বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে কোন দেশ থেকে

প্রিয় পাঠক, আপনি কি বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে কোন দেশ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন? রেমিটেন্স কি? রেমিটেন্স কাকে বলে এ সম্পর্কে জানার আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টগুলোতে আপনার জন্য। কেননা এই পোস্টটির মাধ্যমে আমি আপনাদের মাঝে রেমিটেন্স সম্পর্কিত যাবে তো বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে কোন দেশ থেকে
সম্মানিত পাঠক, এ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো উপকৃত হবেন যে ভারত বাংলাদেশ থেকে কত রেমিট্যান্স পায়? প্রবাসী আয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কততম? বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে কোন জেলায়? এ সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে আপনাকে অবশ্যই এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে কোন দেশ থেকে

রেমিটেন্স কি?

পোস্টটি পড়তে গেলে আপনাকে অবশ্যই রেমিটেন্স কি সে সম্পর্কে জানতে হবে। রেমিটেন্স বলতে সাধারণত ওই অর্থকে বোঝায় যে সকল অর্থ প্রবাসীরা তার নিজ মাতৃরাষ্ট্রে প্রেরণ করে থাকে। অর্থাৎ যখন কোন প্রবাসী বিদেশে অবস্থান করে এবং অবস্থানরত সময়ে ওই প্রবাসী যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে তার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিজ রাষ্ট্রকে জমা দিতে হয়। 

আর এই জমাকৃত অর্থ সাধারণত রেমিটেন্স নামে পরিচিত। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ আন্তর্জাতিক অর্থ সাহায্যের পাশাপাশি প্রবাসীদের কাছ থেকে ভ্রমণকৃত অর্থ দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ ও অর্থ প্রবাহের অন্যতম প্রধান উৎস। আন্তর্জাতিক পুজি প্রবাহের অন্যতম উৎস হলো রেমিটেন্স। আশা করছি রেমিটেন্স কি? বিষয়টি বুজতে পেরেছেন।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে কোন দেশ থেকে

বাংলাদেশ সরকারের আয়ের একটি খুব বড় উৎস হলো রেমিটেন্স। রেমিটেন্স থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা ইনকাম করে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রবাসীদের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার রেমিটেন্স পেয়ে থাকে। বাংলাদেশে সবচেয়ে রেমিটেন্স পেয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র হতে এছাড়াও সৌদি আরব হতে ও বাংলাদেশের প্রবাসীদের কাছ থেকে অনেক বেশি রেমিটেন্স পেয়ে থাকে। 

বর্তমানে সৌদি আরবকে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রেমিটেন্সের সবচেয়ে বড় হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ বা উৎস রয়েছে। যদিও সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চার গুণ বেশি প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছে। তারপরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্য প্রাচ্য দেশ সৌদি আরবকে পেছনে ফেলে রেমিটেন্স প্রদানের প্রধান উৎস হিসেবে পরিণত হয়েছে। 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রবাসীদের বসবাসের সংখ্যা ৫ লক্ষ সে তুলনায় সৌদি আরবে অনেক বেশি। কেননা সৌদি আরবে বাংলাদেশী প্রবাসী সংখ্যা ২০ লাখের ওপরে।

২০২২ সালে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রবাসীদের কাজ থেকে যতগুলো রেমিটেন্স এর অর্থ প্রদান করেছে তা পূর্বের বছরের থেকে ১৬ ভাগ বেড়ে ৯৬৬.৮৯ মিলিয়নে পৌঁছে গেছে। যদিও সৌদি আরবের প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ উল্লেখিত সময়ে ১৯.৯১০ মিলয়ন ডলার ছিল।

