছু দলিল প্রমাণাদি অর্থাৎ প্রয়োজনের ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। সংশোধনের ধরনের উপর নির্ভর করে আপনার ডকুমেন্টগুলো প্রদান করতে হবে। কোন ধরনের সংশোধনে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ভোটার আইডি সংশোধনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • স্মার্ট জন্ম সনদ (বাংলা এবং ইংরেজি ভার্সন)
  • এসএসসি সার্টিফিকেট এর ফটোকপি
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি যদি থাকে
  • পাসপোর্ট এর ফটোকপি যদি থাকে
  • সরকারি চাকরিজীবী হলে এমপিও সিট অথবা সার্ভিস বইয়ের ফটোকপি
  • বিবাহিত হলে বিবাহের কাবিননামার ফটোকপি
  • ইউনিয়ন কাউন্সিল হতে নাগরিক সনদের ফটোকপি
  • নামের ভুল যদি বড় ধরনের হয় অর্থাৎ এক নাম থেকে অন্য নামে রূপান্তরিত হবে এ ধরনের ভুল সংশোধনের জন্য অবশ্যই কোর্টের এফিডেভিট প্রয়োজন হবে।
নিজের আইডি কার্ডে পিতা ও মাতার নাম সংশোধন
  • অনলাইন জন্ম সনদ
  • এইচএসসি অথবা সম্মান পরীক্ষার সনদপত্র যদি থাকে
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স যদি থাকে
  • পাসপোর্ট যদি থাকে
  • পিতা ও মাতার ভোটার আইডি কার্ডের মূল কপি
  • পিতা-মাতার জন্ম সনদে কপি
  • আবেদনকারী যদি একাধিক ভাই বোন থাকে তাহলে ভাই বোনেরও ভোটার আইডি অথবা জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি
  • ওয়ারিশান সনদপত্র (ওয়ারিশান সনদপত্রে অবশ্যই সন্তানের নাম ক্রমানুসারে এবং প্রত্যেক সন্তানের ভোটার আইডি নাম্বার এবং জন্ম তারিখ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে)
  • সরকারি চাকরিজীবী হলে সরকারি অফিস হতে প্রত্যয়ন পত্র
জন্ম তারিখ ও জন্ম সাল সংশোধনের আবেদন
  • স্মার্ট জন্ম সনদ (বাংলা এবং ইংরেজি ভার্সন)
  • এসএসসি সার্টিফিকেট এর ফটোকপি
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি যদি থাকে
  • পাসপোর্ট এর ফটোকপি যদি থাকে
  • সরকারি চাকরিজীবী হলে এমপিও সিট অথবা সার্ভিস বইয়ের ফটোকপি
  • বিবাহিত হলে বিবাহের কাবিননামার ফটোকপি
  • কোর্টের এফিডেভিড।
অন্যান্য তথ্য সংশোধন
  • আপনি যদি রক্তের গ্রুপ চেঞ্জ করতে চান তাহলে অবশ্যই রক্তে গ্রুপে সার্টিফিকেটটি প্রদান করতে হবে।
  • যদি আপনি বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন করতে চান তাহলে তার বিপরীতে উপযুক্ত প্রমাণাদি পেশ করতে হবে।
  • আপনি যদি আপনার আইডি কার্ডে স্বামীর নাম চেঞ্জ করতে চান তাহলে অবশ্যই তালাকনামা আর যদি মৃত হয় মৃত্যু সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।
  • বাবা অথবা মা মারা গেলে মৃত্যুর সাল যোগ করতে চাইলে অবশ্যই পিতা-মাতা মৃত্যু সনদ সংযুক্ত করতে হবে।
  • যদি আপনার ধর্ম ভুল হয় তাহলে ধর্মের প্রমাণস্বরূপ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে একটি প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করে নিতে হবে।
  • এছাড়াও আরো অনেক বিষয় রয়েছে যে বিষয়গুলো সংশোধন করতে চাইলে সংশোধনীয় বিষয়ের এগেনেস্টে আপনাকে উপযুক্ত ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে।
এবার জেনে নেওয়া যাক আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য কি পরিমাণ আবেদন ফি প্রদান করতে হয়

