গ্যাস্ট্রিক আলসার কি | গ্যাস্ট্রিক আলসারের ১০টি কারন, লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন

 

সম্মনিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম/আদাব। আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় বস্তু গ্যাস্ট্রিক আলসার কি | গ্যাস্ট্রিক আলসারের  ১০টি কারন, লক্ষণ ও চিকিৎসা। আপনি যদি গ্যাস্ট্রিক আলসার কি | গ্যাস্ট্রিক আলসারের ১০টি কারন, লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে না জেনে থাকেন বা এর সমাধানের উপায় না জেনে থাকেন তাহলে এই পোষ্টটি মূলত আপনার জন্য। তাই উপরোক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অবশ্যই এই পোষ্টটি সম্পূর্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
গ্যাস্ট্রিক আলসার কি? গ্যাস্ট্রিক আলসারের ১০টি কারন, লক্ষণ ও চিকিৎসা
সম্পনিত পাঠক এই পোষ্টটি পড়ে আপনি আরো জানতে পারবেন আলসার কত দিনে ভালো হয়, গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসা, পেপটিক আলসারের লক্ষণ, খাদ্যনালী আলসারের লক্ষণ, ডিওডেনাল আলসারের লক্ষণ, ডিওডেনাল আলসারের চিকিৎসা,গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগীর খাদ্য তালিকা,কি খেলে আলসার ভালো হয়।

গ্যাস্ট্রিক আলসার কি | গ্যাস্ট্রিক আলসারের  ১০টি কারন, লক্ষণ ও চিকিৎসা

গ্যাষ্টিকের সমস্যার সম্মখিত হন নাই এই রকম লোক খুজে পাওয়ায় মুসকিল।প্রায় সকল লোকজন কম বেশি এই রোগের ভূক্তভোগী। গ্যাস্ট্রিক এমন একটি রোগ বা সমস্যা যা একেবারে নিরাময় প্রায় অসম্ভব বললেই চলে। কিন্তু কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে এই সম্পর্ন নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব। 
কি কি নিয়ম কানুন অনুসরন করতে হবে এবং এই রোগ কি, কেনই বা এই রোগ হয়, কিভাবে বুজবেন আপনার এই রোগটি হয়েছে এবং এর চিকিৎসা কি এসকল বিষয় সম্পর্ন আপনাদের জানানো চেষ্টা করব। তাহলে চলুন আর্টিকেলের মুল আলোচনার আসা যাক।

গ্যাস্ট্রিক আলসার কি?

অলসার শব্দের অর্থ হচ্ছে ঘা বা ক্ষত। সাধারনত মানব দেহের পরিপাকন্ত্রে বা পেটে এই ক্ষতটি হয়ে থাকে। এই ঘা কে কেন্দ্র করে পরিপাক তন্ত্রে বিভিন্ন রকমের জলিটলা সৃষ্টি হয়। একটি মানুষের পরিপাকন্ত্র এসিডের পরিমান অত্যাধিক পরিমানে বেড়ে যায় তখনি মূলতএই রোগটি হয়ে থাকে। তবে কখনো কখনো এসিডের মাত্রা ঠিক থাকলে ও কয়েকটি বিষেশ কারনে এই রোগটি হতে পারে। এটিকে সংক্রামন সংঘটিত রোগ বলা হয়।