2022 খ্রিস্টপূর্বাব্দের জুলাই হতে সেপ্টেম্বর মাসে ১৬.৫০ বেড়ে গিয়ে বাংলাদেশের রেমিটেন্স ৯৯৯.৭৬ মিলিয়ন ডলারে আসে যার সম্পূর্ণটাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এই সূত্র মতে লক্ষ্য করা যায় যে সৌদি আরব রেমিটেন্স প্রদানে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। কি কারনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স আসার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সৌদি আরব থেকে রেমিটেন্স আসার পরিমাণ কমে যাচ্ছে এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন করা হলে তারা বিভিন্ন রকমের মতামত প্রদান করেন।
এ বিষয়ে এক অর্থনীতিবিদ মতামত ব্যক্ত করেন যে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংখ্যা অনেক বেশি। আর সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি পরিমাণে রেমিটেন্স আসে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রবাসী বাংলাদেশী একদিনে যে পরিমাণ অর্থ ইনকাম করে তা সৌদি আরবের প্রবাসী বাংলাদেশী এক মাসের বেতনের সমান প্রায়।

এছাড়াও অনেক প্রবাসী আমেরিকানদের পারিবারিক সূত্রেও সংযোগ রয়েছে। তারা বাংলাদেশের আত্মীয় স্বজনদের কাছে অর্থ পাঠিয়ে থাকে যা দেশের বিনিয়োগ করা হয় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ্যা। তিনি আরো মতামত ব্যক্ত করেন যে, যদি নীতিমালা একটু শিথিল হত তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো অনেক বেশি রেমিটেন্স বাংলাদেশে আসতো।

এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত ওমান কাতার মালয়েশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এ দেশগুলো যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রেমিটেন্স প্রধান কারী হিসেবে অবস্থান করছে। যদিও এর পরবর্তী সিরিয়াল রয়েছে কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, ওমান।

ভারত বাংলাদেশ থেকে কত রেমিট্যান্স পায়?

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স ভারতে যায়। যদিও বাংলাদেশ প্রচুর পরিমাণে বেকার যুবক রয়েছে তা সত্ত্বেও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী বিশ্বের বাজারে বিপুল পরিমাণে ভারতীয়দের কাছে শ্রমজীবী কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেন বিভিন্ন অর্থনীতিবিদরা। তারা মতামত ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ হতে ইলিগ্যাল পদ্ধতিতে অনেক বাংলাদেশী ভারতীয়দের কাছে আনঅফিসিয়াল ভাবে কাজ করে।
যারা প্রায় প্রতিমাসে পাঁচ মিলন ডলার রেমিটেন্স বাংলাদেশ পাঠিয়ে থাকে। যেহেতু নিয়মনীতি মেনে কাজ করলে কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেমনঃ লিগ্যাল ডকুমেন্ট দিয়ে কাজ করলে কিছু ঝামেলা রয়েছে। যেসব কোম্পানিগুলো তাদেরকে নিয়োগ দিয়ে থাকে তারা এটা মনে করে যে বাংলাদেশীদের নিয়োগ দেওয়া থেকে ভারতীয়দের নিয়োগ দিলে তাদের ব্যাপারে কোনরকম চিন্তাভাবনা করতে হয় না। আর তখন তারা চাকরিতে বহাল থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগ হতে জানা যায় যে, বাংলাদেশ হতে প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার ভারতের রেমিটেন্স যায়। এই তথ্য থেকে এটা পরিষ্কার যে চলতি অর্থবছরে ভারতে কর্মরত বিদেশীরা প্রায় 9 কোটি 30 লাখ ডলারের সমপরিমাণ টাকা নিজ দেশে পাঠায়। চলতি অর্থবছরে যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় 11 কোটি 40 লক্ষ ডলার। এই টাকা পাঠানোর প্রতিযোগিতায় সবথেকে এগিয়ে রয়েছে ভারতীয়রা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বিগত অর্থবছরে ৪ কোটি ৩০ লক্ষ ডলার রেমিটেন্স ভারতে গিয়েছে যা অন্যান্য দেশে বাহিরে যাওয়া রেমিটেন্স এর তুলনায় সব থেকে বেশি। তবে গণমাধ্যমে রেমিটেন্স দেওয়ানের বিষয়ে কিছু গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। এর আগের বছর এক গণমাধ্যমে বলা হয় যে, বাংলাদেশ হতে প্রত্যেক বছর ভারতের রেমিটেন্স দেয় প্রায় 400 কোটি ডলারের সমপরিমাণ। 
গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে যে, ভারতে যে সকল দেশ হতে রেমিটেন্স পাই তার একটি সবথেকে বড় উৎস হল বাংলাদেশ। কিন্তু এই তথ্যটি ভারতের গণমাধ্যম ভুল বলে আখ্যায়িত করেন। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেন যে,  দেশে তৈরি পোশাক খাত ছাড়াও আরো অন্যান্য খাতে অনেক ভারতীয় নাগরিকরা কর্মে লিপ্ত আছে। আর এ কারণেই প্রত্যেক বছর ভারতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে রেমিটেন্স যায়।