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের নিয়ম

এন আই ডি কার্ড সংশোধন করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট প্রবেশ করে একাউন্ট রেজিস্টার করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করে আব্দুল জমা দিলে আপনার আবেদন সম্পন্ন হবে। পরবর্তী এস এম এস এর মাধ্যমে আপনার আবেদন সংশোধন হয়েছে নাকি কোন ত্রুটি হয়েছে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে আপনাদের মাঝে বোঝার সুবিধার্থে চিত্রসহ আলোকপাত করা হলো।
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন
প্রথম ধাপঃ সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি স্ক্যান করে জেপিজি ফরমেটে একটি ফোল্ডারে সেভ করে নিতে হবে। প্রতিটি ডকুমেন্টের সাইজ অবশ্যই থাকতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপঃ দ্বিতীয় ধাপে আপনাকে নির্বাচন কমিশনারের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে একটি অ্যাকাউন্ট এ রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যদি পূর্বের থেকে অ্যাকাউন্ট রেলস্টেশন করা থাকে তাহলে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে পারেন। আর যাদের একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা নাই তিনারা কিভাবে অ্যাকাউন্টেন্সেশন করবেন তার নিম্নে তুলে ধরা হলো
  • প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
  • অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের নামে একটা অপশন দেখতে পাবেন সেখানে ক্লিক করুন।
  • এরপর আপনার ভোটার আইডি নাম্বার এবং জন্ম তারিখ এবং ক্যাপস পূরণ করে পরবর্তী ধাপে ক্লিক করুন।
  • পরবর্তী ধাপে আপনার মোবাইলে very verytion code পাঠিয়ে মোবাইল নাম্বারটি ভেরিফাই করে নিন।
  • এরপর আপনার স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা সঠিকভাবে সিলেক্ট করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
  • এখন রেজিস্ট্রেশনের এ পর্যায়ে আপনার সামনে একটি কিউআর কোড প্রদর্শিত হবে। আপনি অন্য একটি ডিভাইস থেকে (ডিভাইসে অবশ্যই এনআইডি ওয়ালেট ইন্সটল করা থাকতে হবে) কিউআর কোড স্ক্যান করে আবেদনকারীর দেশের সাথে মিল করান।
  • ফেস ভেরিফিকেশন কমপ্লিট হলে পাসওয়ার্ড সেট করার অপশন প্রদর্শিত হবে আপনি চাইলে পাসওয়ার্ড সেট করে নিন। তাহলে আপনার একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে।
তৃতীয় ধাপঃ আপনার প্রদানকৃত ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে একাউন্টটি লগইন করে প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করুন। প্রোফাইলে আপনি তিন ধরনের তথ্য দেখতে পাবেন। ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা তথ্য এবং অন্যান্য তথ্য। আপনি ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের জন্য উপরের ডানপাশে এডিট বাটন নামে একটি বাটন দেখতে পাবেন। এবার আপনি এডিট বাটনে ক্লিক করুন। এডিট বাটনে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে নিচের চিত্রের মতো একটি পেজ প্রদর্শিত হবে
ভোটার-আইডি-রেজিস্ট্রেশন১
উপরে চিত্রটি দেখে আপনি অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে আপনি আপনার ভোটার আইডির কোন অংশটি সংশোধন করতে চাচ্ছেন। আপনি যে অংশটি সংশোধন করতে ইচ্ছুক সেই অংশের পাশে একটি বক্স দেখতে পাবেন উক্ত বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে ভুল তথ্যটি মুছে দিয়ে সঠিক তথ্য সঠিকভাবে টাইপ করুন এবং পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

চতুর্থ ধাপঃ চতুর্থ ধাপে আপনি আপনার আইডি কার্ডের যে অংশটি সংশোধন করতে চাচ্ছেন সেই অংশটি অর্থাৎ ভুল তথ্য এবং সঠিক তথ্য দুটি প্রদর্শিত হবে। আপনি তথ্যগুলো সঠিক আছে কিনা ভালোভাবে চেক করে নিয়ে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

পঞ্চম ধাপঃ পঞ্চম থেকে আপনাকে আবেদন সংশোধনের প্রধান স্বরূপ টাকা ডিপোজিট করতে হবে যেটা আপনি মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ অথবা ডাচ বাংলা একাউন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন।বিকাশের মাধ্যমে কিভাবে ভোটার আইডি সংশোধনের ফ্রি প্রদান করবেন তা বিস্তারিতভাবে আপনাদের মাঝে উল্লেখ করা হলোঃ
মোবাইল ব্যাংকিং ভোটার আইডির ফি পরিশোধ
  • প্রথমে আপনার বিকাশ একাউন্টটি লগইন করে নিন।
  • এবারের পে বিল অপশনটিতে ক্লিক করুন।
  • এখান থেকে  সরকারি ফি (nid service) অপশনটিতে ক্লিক করুন।
  • এবার আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বারটি ইংরেজিতে সঠিকভাবে লিখুন।
  • আপনি কি ধরনের সংশোধন করতে চাচ্ছেন তার ধরন নির্বাচন করুন।
  • এ পর্যায়ে আপনার সামনে টাকার পরিমান এবং ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার প্রদর্শিত হবে আপনি ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার আবারও চেক করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
  • এরপর আপনার পিন নাম্বার প্রদান করে ট্যাপ দুই থেকে করে তিন সেকেন্ড ধরে থাকলে আপনার পেমেন্টটি সম্পন্ন হয়ে যাবে এবং আপনার এন আই ডি ওয়ালেটে উক্ত টাকাটি ডিপোজিট সম্পন্ন হবে। প্রধান সম্পন্ন হলে আপনি আবারও আপনার কম্পিউটারের ওয়েবসাইটে ফিরে যান এবং পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
ষষ্ঠ ধাপঃ আবেদনের এ পর্যায়ে আপনি যে ডকুমেন্টগুলো স্ক্যান করে ফাইলে রেখেছিলেন সেগুলো একটি ঘর একটি আপলোড করুন। আপনার সার্টিফিকেট, জন্ম সনদ, ভোটার আইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স মোটকথা আপনার আবেদন সংশোধনের জন্য যে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এর কথা উল্লেখ করা আছে সবগুলোই একটি একটি পর্যায়ক্রমে আপলোড করুন। আপলোডের সময় অবশ্যই বিষয় নির্বাচন করুন। আপলোড শেষ হলে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