গ্যাস্ট্রিক আলসারের ১০টি কারন

কোন একটি নিদিষ্ট কারনে বা একদিনে এই রোগ হয় না । বিভিন্ন কারনে এই রোগটি মানব দেহে বাসা বাঁধে। আস্তে আস্তে রোগটি পরিপাকতন্ত্রে ঘা অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিক আলসারের সৃষ্টি করে। গ্যাস্ট্রিক আলসারের প্রধান কারন হলো: বিভিন্ন ধরনের সংক্রামন, প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব, স্নায়ুর ক্ষতি, রক্ত সঞ্জালনের বাধা প্রাপ্ত বা ত্রুটি, বিভিন্ন ধরেনর আঘাত, বিভিন্ন ধরেনর ব্যাকটেরিয়া আক্রমন।
যেমন: যক্ষা রোগের, বাসিফিলিসের রোগের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমনে একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আলসারের সৃষ্টি হতে পারে। গ্যাস্ট্রিক আলসার এক ধরনের ক্ষত যা পাকস্থলীর ভিতরের আস্তরণে হয়। এই রোগটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। নিচে গ্যাস্ট্রিক আলসারের ১০টি প্রধান কারণ উল্লেখ করা হল:
  1. হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি (H. pylori) ব্যাকটেরিয়া: এই ব্যাকটেরিয়াটি পাকস্থলীর ভিতরে সংক্রমণ ঘটিয়ে আলসার সৃষ্টি করার প্রধান কারণ।
  2. অ্যাসপিরিন এবং আইবুপ্রোফেনের মতো অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ: এই ধরনের ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলে পাকস্থলীর আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং আলসার হতে পারে।
  3. কোরটিকোস্টেরয়েড: এই ধরনের ওষুধও পাকস্থলীর আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
  4. অতিরিক্ত অ্যাসিড: পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে আলসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
  5. ধূমপান: ধূমপান পাকস্থলীর আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং আলসার সৃষ্টি করে।
  6. অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন: অ্যালকোহল পাকস্থলীর আস্তরণকে জ্বালাতন করে এবং আলসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
  7. তীব্র মানসিক চাপ: দীর্ঘদিন তীব্র মানসিক চাপ সহ্য করলেও আলসার হতে পারে।
  8. জিনগত কারণ: কিছু মানুষের জিনগতভাবে আলসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
  9. রক্ত জমাট বাঁধার ওষুধ: ওয়ারফারিনের মতো ওষুধ সেবন করলে আলসার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  10. অন্যান্য রোগ: ক্রোহন'স রোগ, সিস্টিক ফাইব্রোসিস এবং পোলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজের মতো রোগ থাকলে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যদি আপনি গ্যাস্ট্রিক আলসারের উপরোক্ত লক্ষণগুলি অনুভব করেন, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

গ্যাস্ট্রিক আলসারের লক্ষণ সমূহ

প্রতিটি মানুষের গ্যাস্ট্রিক আলসার একটি সাধারন সমস্যা। সাধারনত পেটে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া হওয়া অথবা পেটের কোন এক পাশে সবসময় খিলের মতো ব্যাথা অনুভব করা। কারো কারো ক্ষেত্রে অনবরত পেট ব্যথা হওয়া, পেট ফুলে থাকা, পেট থেকে ঘাড় পর্যন্ত ব্যাথা হওয়া, কারো কারো আবার পিঠে ও ব্যাথা হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক আলসার হল পাকস্থলীর ভিতরের আস্তরণে এক ধরনের ক্ষত। এই ক্ষতটি সাধারণত গোলাকার বা অনিয়মিত আকারের হয়ে থাকে। যখন পাকস্থলীর অম্ল এবং অন্যান্য পাচনরস এই ক্ষতের সংস্পর্শে আসে, তখন তীব্র ব্যথা হয়। গ্যাস্ট্রিক আলসারের লক্ষণ সমূহ

গ্যাস্ট্রিক আলসারের সাধারণ লক্ষণগুলি হল:
  • পেটে জ্বালাপোড়া: খাবার খাওয়ার পর বা খালি পেটে জ্বালাপোড়া অনুভূতি হতে পারে।
  • পেটে ব্যথা: পেটের উপরের অংশে ব্যথা হতে পারে, যা খাবার খাওয়ার পর বা রাতে বেড়ে যেতে পারে।
  • বমি: কখনো কখনো বমি হতে পারে, যাতে রক্ত থাকতে পারে।
  • কালো বা রক্তাক্ত মল: আলসার গুরুতর হলে মলে রক্ত দেখা যেতে পারে, যা কালো বা টারের মতো দেখতে হতে পারে।
  • অপচয়: আলসারের কারণে ভালো করে খাদ্য হজম না হওয়ায় ওজন কমতে পারে।
  • অ্যাসিডিটি: বুকে জ্বালাপোড়া, গলায় জ্বালাপোড়া এবং অম্বল উঠা ইত্যাদি।
  • বদহজম: খাবার ভালো করে হজম না হওয়া।
  • স্ফীত অনুভূতি: পেট ফুলে যাওয়া এবং অস্বস্তি বোধ করা।
  • ক্লান্তি: আলসারের কারণে শরীরে রক্তক্ষরণ হলে ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।

গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসা

একজন গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসা কি হবে তা সাধারনত নির্ভর করে আলসার টি কি ধরনের তার উপর। একজন আলসারের সময়মত সঠিক চিকিৎসা গ্রহন করে তাহলে ১-২ মাসের মধ্যে এই রোগে থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব। চিকিৎসারা সাধরনত প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর গ্রুপের ঔষধ সেবন করা জন্য পমামর্শ এবং চিকিৎসা দিয়ে থাকে। 