রেমিট্যান্স পাঠানোর দুই নম্বরে রয়েছে থাইল্যান্ডের অধিবাসীরা। তারা প্রত্যেক বছর 87 লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠায়। এর পরবর্তী স্থানে রয়েছে চীন। চীনের প্রায় 85 লক্ষ ডলার এর সমপরিমাণ টাকা দেশে পাঠায়। এর পরবর্তী থান দখল করে আছে জাপান। জাপান অধিবাসীরা ৫৩ লক্ষ এবং শ্রীলংকা প্রায় ৫০ লক্ষ ডলার এ সমমান টাকা দেশে পাঠিয়ে থাকে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের যে পরিসংখ্যান তথ্য প্রদান করেছেন এছাড়াও আরো অনেক তথ্য রয়েছে। যেমন অনেক বিদেশী বিশেষ করে আফ্রিকা এদেশে অবৈধ উপায়ে বসবাস করছে। তাদের বেশিরভাগই অংশ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকে। আবার তারা ওয়ার্ক পারমিশন নিয়ে বৈধভাবেও বসবাসকারীদের কর ফাঁকি দিয়ে তাদের অর্থনৈতিক ইনকামের একটি বিশাল অংশ হন্ডি মাধ্যমে দেশে পাঠায়। কেননা বিদেশি শ্রমিক নির্দিষ্ট সংখ্যা সবার অজানা।

কি পরিমাণ বিদেশি কর্মী বৈধভাবে বাংলাদেশের কর্মরত রয়েছেন তার সঠিক কোন তথ্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বিভাগে নেই। তবে এ তথ্য থাকার কথা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর কাছে। আবার তারাই মতামত ব্যক্ত করেছেন যে বিদেশী শ্রমিকের সঠিক বর্ণনা তাদের কাছে নেই। তবে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক তথ্যের বর্ণনা মতে, সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রায় ৯৭ হাজার৬৯৭ জন নাগরিক অবৈধভাবে বসবাস করছে।

আইবি এর এক প্রতিবেদনে হতে জানা যায় যে, প্রায় 44 টি দেশ হতে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার নাগরিক বাংলাদেশে রয়েছে। এই সংস্থাটি আরো মতামত ব্যক্ত করেন যে, যে সকল বিদেশি কর্মীরা বাংলাদেশের কাজ করে তার অধিকাংশ পোষাক শিল্পী এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বিদ্যুৎ উন্নয়ন কেন্দ্র আন্তর্জাতিক এনজিও সমূহে হোটেল এবং রেস্তোরার মত জায়গায় ও বিভিন্ন বিদেশীরা কর্মরত রয়েছেন।
আশা করছি ভারত বাংলাদেশ থেকে কত রেমিট্যান্স পায়? বিষয়টি বুজতে পেরেছেন।

প্রবাসী আয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কততম

রেমিট্যান্স উপার্জনকারী হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। যদিও বাংলাদেশীদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বিদেশে যেতে অনেক বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। চলতি অর্থবছরে প্রায় ১২ লক্ষ এর বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জামায়। রেমিট্যান্স হচ্ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় অংশ। 