সপ্তম ধাপঃ সপ্তম ধাপে আবারো আপনি এই বিষয়ে সংশোধন করছেন তা আবারও প্রদর্শিত হবে আপনি পুনরায় সবকিছু চেক করে নিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।

অষ্টম ধাপঃ সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পর আপনি পুনরায় আপনার প্রোফাইলে ফিরে আসুন। প্রোফাইলে ক্লিক করলে ওপরে ডাউনলোড নামে একটি লিংক দেখতে পাবেন আপনি লিংকে ক্লিক করে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিয়ে সংরক্ষণ করে রাখুন।

আপনি যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড  জন্ম তারিখ সংশোধন করতে চান অথবা নাম সংশোধন করতে চান অথবা পিতা ও তার নাম সংশোধন করতে চান অথবা অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে উপরে প্রদর্শিত ধাপগুলো অনুসরণ করে পেমেন্ট সম্পন্ন করার মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন। 

তবে একটা বিষয় নিশ্চিত হতে হবে যে আপনি যে বিষয়ে সংশোধন করতে চাচ্ছেন সেই সংশোধনী বিষয়ের বিপরীতে অবশ্যই আপনাকে উপযুক্ত কাগজ পত্র প্রদান করতে হবে। যদি আপনি উপযুক্ত ডকুমেন্ট প্রদান করতে না পারেন তাহলে অবশ্যই আবেদন পত্রটি করা হবে। তবে আবেদন করার পর পরবর্তী কার্যক্রম আপনার মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।
যদি আপনার আবেদনে কোন ডকুমেন্ট মিস হয়ে যায় অথবা আর অন্য কোন ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তাহলে নির্বাচন অফিস থেকে মেসেজ এর মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে যে আপনার কোন ডকুমেন্টটি প্রয়োজন। আপনি আপনার মোবাইল মেসেজ ফলো করে উক্ত ডকুমেন্টটি পুনরায় আপলোড করে সাবমিট করুন। 

এরপর পরবর্তী এসএমএস আসার অপেক্ষায় থাকুন। যদি আপনার মোবাইলে কোন মেসেজ না আসে তাহলে অবশ্যই আপনার আবেদন পত্র এবং ডকুমেন্ট নিয়ে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করুন। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের ফি সমূহ

ক্রমিক নং

সংশোধনের ধরন

টাকার পরিমান

০১

ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন


২৩০ টাকা ভ্যাট সহ

০২

অন্যান্য তথ্য সংশোধন

১১৫ টাকা ভ্যাট সহ

০৩

ভোটার আইডি কাডের তথ্য এবং অন্যান্য তথ্য সংশোধন

৩৪৫ টাকা ভ্যাট সহ

০৪

পূর্নমুদ্রন সাধারন

২৩০ টাকা ভ্যাট সহ

০৫

পূর্নমুদ্রন জরুরি

৩৪৫ ভ্যাট সহ

মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করা

আপনারা ইতিমধ্যে অবগত হয়েছেন যে এনআইডি কার্ড বের করার জন্য মোবাইল নাম্বারের কতটা গুরুত্ব রয়েছে। মোবাইল নাম্বার ছাড়া কিছুতেই আপনি আপনার আইডি কার্ডটি বের করতে পারবেন না। কেননা আইডি কার্ড বের করার জন্য মোবাইল ভেরিফিকেশন করতে হয়। মোবাইল নাম্বার বের করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম নির্বাচন কমিশন ওয়েব প্রবেশ করতে হবে।
এরপর একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন ওখান থেকে ভোটার আইডি নাম্বার অথবা ফরম নাম্বার জন্ম তারিখ এবং ক্যাপ্স পূরণ করে পরবর্তী ধাপে গেলেই মোবাইল ভেরিফিকেশন করার অপশনটি প্রদর্শিত হবে। আপনি এখান থেকে মোবাইল নাম্বার একটি কোড সেন্ড করে সেই ওটিপি কোড যথাযথ স্থানে প্রদান করে পরবর্তী ধাপে গিয়ে ফেসবুকে ভেরিফিকেশন করার মাধ্যমে আপনার এন আইডি কার্ড টি উত্তোলন করতে পারবেন। 