যেমন ধরুন: ইসিমোপ্রাজল এবং ওমিপ্রাজল গ্রুপের গ্রাস্ট্রিকের ঔষধ। পিপি আই এর কাজ হলো পিরিপাকন্ত্র এ বা পেটে এসিডের পরিমান কমিয়ে পেটে আলাসারের ঘা শুকাতে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসা সাধারণত আলসারের কারণের উপর নির্ভর করে। সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি (H. pylori) ব্যাকটেরিয়া।

গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসার পদ্ধতি
গ্যস্ট্রিক আলসারের ঔষুধগুলো হলোঃ
অ্যান্টিসিড: এই ওষুধগুলি পাকস্থলীর অ্যাসিডের পরিমাণ কমিয়ে জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।
প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (PPIs): এই ওষুধগুলি পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন কমিয়ে আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে।
অ্যান্টিবায়োটিক: যদি আলসারের কারণ H. pylori ব্যাকটেরিয়া হয়, তাহলে এই ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।
মিউকোসাল প্রোটেক্ট্যান্ট: এই ওষুধগুলি পাকস্থলীর আস্তরণকে রক্ষা করে।

জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
  • ধূমপান বন্ধ করা: ধূমপান আলসারের জন্য ক্ষতিকর।
  • মদ্যপান পরিহার করা: অ্যালকোহল পাকস্থলীকে জ্বালাতন করে।
  • মসলাযুক্ত ও অম্লীয় খাবার পরিহার করা: এই ধরনের খাবার পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন বাড়াতে পারে।
  • ছোট ছোট করে বারবার খাওয়া: একবারে বেশি পরিমাণে খাওয়ার পরিবর্তে ছোট ছোট করে বারবার খাওয়া ভালো।
  • ওজন কমানো: শরীরের অতিরিক্ত ওজন  আলসারকে আরও খারাপ করতে পারে।
  • সার্জারি: খুবই গুরুতর ক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসার সময়কাল
গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসার সময়কাল আলসারের তীব্রতা এবং কারণের উপর নির্ভর করে। সাধারণত চিকিৎসা চলাকালীন এবং চিকিৎসা শেষ হওয়ার পরও নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পেপটিক আলসারের লক্ষণ

পেপটিক আলসার বলতে সাধারন মানবদেহের পরিপাক তন্ত্রের বিভিন্ন অংশে বা এক অংশে ঘা হওয়া কিংবা পাকস্থলীর পরবর্তী অংশে অর্থাৎ ক্ষুদ্রাতন্ত্রে একটি ঘা সৃষ্টি কারী রোগ হলো পেপটিক আলসার। পেপটিক আলসার দুটি কারনে হতে পারে। একটি হলো হেলিকোব্যাক্টার নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমনে হতে পারে আর একটি অরিরিক্ত গ্যাস্টিকের কারনে গ্যাস্টিকের সৃষ্টি হতে পারে। পেপটিক আলসারের লক্ষণ সমূহ হলোঃ
  • পেটে অনবরত ব্যথা হওয়া
  • খাওয়ার পর বমি বমি ভাব হওয়া
  • ক্ষিদা অনুভব না হওয়া অর্থাৎ ক্ষুদা মন্দা
  • শরীরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়া
  • মাঝে মাঝে পেট ফুলে ওঠা
  • অম্বল হওয়া
  • মলত্যাগের সময় রক্ত পাত হওয়া।

গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগীর খাদ্য তালিকা

একজন গ্যাস্ট্রিক আলসারের প্রথম এবং প্রধান চিকিৎসা হলো রোগির সঠিক খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করা। ডাক্তারের পরামর্শ অনুয়ায়ী খাদ্য খাওয়া, প্রয়োজনে ডায়েট করা। আলসারের রোগিরদের জন্য বেশ কিছু ভাল খাদ্য রয়েছে যেমন: আপেল, বেরি ফল, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, পাকা কলা, সবুজ শাক-সবজি, অথ্যাৎ কম এডিসযুক্ত খাবার খাওয়া।
অবশ্যই খাবারে মসা কম খেতে হবে। বেশি মসলা জাতীয় খাবার এবং বিভিন্ন ধরনের ভাজাপোড়া খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকা।গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্য তালিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি পাকস্থলীর আস্তরণকে শান্ত করে এবং আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে।