এর থেকে এর থেকে বোঝা যায় যে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান শক্তি হিসেবে রেমিটেন্স কে বিবেচনা করা হয়। প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার অর্থ প্রবাসীদের আই হতে দেশের রেমিটেন্স হিসেবে দেওয়া হয়। বর্তমান বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের আয়ের অবদান প্রায় জিডিপির ১২.৫%। চলতি অর্থবছরে২০.৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স হিসেবে বাংলাদেশে এসেছে।
২০২৩ সালে রেমিটেন্সের পরিমাণ আগের থেকে অনেক বেশি এসেছিল বলে মনে করে বিশ্ব ব্যাংক। তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে প্রবাসীদের কাছ থেকে আয়ের রেমিটেন্স হবে প্রায় সাত শতাংশ। যা ২০২৪ সালে বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ১০% এর কাছে।

বিএম পিটির তথ্য অনুযায়ী বর্তমান ২০২৪ সালে এপ্রিল মাসের এপর্যন্ত বিদেশী কর্মী হিসেবে ১৪ লাখ বাংলাদেশী বিদেশে পাড়ি জমায় যদিও এই শ্রমিকরা বেশিরভাগই অদক্ষ তবে ২০২৪ সালে বাংলাদেশে দক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থানও অনেক পরিমাণে বেড়ে গেছে কেননা ২০২৩ সালে বিদেশীদের দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিল আড়াই লক্ষ যা বর্তমানে বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিন লক্ষ বেশি।

২০২৩ সালে অদক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিল 2.5 লক্ষ কিন্তু বর্তমানে অদক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় তিন লক্ষ কাছাকাছি। এছাড়াও কর্মসংস্থানের জন্য অর্থাৎ জীবিকা নির্বাহের জন্য বিদেশে পাড়িয়ে দিয়েছেন অসংখ্য ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, নার্স ইত্যাদি পেশার কর্মীরা। তবে বর্তমানে বেশিরভাগ বিদেশী শ্রমিকরা ড্রাইভার গৃহকর্মী আতিথেয়তা, ইলেকট্রিশিয়ান, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, সুপারভাইজার প্লাম্বিং পাইপ ফিটিং এবং বিল্ডিং এর বিভিন্ন কাজ বৈদ্যুতিক বিভিন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করছে।

বাংলাদেশের অদক্ষ শ্রমিক গুলো বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছে। সে কারণেই বিদেশী যেসব দেশ হতে বাংলাদেশের রেমিটেন্স আসে তার শীর্ষ ছয়টি দেশই মধ্যপ্রাচ্যের। মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশেতে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ পরিমাণে রেমিটেন্স আসে সেগুলো হচ্ছে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। 

এছাড়াও আরো কিছু দেশ হতে বাংলাদেশ রেমিটেন্স আসে যেমন কাতার, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন ইত্যাদি দেশ। তবে বাংলাদেশের জন্য একটি সুখবর হচ্ছে এই রেমিটেন্স আশায় এবং বাংলাদেশের শ্রমিকরা মধ্যপ্রাচ্যের শ্রম বাজারে কাজ করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার অনেক দাঙ্গা হচ্ছে। যার কারণে সেখানে আরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিকরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে।

চলতি অর্থবছরে বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী মোট প্রবাসীদের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা পূর্বে থেকে প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ বেশি। আর এই তালিকার শীর্ষে থাকবে ভারত। চলতি অর্থবছরে ভারতীয় প্রবাসীদের আয়ের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে দাঁড়াতে পারে ১৩০ বিলিয়ন ডলারে।

দেশভিত্তিক ক্রমানুসারে প্রবাসীদের আয় প্রাপ্তির দ্বিতীয় স্থানে থাকবে মেক্সিকো। মেক্সিকো মোট 70 বিলিয়ন ডলার প্রবাসীর আই হতে পারে। ৫৫ কোটি ডলার নিয়ে প্রবাসী আয়ের তৃতীয় স্থানে থাকবে চীন। এরপরে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফিলিপাইন, ফিলিপাইন বৈদেশিক মুদ্রা প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর রয়েছে মিশর ও পাকিস্তান এ দুটি দেশী ২৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে পঞ্চম।