একটা বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে রাখি যদি আপনার কাছে ভোটার আইডি নাম্বার, স্লিপ নাম্বার, জন্ম তারিখ এই তিনটির কোন কিছুই না থাকে তাহলে আপনি শুধু মোবাইল নাম্বার দিয়ে কিছুতেই আপনার এন আইডি কার্ডটি বের করতে পারবেন না। তবে এক্ষেত্রে আপনার জন্য একটি পরামর্শ হলো আপনি সরাসরি নির্বাচন গিয়ে আপনার নাম।

ভোটার এলাকার নাম এর তথ্য প্রদান করে আপনার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং জন্মতারিখ সংগ্রহ করে নিতে হবে। মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করা সম্ভব নয়। মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করা  নিয়ম পরবর্তীতে চালু হতে পারে

ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন এবং উত্তর

ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন রকমের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।। অনেকে অনেক রকমের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন বিধায় প্রশ্নগুলো করে বসেন। আপনাদের মাঝে ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে সাধারণ মানুষের সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করব।

ভোটার আইডি কার্ড স্থানান্তরের জন্য করণীয় কি?
ভোটার আইডি কার্ড বের করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ সরাসরি স্থানীয় নির্বাচন অফিসে আবেদন দাখিল করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ডের জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন?
  • প্রথমে আপনাকে স্থানান্তরের জন্য একটি আবেদন ফরম প্রিন্ট করে নিয়ে পূরণ করতে হবে।
  • স্থানান্তরের কারণ উল্লেখপূর্বক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি প্রত্যয়ন পত্র নিতে হবে।
  • স্থায়ী বাসিন্দা প্রমাণস্বরূপ নাগরিক সনদ।
  • আবাসিক স্থলের বিপরীতে গৃহত্যাগ রশিদের ফটোকপি।
  • বিদ্যুৎ বিল কাগজের ফটো।
  • বিবাহের কারণে যদি স্থানান্তর করে থাকেন তাহলে স্বামীর আইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • আর ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি।
  • বিবাহের কাবিন নামার ফটোকপি।
ভোটার আইডি আর সংশোধন করার জন্য কি কি কাগজ প্রয়োজন?
  • এসএসসি সার্টিফিকেট এর ফটোকপি
  • জন্ম নিবন্ধন ফটোকপি
  • পিতা মাতার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • পাসপোর্ট এর ফটোকপি
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • নাগরিক সনদের ফটোকপি
  • বিবাহের কাবিননামা ফটোকপি
  • ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয় কি?
  • ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে অবশ্যই আপনাকে খুব শীঘ্রই আপনার নিকষ্ঠস্থ থানায় একটি জিডি করতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ আইডি কার্ড সংশোধন নিয়ে বেশ সমস্যার সম্মুখীন হোন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় এন আইডি কার্ডের তথ্য এন্টি দেওয়ার সময় ভুল করে বসে ডাটা এন্ট্রি কম্পিউটার অপারেটর আর তার মাসুল দিতে হয় সাধারণ জনগণকে। আপনি একটা বিষয়ের লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন যে সারা বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ আইডি কার্ড সংশোধন হচ্ছে তার বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারি ফান্ডে জমা হচ্ছে যার সমস্তটাই সাধারণ মানুষের টাকা।

তারপরও কিছুই করার নেই কেননা আপনার আইডি কার্ড সংশোধন যদি না করে নেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার প্রতি সম্পত্তি এবং চাকরি-বাকরি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই কিছুই করার নেই সরকারি নিয়ম মেনে সঠিক নিয়মে আপনি আপনার এনআইডি কার্ডটি অপরুপ্ত প্রদর্শিত নিয়ম অনুসরণ করে সংশোধন করে নিন। 

ভোটার আইডি সংশোধন সম্পর্কিত আরো কোন তথ্য জানতে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানিয়ে রাখবেন। তাহলে অবশ্যই পরবর্তী পোস্টে অথবা কমেন্টের রিপ্লে স্বরূপ আপনার সমস্যার সমাধান করে দেয়ার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url