কী খাবেন:
  • সবজি: পালং শাক, ব্রোকলি, ফুলকপি, গাজর, বিন্স ইত্যাদি। এই সবজিগুলোতে ফাইবার ও ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে থাকে যা পাকস্থলীর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • ফল: আপেল, পেঁপে, কলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। এই ফলগুলোতে পটাশিয়াম ও ভিটামিন থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী।
  • আপেল, পেঁপে, কলা, আঙ্গুর
  • দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য: দুধ, দই, পনির ইত্যাদি। কিন্তু চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত দ্রব্য এড়িয়ে চলুন।
  • দুধ, দই, পনির
  • মাছ ও মুরগি: মাছ ও মুরগির বুড়ি অংশ খাওয়া ভালো। এগুলোতে প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে থাকে যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • ওটস: ওটসে ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকে যা পাকস্থলীর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • ভাত: সাদা ভাত খাওয়া ভালো।
  • সুপ: সবজি সুপ বা চিকেন সুপ খাওয়া ভালো।
  • সবজি সুপ বা চিকেন সুপ
কী খাবেন না:
  • মসলাযুক্ত খাবার: মরিচ, লঙ্কা, রসুন ইত্যাদি মসলা পাকস্থলীকে জ্বালাতন করে।
  • অম্লীয় খাবার: টম্যাটো, কমলালেবু, আনারস ইত্যাদি অম্লীয় খাবার পাকস্থলীর অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে পারে।
  • চর্বিযুক্ত খাবার: ভাজাপোড়া, বার্গার, পিজ্জা ইত্যাদি চর্বিযুক্ত খাবার পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর।
  • কফি ও চা: কফি ও চা পাকস্থলীর অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে পারে।
  • অ্যালকোহল: অ্যালকোহল পাকস্থলীকে জ্বালাতন করে।
  • কার্বনেটেড পানীয়: কার্বনেটেড পানীয় পাকস্থলীর অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে পারে।
অন্যান্য টিপস:
  • ছোট ছোট করে বারবার খাওয়া ভালো।
  • খাবার খাওয়ার পর এক ঘণ্টা পর্যন্ত শুয়ে পড়বেন না।
  • খাবার খাওয়ার আগে ও পরে পানি পান করুন।
  • ধূমপান বন্ধ করুন।
  • চাপ কমাতে চেষ্টা করুন।
আরো অনেক খাবার গ্যস্ট্রিক আলসারের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কোন খাবার খাবেন এবং কোন গুলো থেকে বিরত খাকবেন তার তালিকা নিন্মে উল্লেখ করা হল
  • সবজি: পালং শাক, ব্রোকলি, ফুলকপি, গাজর, বিন্স ইত্যাদি। এই সবজিগুলোতে ফাইবার ও ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে থাকে যা পাকস্থলীর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • ফল: আপেল, পেঁপে, কলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। এই ফলগুলোতে পটাশিয়াম ও ভিটামিন থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী।
  • দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য: দুধ, দই, পনির ইত্যাদি। কিন্তু চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত দ্রব্য এড়িয়ে চলুন।
  • মাছ ও মুরগি: মাছ ও মুরগির বুড়ি অংশ খাওয়া ভালো। এগুলোতে প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে থাকে যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • ওটস: ওটসে ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকে যা পাকস্থলীর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • ভাত: সাদা ভাত খাওয়া ভালো।
  • সুপ: সবজি সুপ বা চিকেন সুপ খাওয়া ভালো।
  • আলসারের জন্য এড়ানো উচিত খাবার:
  • মসলাযুক্ত খাবার: মরিচ, লঙ্কা, রসুন ইত্যাদি মসলা পাকস্থলীকে জ্বালাতন করে।
  • অম্লীয় খাবার: টম্যাটো, কমলালেবু, আনারস ইত্যাদি অম্লীয় খাবার পাকস্থলীর অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে পারে।
  • চর্বিযুক্ত খাবার: ভাজাপোড়া, বার্গার, পিজ্জা ইত্যাদি চর্বিযুক্ত খাবার পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর।
  • কফি ও চা: কফি ও চা পাকস্থলীর অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে পারে।
  • অ্যালকোহল: অ্যালকোহল পাকস্থলীকে জ্বালাতন করে।
  • কার্বনেটেড পানীয়: কার্বনেটেড পানীয় পাকস্থলীর অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে পারে।
মনে রাখবেন: এই তথ্য শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে এবং এটি কোনোভাবেই চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। যদি আপনি গ্যাস্ট্রিক আলসারের উপরোক্ত লক্ষণগুলি অনুভব করেন, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

গ্যাস্ট্রিক আলসার নিয়ে কিছু সাধারন প্রশ্ন এবং উত্তর

প্রশ্ন: গ্যাস্ট্রিক আলসার কী?