ষষ্ঠ স্থানে অধিকার করে আছে ফিলিপাইন । সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এরপরে রয়েছে নাইজেরিয়া কুয়েতনাম, উজবেকিস্থান যাদের প্রবাসী আয় ২২, ২১ এবং ১৭ মিলিয়ন ডলার যাদের অবস্থান যথাক্রমে অষ্টম নবম এবং দশম স্থানে। বর্তমান বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বভাস তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ শীর্ষে থাকবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দ্বিতীয় স্থানে থাকবে দেশ সৌদি আরব।
প্রবাসী আয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কততম অবশ্যই জানতে পেরেছেন।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে কোন জেলায়

দেশে যে প্রবাসী আয় আসে সেটাকে সাধারণত রেমিটেন্স বলা হয়। আর এই রেমিট্যান্স বাংলাদেশের সব থেকে বেশি আসে চারটি জেলায়। জেলাগুলো হলো প্রথমত ঢাকা, দ্বিতীয়তঃ চট্টগ্রাম, তৃতীয়ত কুমিল্লা এবং চতুর্থ সিলেট। এছাড়াও সব থেকে পিছিয়ে রয়েছে আরো ছয়টি জেলা। ২০২৩-২৪ চলতি অর্থ বছরে যত প্রবাসী আয় অর্থাৎ রেমিটেন্স বাংলাদেশের এসেছে তার পঞ্চান্ন শতাংশই বেশিরভাগ এর চার জেলা থেকে। এদের মধ্যে সবথেকে চলতি অর্থবছরে সবথেকে বেশি প্রবাসী আয় বেড়েছে চট্টগ্রাম জেলায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স পায় প্রায় তিন কোটি মার্কিন ডলার। যার দেড় কোটি এসেছে উল্লেখিত এর চার জেলা থেকে। প্রবাসী আয়ের প্রায় ৫০ শতাংশ এর জেলা থেকে আসে। এর মধ্যে ঢাকা জেলায় সর্বোচ্চ ৭০০ কোটি ডলার চট্টগ্রামের 170 কোটি ডলার কুমিল্লায় ১৩০ কোটি ডলার এবং সিলেটে 125 কোটি ডলার। বাহিরে আর অন্য জেলা হতে প্রায় শত কোটি ডলারেরও বেশি প্রবাসী আয় বাংলাদেশে আসেনি।

প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শীর্ষে তার জেলার বিভাগীয় পর্যায়ে এগিয়ে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগ। বাংলাদেশ সরকার যে পরিমাণে রেমিটেন্স পায় তার বেশিরভাগই আসে ঢাকা বিভাগে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ এবং তৃতীয় স্থানে সিলেট বিভাগ। বিগত অর্থবছরে মোট রেমিটেন্স এর মধ্যে ১০২৫ কোটি ডলার ঢাকা বিভাগের 13 টি জেলায় হতে এসেছে। 

আর বাদ বাকিগুলো এসেছে চট্টগ্রাম বিভাগের এগারোটি জেলা থেকে। এছাড়াও সিলেট বিভাগে হতে এসেছে ২৫০ কোটি ডলার।

লেখকের মন্তব্য

বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় দিক হল বৈদেশিক মুদ্রা অর্থাৎ রেমিটেন্স। পোশাক শিল্পের পরে রেমিটেন্স বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় উৎস। তবে বর্তমানে রেমিটেন্সদের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কেননা বিদেশে গমনের চাহিদা অনেক পরিমাণে বেড়ে গেছে। আবার অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীরা বহুদিন থেকে বিদেশে থাকার কারণে আত্মীয়তার সূত্র অনেক অর্থ বাংলাদেশ প্রেরণ করেন। 

আর সেই অর্থের রেমিটেন্স পায় বাংলাদেশ সরকার। তবে অনেক জালিয়াতি ভাবেও অর্থ লেনদেন করা হয়ে থাকে। লেখকের মন্তব্য হলো এ ধরনের কাছ থেকে বিরত থাকবেন। সঠিক নিয়ম অনুসরণ করার মাধ্যমে টাকা লেনদেন করবেন কোন রকমের অসৎ উপায় অবলম্বন করবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url