উত্তর: গ্যাস্ট্রিক আলসার হল পাকস্থলীর ভিতরের আস্তরণে এক ধরনের ক্ষত। এই ক্ষতটি সাধারণত গোলাকার বা অনিয়মিত আকারের হয়ে থাকে। যখন পাকস্থলীর অম্ল এবং অন্যান্য পাচনরস এই ক্ষতের সংস্পর্শে আসে, তখন তীব্র ব্যথা হয়।

প্রশ্ন: গ্যাস্ট্রিক আলসারের কারণগুলি কী কী?

উত্তর: হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া: এই ব্যাকটেরিয়াটি পাকস্থলীতে সংক্রমণ ঘটিয়ে আলসার সৃষ্টি করতে পারে।
  • অ্যাসপিরিন এবং আইবুপ্রোফেনের মতো অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ: এই ধরনের ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলে পাকস্থলীর আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং আলসার হতে পারে।
  • অতিরিক্ত অ্যাসিড: পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে আলসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
  • ধূমপান: ধূমপান পাকস্থলীর আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং আলসার সৃষ্টি করে।
  • তীব্র চাপ: দীর্ঘদিন তীব্র মানসিক চাপ সহ্য করলেও আলসার হতে পারে।

প্রশ্ন: গ্যাস্ট্রিক আলসারের লক্ষণগুলি কী কী?

উত্তর: পেটে জ্বালাপোড়া
  • খাবার খাওয়ার পর পেটে ব্যথা
  • বমি বমি ভাব হওয়া
  • কালো বা রক্তাক্ত বমি
  • কালো বা রক্তাক্ত মল
  • অ্যাসিডিটি
  • বদহজম

প্রশ্ন: গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসা কীভাবে করা হয়?


উত্তর:
  • ওষুধ: আলসারের কারণ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়। যেমন:
  • অ্যান্টাসিড: অ্যাসিডিটি কমাতে
  • প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর: অ্যাসিড উৎপাদন কমাতে
  • অ্যান্টিবায়োটিক: হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য
  • জীবনযাত্রার পরিবর্তন: ধূমপান বন্ধ করা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা, চাপ কমানোর ব্যবস্থা করা।

প্রশ্ন: গ্যাস্ট্রিক আলসার প্রতিরোধ করা যায় কী?

উত্তর: হ্যাঁ, গ্যাস্ট্রিক আলসার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর জন্য আপনাকে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে:
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
  • ধূমপান বন্ধ করা
  • অ্যালকোহল পরিহার করা
  • চাপ কমানো
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা

প্রশ্ন: গ্যাস্ট্রিক আলসারের জটিলতা কী কী হতে পারে?

  • উত্তর: রক্তক্ষরণ
  • পাকস্থলীতে ছিদ্র হওয়া
  • পাকস্থলীর ক্যান্সার

প্রশ্ন: গ্যাস্ট্রিক আলসারের জন্য কী ধরনের খাবার ভালো?

  • উত্তর: সবজি
  • ফল
  • দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য
  • মাছ ও মুরগি
  • ওটস
  • সাদা ভাত
  • সুপ

প্রশ্ন: গ্যাস্ট্রিক আলসারের জন্য কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত নয়?

  • উত্তর:মসলাযুক্ত খাবার
  • অম্লীয় খাবার
  • চর্বিযুক্ত খাবার
  • কফি ও চা
  • অ্যালকোহল
  • কার্বনেটেড পানীয়

লেখকের মন্তব্যঃ 

উপরোক্ত প্রশ্ন ছাড়া আরো বেশ কিছু প্রশ্ন যেমন:  কি খেলে আলসার ভালো হয়? আলসারের জন্য ভালো খাবার ইত্যৗাদি। পরবর্তী আর্টিকেলে এই সকল প্রশ্নের বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। গ্যাস্ট্রিক তখা আরো অন্যান্য রোগ, অনলাইন ইনকাম, ইসলামিক পোষ্ট, বিনোদনের খবর, বিশ্ব ইতিহাস ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানতে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। কোন ধরনের মতামত ও প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url